সচেতনতায় ৫০% কিডনি রোগ কমতে পারে

গোলটেবিল বৈঠকে বক্তব্য দেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক আবুল কালাম আজাদ। পাশে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের সহ–উপাচার্য মুহাম্মদ রফিকুল আলম।  ছবি: প্রথম আলো
গোলটেবিল বৈঠকে বক্তব্য দেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক আবুল কালাম আজাদ। পাশে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের সহ–উপাচার্য মুহাম্মদ রফিকুল আলম। ছবি: প্রথম আলো
>দেশের প্রায় দুই কোটি মানুষ কিডনি রোগে আক্রান্ত। অ্যান্টিবায়োটিক ও ব্যথার ওষুধ এ রোগের কারণ হতে পারে।

কিডনি বিকল রোগীর চিকিৎসার চেয়ে কিডনি রোগ প্রতিরোধ বিষয়ে বেশি গুরুত্ব দেওয়া জরুরি। এ জন্য দরকার সাধারণ মানুষ ও পেশাজীবীদের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধি করা। এ ক্ষেত্রে সরকারের পাশাপাশি গণমাধ্যমের ভূমিকা অনেক বড়।

গতকাল মঙ্গলবার প্রথম আলো কার্যালয়ে আয়োজিত ‘কিডনি রোগ প্রতিরোধযোগ্য: প্রয়োজন সচেতনতা’ শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠকে দেশের শীর্ষস্থানীয় কিডনি রোগ বিশেষজ্ঞ ও সরকারের কর্মকর্তারা এসব কথা বলেন। প্রথম আলো এই গোলটেবিল বৈঠকের আয়োজন করে। বৈঠক আয়োজনে সহায়তা করে বিআরবি হাসপাতাল।

কিডনি ফাউন্ডেশন হসপিটাল অ্যান্ড রিসার্চ ইনস্টিটিউটের প্রতিষ্ঠাতা অধ্যাপক হারুন উর রশিদ বলেন, অনিরাপদ পানি, মশা-মাছি, অস্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস, খাদ্যে ভেজাল—জনস্বাস্থ্য-সংশ্লিষ্ট এসব বিষয়ের সঙ্গে কিডনি রোগের সম্পর্ক আছে। তিনি বলেন, রোগের তীব্রতা অনুযায়ী কিডনি রোগকে পাঁচ স্তরে ভাগ করা যায়। দেশে কিডনি রোগে আক্রান্ত প্রায় দুই কোটি মানুষ। এর মধ্যে মাত্র শূন্য দশমিক ২ শতাংশ মানুষ তীব্র কিডনি রোগে আক্রান্ত। কিডনি রোগের পঞ্চম স্তরে থাকা এসব রোগী নিয়েই হইচই বেশি। প্রথম ও দ্বিতীয় স্তরে থাকা ৫০ শতাংশ মানুষের সচেতনতা বাড়িয়ে এই রোগ থেকে দূরে রাখা সম্ভব। তৃতীয় ও চতুর্থ স্তরে থাকা রোগীদের সঠিক চিকিৎসা দিয়ে জীবন দীর্ঘায়িত করা সম্ভব।

কিডনি রোগ বিষয়ে জনসচেতনতা বাড়াতে এগিয়ে আসায় বেসরকারি প্রতিষ্ঠান বিআরবি হাসপাতালকে ধন্যবাদ জানান স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক আবুল কালাম আজাদ। সরকারের বিভিন্ন স্বাস্থ্য উদ্যোগের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, বিশেষজ্ঞরা কিডনি রোগ চিকিৎসার যে নির্দেশিকা তৈরি করেছেন, সরকারি প্রতিষ্ঠানে তা অনুসরণ করা হবে। গোলটেবিল বৈঠকের সুপারিশগুলো স্বাস্থ্য অধিদপ্তর বাস্তবায়ন করবে।

বৈঠক সঞ্চালনা করেন প্রথম আলোর সহযোগী সম্পাদক আব্দুল কাইয়ুম। বিআরবি হাসপাতালের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা আবু আলতাফ হোসেন বলেন, চিকিৎসার পাশাপাশি সাধারণ মানুষকে সচেতন করার কাজ করছে বিআরবি হাসপাতাল। ঢাকা ও ঢাকার বাইরে নিয়মিতভাবে স্বাস্থ্য ক্যাম্প ও সেমিনারের আয়োজন করা হয়। বর্তমানে কিডনি রোগ শনাক্ত করার জন্য সপ্তাহব্যাপী স্বাস্থ্য পরীক্ষা কর্মসূচি চলছে। গত দু-তিন দিনে প্রায় ৮০০ মানুষ স্বাস্থ্য পরীক্ষা করেছেন।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) সহ-উপাচার্য অধ্যাপক মোহাম্মদ রফিকুল আলম বলেন, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা দীর্ঘস্থায়ী কিডনি রোগকে অসংক্রামক ব্যাধির আওতায় এনেছে। কিন্তু বাংলাদেশে তা হয়নি। এই কিডনি রোগ বিশেষজ্ঞ বলেন, হাসপাতালগুলোর নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রের চিকিৎসকদের বুঝতে হবে যে অ্যান্টিবায়োটিক কিডনির জন্য ক্ষতিকর হতে পারে। এ বিষয়ে মানুষকে সচেতন করা জরুরি।