রাঙামাটির নানিয়ারচরে গুলি করে ২ ইউপিডিএফ কর্মীকে হত্যা

রাঙামাটির নানিয়ারচর উপজেলায় দুর্বৃত্তদের গুলিতে দুই ইউপিডিএফ কর্মী নিহত হয়েছেন। গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে উপজেলার সাবেক্ষ্যং ইউনিয়নের বেতছড়ি এলাকায় রামসুপারিছড়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় ইউপিডিএফ জনসংহতি সমিতিকে (এমএন লারমা) দায়ী করেছে। জনসংহতি সমিতি অভিযোগ অস্বীকার করেছে।

নিহত দুজন হলেন আকর্ষণ চাকমা ও শ্যামল কান্তি চাকমা।

পুলিশ ও স্থানীয় বাসিন্দাদের সূত্রে জানা গেছে, রামসুপারিছড়া গ্রামের সাংগঠনিক কাজ শেষে সুমতি চাকমার বাড়িতে ইউপিডিএফ কর্মী আকর্ষণ চাকমা ওরফে যুদ্ধ মোহন চাকমা (৪২) ও শ্যামল কান্তি চাকমা ওরফে সুমন্ত চাকমা ঘুমাচ্ছিলেন। রাত সাড়ে ১২টার দিকে ১৫ থেকে ২০ জন দুর্বৃত্ত এসে সুমতি চাকমার বাড়ি ঘেরাও করে। একপর্যায়ে বাড়ির ভেতরে ঢুকে এলোপাতাড়ি গুলি ছোড়ে। এতে ঘটনাস্থলে আকর্ষণ চাকমা ও শ্যামল কান্তি চাকমার মৃত্যু হয়। এ সময় গ্রামে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে।

ইউপিডিএফের মুখপাত্র মাইকেল চাকমা বলেন, ‘জনসংহতি সমিতির (এমএন লারমা) সশস্ত্র কর্মীরা আমাদের দুই সক্রিয় কর্মীকে গুলি করে হত্যা করেছে। ঘটনার সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের দ্রুত গ্রেপ্তার করে শাস্তি দেওয়া হোক।’

এ অভিযোগ অস্বীকার করে জনসংহতি সমিতির রাঙামাটি জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক প্রগতি চাকমা বলেন, ‘ইউপিডিএফের দুই কর্মী হত্যার সঙ্গে আমাদের কোনো সংশ্লিষ্টতা নেই। উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে আমাদের দায়ী করা হচ্ছে। তাঁদের নিজেদের অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্বের কারণে এই হত্যাকাণ্ড ঘটতে পারে’।

দুই ইউপিডিএফ কর্মী নিহত হওয়ার ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে নানিয়ারচর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মো. রওশন জামান প্রথম আলোকে বলেন, ‘থানা থেকে ঘটনাস্থল অনেক দূর। সে জন্য লাশ উদ্ধার করতে একটু দেরি হচ্ছে। আমরা লাশ উদ্ধারের জন্য যাচ্ছি’।

রাঙামাটিতে দীর্ঘদিন এ ধরনের সংঘাত বন্ধ ছিল। গত বছরের ৫ ডিসেম্বর হতে এমন সংঘাত আবার শুরু হয়। গত নয় মাসে এই সংঘাতে মৃতের সংখ্যা দাঁড়াল ৩৮ জনে। নিহত ব্যক্তিদের মধ্যে নানিয়ারচর উপজেলা চেয়ারম্যান শক্তিমান চাকমা, ইউপিডিএফ গণতান্ত্রিক দলের সভাপতি ও ইউপিডিএফের কেন্দ্রীয় কমিটির মিঠুন চাকমা রয়েছেন। ১৮ আগস্ট খাগড়াছড়ির স্বনির্ভর বাজারে এলোপাতাড়ি ব্রাশফায়ারে ছয়জন মারা যান। সবশেষ ২২ আগস্ট রাঙামাটির বাঘাইছড়ি উপজেলা বঙ্গলতলী ইউনিয়নের উত্তর বঙ্গলতলী গ্রামের জনসংহতি সমিতির কর্মী মিশন চাকমাকে হত্যা করা হয়।