সংক্রামক ব্যাধির কথা গোপন রাখলে শাস্তি

জাতীয় সংসদ ভবন। ফাইল ছবি
জাতীয় সংসদ ভবন। ফাইল ছবি

সংক্রামক ব্যাধির কথা গোপন রাখার পর এই রোগে আক্রান্ত ব্যক্তির মাধ্যমে রোগের বিস্তার ঘটলে ওই ব্যক্তিকে ছয় মাসের কারাদণ্ডে বা এক লাখ টাকা জরিমানা অথবা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হতে হবে। এই বিধান রেখে ‘সংক্রামক রোগ (প্রতিরোধ, নিয়ন্ত্রণ ও নির্মূল) বিল-২০১৮’ আজ সোমবার সংসদে উত্থাপিত হয়েছে।

স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিমের অনুপস্থিতিতে প্রতিমন্ত্রী জাহিদ মালেক বিলটি উত্থাপন করেন। পরে বিলটি পরীক্ষা করে সংসদে প্রতিবেদন দেওয়ার জন্য স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটিতে পাঠানো হয়।

প্রস্তাবিত আইনে বলা হয়েছে, যদি কোনো ব্যক্তি সংক্রামক জীবাণুর বিস্তার ঘটান বা ঘটতে সহায়তা করেন বা স্থানের সংস্পর্শে আসার সময় সংক্রমণের ঝুঁকির বিষয়টি গোপন করেন, তাহলে তা অপরাধ বলে গণ্য হবে।

প্রস্তাবিত আইনে ২৩টি সংক্রামক রোগের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। সেগুলো হলো ম্যালেরিয়া, কালাজ্বর, ফাইলেরিয়াসিস, ডেঙ্গু, ইনফ্লুয়েঞ্জা, এভিয়ান ফ্লু, নিপাহ, অ্যানথ্রাক্স, মারস-কভ, জলাতঙ্ক, জাপানিস এনকেফেলাইটিস, ডায়ারিয়া, যক্ষ্মা, শ্বাসনালির সংক্রমণ, এইচআইভি, ভাইরাল হেপাটাইটিস, টিকার মাধ্যমে প্রতিরোধযোগ্য রোগসমূহ, টাইফয়েড, খাদ্যে বিষক্রিয়া, মেনিনজাইটিস, ইবোলা, জিকা ও চিকুনগুনিয়া।

সুস্থ কেউ যাতে আক্রান্ত না হন, সে জন্য কারও সংক্রামক রোগ হলে সেই তথ্য সরকারি কর্তৃপক্ষকে জানানোর বিষয়ে প্রস্তাবিত আইনে বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। বিলে কোনো এলাকায় সংক্রমণ দেখা দিলে সেই জায়গাকে ‘সংক্রমিত এলাকা’ ঘোষণা করে সেখানে অন্য কারও প্রবেশ নিষিদ্ধ করার বিধান রাখা হয়েছে।

রোগাক্রান্ত ব্যক্তির ব্যবহৃত দ্রব্যাদি সরকার বিশুদ্ধ বা ধ্বংস করতে পারবে। রোগাক্রান্ত ব্যক্তিকে সরকার দূরে সরিয়ে রাখতে পারবে। সংক্রমিত স্থান বা স্থাপনা জীবাণুমুক্ত বা বন্ধ করতেও ব্যবস্থা নিতে পারবে।

বিলে বলা হয়েছে, যদি কোনো স্থাপনা জীবাণুমুক্ত করা সম্ভব না হয়, তবে তা সংশ্লিষ্ট সিভিল সার্জনকে জানাতে হবে। সিভিল সার্জন সেটি ধ্বংস করার জন্য মালিককে নির্দেশ দিতে পারবেন। সরকার জীবাণুযুক্ত যানবাহন প্রয়োজনে জব্দ করতে পারবে।

কেউ সংক্রামক রোগে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন বলে সন্দেহ হলে ওই ব্যক্তির মৃতদেহ ক্ষমতাপ্রাপ্ত কর্মকর্তার নির্দেশনা অনুযায়ী দাফন বা সৎকার করতে হবে। সংক্রামক ব্যক্তি রোগ সম্পর্কে জানার পরেও মিথ্যা বা ভুল তথ্য দিলে সর্বোচ্চ দুই মাস কারাদণ্ড বা সর্বোচ্চ ২৫ হাজার টাকা জরিমানা বা উভয় দণ্ড দেওয়া হবে।

জাতীয় পরিকল্পনা ও উন্নয়ন একাডেমি বিল পাস
দেশের উন্নয়ন পরিকল্পনা বাস্তবায়নের জন্য দক্ষ জনশক্তি গড়তে সোমবার ‘জাতীয় পরিকল্পনা ও উন্নয়ন একাডেমি বিল-২০১৮’ সংসদে পাস হয়েছে। পরিকল্পনামন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বিলটি পাসের জন্য উত্থাপন করলে তা কণ্ঠভোটে পাস হয়। বিলের ওপর দেওয়া জনমত যাচাই-বাছাই কমিটিতে পাঠানো এবং সংশোধনী প্রস্তাবগুলো নাকচ করা হয়।

এ ছাড়া হিন্দুধর্মীয় কল্যাণ ট্রাস্ট বিল-২০১৮ সোমবার পাস হয়েছে। উল্লেখযোগ্য কোনো পরিবর্তন ছাড়া সড়ক পরিবহন বিল-২০১৮ যাচাই-বাছাই করে আজ সংসদে প্রতিবেদন জমা দিয়েছে সড়ক ও সেতু মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটি। কমিটির সভাপতি একাব্বর হোসেন প্রতিবেদনটি উপস্থাপন করেন।