চাবি না দিয়ে দিলেন মোটরসাইকেল টান

লাইসেন্স দেখতে চাইলে তা না দেখিয়ে মোটরসাইকেল টান দিয়ে চলে যাওয়ার চেষ্টা করেন পুলিশ পরিচয় দেওয়া রেজাউল। ছবি: আবদুস সালাম
লাইসেন্স দেখতে চাইলে তা না দেখিয়ে মোটরসাইকেল টান দিয়ে চলে যাওয়ার চেষ্টা করেন পুলিশ পরিচয় দেওয়া রেজাউল। ছবি: আবদুস সালাম

নিজেকে পরিচয় দিচ্ছেন পুলিশের কর্মকর্তা। তাঁর পেছনের আরোহীর মাথায় নেই হেলমেট। সঙ্গে নেই বাইক চালানোর লাইসেন্স। তবুও জোর খাটিয়ে চলে যেতে উদ্যত তিনি। বাধা দিতে গিয়ে আঘাত পান সেখানে দায়িত্বপ্রাপ্ত গার্ল গাইডসের দুই সদস্য।

আজ মঙ্গলবার বেলা একটার দিকে রাজধানীর বেইলি রোডের অফিসার্স ক্লাবের মোড়ে এ ঘটনা ঘটে। সম্প্রতি ঘটে যাওয়া নিরাপদ সড়কের দাবিতে দেশজুড়ে আন্দোলনের পর সরকার নড়েচড়ে বসে। ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা নিয়ন্ত্রণে স্কাউট ও গার্ল গাইডস অ্যাসোসিয়েশনের সদস্যরা ট্রাফিক পুলিশ সদস্যদের সঙ্গে কাজ করছেন। এরই অংশ হিসেবে আঘাত পাওয়া আলফিসা সাফা গত রোববার থেকে অফিসার্স ক্লাবের মোড়ে কাজ করছেন।

পরে ট্রাফিক পুলিশের অন্য সদস্যরা এসে রেজাউলের বিরুদ্ধে মামলা করেন। ছবি: আবদুস সালাম
পরে ট্রাফিক পুলিশের অন্য সদস্যরা এসে রেজাউলের বিরুদ্ধে মামলা করেন। ছবি: আবদুস সালাম

আলফিসা প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমি একটু দূরে সড়কের অন্য পাশ দেখছিলাম। অন্যদিকে আমার আরেক বন্ধু  মোটরসাইকেলের এক আরোহীকে আটকায়। তাঁর পেছনের জনের মাথায় হেলমেট ছিল না। আমি সেখানে এগিয়ে যাই। লাইসেন্স দেখাতে বললে ওই ব্যক্তি নিজেকে গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) সদস্য হিসেবে পরিচয় দেন। এরপরও আমরা চাবি চাইলে না দিয়ে আমাদের দুজনের মাঝখান দিয়েই মোটরসাইকেল টান দেন। পেছন থেকে ওনার মোটরসাইকেল আমাদের আরেকজন ধরে ফেলে।’

আলফিসা জানান, তিনি ও তাঁর বন্ধু দুজনেই পায়ে আঘাত পান। গোয়েন্দা পুলিশের পরিচয় দেওয়া ওই ব্যক্তি জানান, তাঁর নাম মো. রেজাউল। ঘটনার সময় আশপাশের লোকজন জড়ো হন এবং ট্রাফিকের অন্য সদস্যরা সেখানে চলে আসেন।

রেজাউল ক্ষমা চাইলে তাঁকে ছেড়ে দেওয়া হয়। ছবি: আবদুস সালাম
রেজাউল ক্ষমা চাইলে তাঁকে ছেড়ে দেওয়া হয়। ছবি: আবদুস সালাম

খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে আসেন রমনা ট্রাফিক জোনের ইন্সপেক্টর (প্রশাসন) তরিকুল আলম। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘মেয়েরা সিগন্যাল দিলে ওই লোক না থেমে চলে যেতে চাইলে ওরা লাইসেন্স দেখতে চায়। কিন্তু তিনি তা না করে মোটরসাইকেল টান দেন। এতে ওরা আঘাত পায়।’ তিনি জানান, লাইসেন্স না থাকার কারণে ট্রাফিক আইনে তাঁর বিরুদ্ধে মামলা হয় এবং ৮০০ টাকা জরিমানা করা হয়। এ ছাড়া গায়ের ওপর মোটরসাইকেল তুলে দেওয়ার অভিযোগে তিনি গার্ল গাইডসের সদস্যদের অপরাধ আইনে মামলা করার জন্য বলেন। তবে রেজাউল নিজের ভুল স্বীকার করে মাফ চাইলে গার্ল গাইডসের সদস্যরা মামলা করেননি।

ওই স্থানে থাকা প্রথম আলোর প্রতিনিধি ঘটনা সম্পর্কে রেজাউলের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমি পুলিশে আছি, আমার ভুল হয়ে গেছে।’