বুকে অনেক ব্যথা, আ.লীগ বন্ধু নয়

এইচ এম এরশাদ। ফাইল ছবি
এইচ এম এরশাদ। ফাইল ছবি

আওয়ামী লীগ তাঁর দলের বন্ধু নয় বলে মন্তব্য করেছেন সরকারের সঙ্গে থাকা জাতীয় পার্টির (জাপা) চেয়ারম্যান এইচ এম এরশাদ। তিনি ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগের ক্ষমতায় আসার প্রেক্ষাপট উল্লেখ করে বুধবার বিকেলে রাজধানীতে দলের এক অনুষ্ঠানে এ কথা বলেন।

প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ দূত এরশাদ বলেন, ‘আমি যখন জেলখানায়, নির্বাচন হলো। বিএনপি পেল ১১৬টি আসন, আমরা পেলাম ৩৩টি, জামায়াতে ইসলামীর ছিল ৩টি আসন। আমি সমর্থন দিলে বিএনপি আবার ক্ষমতায় আসতে পারে। আমার কাছে মধ্যরাতে বার্তা পাঠানো হলো, আপনি আমাদের সমর্থন করেন, যা–ই চাইবেন, তা দেব। আওয়ামী লীগকে ক্ষমতায় আনবেন না।’

বিএনপির প্রতি ইঙ্গিত করে এরশাদ বলেন, ‘তাদের অনুরোধ আমি রাখিনি। আওয়ামী লীগকে ক্ষমতায় এনেছি আমি, কিন্তু সুবিচার পাইনি। ক্ষমতায় এসে আওয়ামী লীগ আমাকে আবার জেলে পাঠিয়েছে। পাঁচ কোটি টাকা জরিমানা করেছিল। তাই বলছি, আমাদের বন্ধু জনগণ। আমাদের বন্ধু এরা নয়।’

জাপার চেয়ারম্যান দলের নেতা-কর্মীদের উদ্দেশে বলেন, ‘আমাদের বন্ধু জনগণ, কৃষক-শ্রমিক ও মজদুর। নব্য ধনীদের কথা ভুলে যাও। যারা কোটি কোটি টাকা বিদেশে পাচার করেছে, তাদের কথা ভুলে যাও। যারা ব্যাংক লুট করেছে, মানুষ খুন করেছে, তাদের কথা ভুলে যাও। অনেক ব্যথা বুকে। আমি শৃঙ্খলিত রাজনীতিবিদ। এখনো মুক্ত নই। এখন মনে হয় আগামী নির্বাচনের মাধ্যমে শৃঙ্খল ভেঙে আমি মুক্ত মানুষ হব।’

এরশাদ নেতা-কর্মীদের উদ্দেশে আরও বলেন, ‘আমি সাহস হারাইনি, ধৈর্য হারাইনি। এখন বিশ্বাস করি, আমাদের সামনে ক্ষমতায় যাওয়ার সুবর্ণ সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে।’

এরশাদ বুধবার রাজধানীর বসুন্ধরা কনভেনশন সিটিতে দলের নেতা-কর্মীদের নির্বাচনে প্রযুক্তিনির্ভর প্রচারণার এক প্রশিক্ষণ কর্মশালার সমাপনী অনুষ্ঠানে এ কথাগুলো বলেন। নির্বাচনে এবার জাপা তরুণ ভোটারদের আকৃষ্ট করতে প্রযুক্তিনির্ভর প্রচারণা চালাবে। এ লক্ষ্যে জাতীয় পার্টির নির্বাচনী কৌশল প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন সেল করা হয়েছে। এই সেলের প্রধান এরশাদের তথ্যপ্রযুক্তিবিষয়ক উপদেষ্টা শফিউল্লাহ আল মুনির। কর্মশালায় ‘পল্লী বন্ধুর হাত ধরে আরেকবার’ শিরোনামে একটি প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শন করা হয়।

এরশাদ বলেন, ‘আগামী নির্বাচনে তথ্যপ্রযুক্তিনির্ভর প্রচারণায় আমরা সাধারণ মানুষের কাছে যাব, নতুন ভোটারদের আকৃষ্ট করব।’

অনুষ্ঠানে জাতীয় পার্টির কো-চেয়ারম্যান জি এম কাদের, মহাসচিব এ বি এম রুহুল আমিন হাওলাদার, সাবেক মহাসচিব জিয়াউদ্দিন বাবলুসহ কেন্দ্রীয় নেতারা বক্তব্য দেন। তবে দলের জ্যেষ্ঠ কো-চেয়ারম্যান ও সংসদে বিরোধী দলের নেতা রওশন এরশাদ এ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন না।