শহিদুলকে প্রথম শ্রেণির সুবিধার আদেশ স্থগিত করেননি চেম্বার আদালত

শহিদুল আলম। ছবি: এএফপি
শহিদুল আলম। ছবি: এএফপি

তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি আইনে করা মামলায় কারাগারে থাকা আলোকচিত্রী শহিদুল আলমকে প্রথম শ্রেণির বন্দীর সুবিধা দিতে হাইকোর্টের দেওয়া আদেশ স্থগিত করেননি চেম্বার বিচারপতি। হাইকোর্টের এই আদেশ স্থগিত চেয়ে রাষ্ট্রপক্ষ আবেদন করেছিল। আজ সোমবার চেম্বার বিচারপতি ইমান আলীর আদালতে আবেদনটি শুনানির জন্য ওঠে। শুনানি শেষে আদালত রাষ্ট্রপক্ষকে নিয়মিত লিভ টু আপিল করতে বলেছেন।

এর আগে ৫ সেপ্টেম্বর হাইকোর্ট এক আদেশে শহিদুল আলমকে প্রথম শ্রেণির বন্দীর সুবিধা দিতে নির্দেশ দিয়েছিলেন। শহিদুল আলমকে কারাগারে প্রথম শ্রেণির মর্যাদা দেওয়ার নির্দেশনা চেয়ে তাঁর স্ত্রী রেহনুমা আহমেদের করা রিটের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে সেদিন আদালত রুলসহ ওই নির্দেশ দেন।

আজ চেম্বার বিচারপতি ইমান আলীর আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে শুনানিতে ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম ও ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল বিশ্বজিৎ দেবনাথ।
শহিদুল আলমের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী সারা হোসেন।

সারা হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, শহিদুল আলমকে প্রথম শ্রেণির বন্দীর মর্যাদা দিতে হাইকোর্টের দেওয়া আদেশ স্থগিত করেননি চেম্বার বিচারপতি। আদালত রাষ্ট্রপক্ষকে নিয়মিত লিভ টু আপিল করতে বলেছেন। এতে কারাগারে শহিদুল আলমকে প্রথম শ্রেণির বন্দীর সুবিধা দিতে হাইকোর্টের আদেশ বহাল রইল।

ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল বিশ্বজিৎ দেবনাথ প্রথম আলোকে বলেন, রাষ্ট্রপক্ষের করা আবেদনটি কার্যতালিকা থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে। তিনি জানান, রাষ্ট্রপক্ষকে নিয়মিত আপিল করতে বলেছেন চেম্বার বিচারপতি।

নিরাপদ সড়কের দাবিতে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মধ্যে ‘উসকানিমূলক মিথ্যা’ প্রচারের অভিযোগে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি আইনে করা মামলায় গত ৫ আগস্ট রাতে শহিদুল আলমকে তাঁর ধানমন্ডির বাসা থেকে তুলে নেয় ডিবি। সাত দিনের রিমান্ড শেষে গত ১২ আগস্ট শহিদুলকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন নিম্ন আদালত।
ওই মামলায় গত ৬ আগস্ট ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম শহিদুল আলমের জামিন আবেদন নামঞ্জুর করেন। ১৪ আগস্ট ঢাকার মহানগর দায়রা জজ আদালতে জামিন আবেদন করা হলে ১১ সেপ্টেম্বর শুনানির জন্য দিন ধার্য রাখেন। এরপর ১৯ আগস্ট শুনানির তারিখ এগোনোর জন্য আবেদন করা হলে তা গ্রহণ করা হয়নি। ২৬ আগস্ট শহিদুল আলমের অন্তর্বর্তীকালীন জামিন চাইলে ওই আদালত শুনানির জন্য তা গ্রহণ করেননি। এ অবস্থায় ২৮ আগস্ট হাইকোর্টে তাঁর জামিন চেয়ে আবেদন করা হয়। ২৯ আগস্ট আবেদনটি শুনানির জন্য আরজি জানানো হয়।
৪ সেপ্টেম্বর আবেদনটির ওপর শুনানিতে হাইকোর্টের দ্বৈত বেঞ্চের একজন বিচারপতি বিব্রতবোধ করেছেন জানিয়ে আদালত বিষয়টি প্রধান বিচারপতির কাছে পাঠানোর আদেশ দেন। প্রধান বিচারপতি বিষয়টি বিচারপতি রেজাউল হক ও বিচারপতি আবু তাহের মো. সাইফুর রহমানের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চে পাঠালে ১০ সেপ্টেম্বর হাইকোর্ট শহিদুল আলমের আবেদন পরদিন ১১ সেপ্টেম্বরের মধ্যে নিম্ন আদালতে নিষ্পত্তি করার আদেশ দেন। সবশেষ ১১ সেপ্টেম্বর ঢাকার মহানগর দায়রা জজ কে এম ইমরুল কায়েস শহিদুল আলমের জামিন আবেদন নাকচ করেন।