সুষ্ঠু নির্বাচন করতে সংসদ ভেঙে দিতে হবে: জাফরুল্লাহ

খুলনা মহানগর ও জেলা জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের আয়োজনে যুক্তফ্রন্টের জনসভায় বক্তৃতা করেন গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ও ট্রাস্টি জাফরুল্লাহ চৌধুরী। শহীদ হাদিস পার্ক, খুলনা, ১৮ সেপ্টেম্বর। ছবি: সাদ্দাম হোসেন
খুলনা মহানগর ও জেলা জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের আয়োজনে যুক্তফ্রন্টের জনসভায় বক্তৃতা করেন গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ও ট্রাস্টি জাফরুল্লাহ চৌধুরী। শহীদ হাদিস পার্ক, খুলনা, ১৮ সেপ্টেম্বর। ছবি: সাদ্দাম হোসেন

‘দেশে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে হলে সংসদ ভেঙে দিতে হবে। সংবিধানে রয়েছে, সংসদ রেখে কোনো নির্বাচন হবে না। বঙ্গবন্ধু নিজেই সংসদ ভেঙে নির্বাচন দিয়েছিলেন। সুতরাং সুষ্ঠু নির্বাচন করতে হলে সংসদ ভেঙে দিতে হবে।’ আজ মঙ্গলবার বিকেলে খুলনা নগরের শহীদ হাদিস পার্কে যুক্তফ্রন্টের জনসভায় এ কথা বলেন গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ও ট্রাস্টি জাফরুল্লাহ চৌধুরী।

আইনের শাসন, ন্যায়বিচার, অবাধ গণতন্ত্র ও জনগণের ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠার দাবিতে জনসভার আয়োজন করে যুক্তফ্রন্ট। সভায় জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেন, ‘বর্তমান আওয়ামী লীগ বঙ্গবন্ধুর আদর্শকে বিশ্বাস করে না। তাঁরা বঙ্গবন্ধুর নাম বিক্রি করে খায়। বঙ্গবন্ধু নিজেই সংসদ ভেঙে নির্বাচন দিয়েছিলেন। সংবিধান হবে সংবিধানের মতো, আর সুষ্ঠু নির্বাচন হলো সংবিধানের অন্যতম শর্ত।’

জনসভায় প্রধান অতিথি হিসেবে থাকার কথা ছিল সাবেক রাষ্ট্রপতি ও যুক্তফ্রন্টের চেয়ারম্যান এ কিউ এম বদরুদ্দোজা চৌধুরীর। কিন্তু তিনি জনসভায় উপস্থিত ছিলেন না। খুলনা জেলা জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জেএসডি) সভাপতি আ ফ ম মহসিনের সভাপতিত্বে জনসভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন গণফোরামের আহ্বায়ক ড. কামাল হোসেন। অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন জেএসডির কেন্দ্রীয় সভাপতি আ স ম আবদুর রব, নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না, জেএসডির সাধারণ সম্পাদক আব্দুল মালেক রতন, জ্যেষ্ঠ যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আতাউল করিম ফারুক, সাংগঠনিক সম্পাদক ও খুলনা নগর সভাপতি লোকমান হাকিম, বিকল্পধারার কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ওমর ফারুক, নাগরিক ঐক্যের কেন্দ্রীয় নেতা শহীদুল্লাহ কায়সার প্রমুখ।

সভায় গণফোরামের আহ্বায়ক ড. কামাল হোসেন বলেন, দেশে বর্তমানে ব্যাংক ডাকাতি হচ্ছে, কলকারখানা বন্ধ হচ্ছে। কিন্তু এ দেশের মানুষের ভাগ্যের কোনো পরিবর্তন হচ্ছে না। রাষ্ট্র আছে, সংবিধান আছে, কিন্তু তা পালনে সরকারের কোনো দায়িত্ব নেই।

আওয়ামী লীগের উদ্দেশে কামাল হোসেন বলেন, ‘গত ৫ জানুয়ারির সংসদ নির্বাচনের পর আদালত আমাকে ডেকেছিলেন সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে কি না, তা জানতে। তখন সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছিল, এটা একটি আনুষ্ঠানিকতা মাত্র। দ্রুত সময়ের মধ্যে সবার অংশগ্রহণে আবার নির্বাচন দেওয়া হবে। এ কথাটি আদালতে সংরক্ষিত আছে। যদি কেউ ভুলে গিয়ে থাকেন, তাহলে আদালতে গিয়ে দেখতে পারেন। কিন্তু পরবর্তী সময় ওই কথা ভুলে যাওয়া হয়েছে।’ তিনি বলেন, সংবিধান অনুযায়ী রাষ্ট্রের সব ক্ষমতার মালিক হচ্ছে জনগণ। তাই জনগণকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে।

জেএসডির কেন্দ্রীয় সভাপতি আ স ম আবদুর রব বলেন, ‘তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবিতে ১৭৩ দিন রাজপথে ছিলেন। কিন্তু বর্তমানে কেন ওই পথ থেকে সরে আসছেন?’ প্রধানমন্ত্রীকে পদত্যাগ করেই নির্বাচনে আসতে হবে বলেও জানান তিনি। আর ইভিএমকে জাদুর খেলা হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন আবদুর রব। তিনি বলেন, যুক্তফ্রন্ট গঠনের মাধ্যমে একটি জাতীয় ঐক্য গড়ে তোলা হচ্ছে। ভবিষ্যতে ওই ঐক্যের মাধ্যমেই সব দলের অংশগ্রহণে সরকারকে নির্বাচন করতে বাধ্য করা হবে।

নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, ‘ইভিএমে কারচুপি হয় বলে সবাই জানে। বিশ্বের অনেক দেশ কোটি কোটি টাকা খরচ করে পরে ইভিএম-পদ্ধতি থেকে সরে এসেছে। কিন্তু বর্তমান সরকারের মানুষের ভোটের প্রতি আস্থা নেই। এ কারণে তাঁরা যন্ত্রের সাহায্য নিতে যাচ্ছে।’