অবৈধ সম্পদের কারণে স্ত্রীসহ ফাঁসলেন বাপেক্সের জিএম

দুর্নীতির মামলায় রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠান বাপেক্সের মহাব্যবস্থাপক (জিএম) এ কে এম আনোয়ারুল ইসলাম ও তাঁর স্ত্রী ফরিদা ইয়াসমীনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দেওয়া হচ্ছে। জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জন ও সম্পদের তথ্য গোপনের অভিযোগে করা মামলায় আজ রোববার অভিযোগপত্র অনুমোদন দিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
দুদকের উপপরিচালক (জনসংযোগ) প্রণব কুমার ভট্টাচার্য প্রথম আলোকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, শিগগিরই বিচারিক আদালতে এ অভিযোগপত্র জমা দেওয়া হবে।

দুদক সূত্র জানায়, চলতি বছরের ৫ জুন রাজধানীর রমনা মডেল থানায় এ দুজনের বিরুদ্ধে মামলা করেন দুদকের উপপরিচালক হেলাল উদ্দীন শরীফ। তিনিই মামলার তদন্ত করেন।
সূত্র আরও জানায়, ফরিদা ইয়াসমীনের বিরুদ্ধ জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগ প্রাথমিকভাবে প্রমাণ হওয়ায় ২০১৬ সালের ২৪ আগস্ট তাঁকে সম্পদের হিসাব বিবরণী দাখিল করতে নোটিশ দেয় দুদক। পরে ওই বছরের ২৭ আগস্ট তিনি এ নোটিশ গ্রহণ করেন। ওই বছরের ৫ সেপ্টেম্বর দুদকে সম্পদের হিসাব বিবরণী দাখিল করেন ফরিদা ইয়াসমীন। দুদকে জমা দেওয়া সম্পদ বিবরণীতে ফরিদা ইয়াসমীন ৯২ লাখ ৫১ হাজার টাকার স্থাবর এবং ৫৮ লাখ টাকার অস্থাবর সম্পদের হিসাব দেন। অনুসন্ধানে দেখা যায়, ওই বিবরণীতে তিনি তাঁর নামে থাকে ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংকে চার লাখ টাকার স্থায়ী আমানতের তথ্য দেননি।

মামলার তদন্ত পর্যায়ে দেখা গেছে, আয়কর রিটার্নে দাখিল করা বিবরণীর তথ্য অনুসারে ফরিদা ইয়াসমীনের বৈধ সম্পদ থাকার কথা ৪৩ লাখ ৬০ হাজার ২৪০ টাকার। অথচ তাঁর সম্পদ পাওয়া গেছে ১ কোটি ৫২ লাখ ৩ হাজার ৯৯২ টাকার। সে হিসাবে তিনি ১ কোটি ৮ লাখ ৪৩ হাজার ৭৫২ টাকার জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জন করেছেন। এ ছাড়া চার লাখ টাকার সম্পদের তথ্য গোপন করেছেন। আনোয়ারুল ইসলাম তাঁর স্ত্রীকে জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জন ও সম্পদের তথ্য গোপনে সহায়তা করেছেন।

প্রসঙ্গত, মামলার তদন্ত পর্যায়ে আদালতের নির্দেশে অবৈধ ওই সম্পদের স্থাবর অংশের ৭৭ লাখ ৭০ হাজার ৮২৭ টাকার সম্পদ জব্দ করা হয়েছে।
এদিকে জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে ২০১৭ সালের ১৯ এপ্রিল দুদকের একই কর্মকর্তা উপপরিচালক হেলাল উদ্দিন শরীফ বাপেক্সের জিএম আনোয়ারুল ইসলামের বিরুদ্ধে ঢাকার রমনা থানায় আরেকটি মামলা করেন। ওই মামলায় তাঁর বিরুদ্ধে জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগ আনা হয়। মামলার নথি থেকে জানা যায়, ২০১৬ সালের ২৪ আগস্ট এ কে এম আনোয়ারুল ইসলামকে সম্পদের হিসাব বিবরণী দাখিল করতে নোটিশ দেয় দুদক। পরে ওই বছরের ২৭ আগস্ট আনোয়ারুল এ নোটিশ গ্রহণ করেন। ওই বছরের ৫ সেপ্টেম্বর দুদকে সম্পদের হিসাব বিবরণী দাখিল করেন আনোয়ারুল ইসলাম।

কিন্তু দুদক তদন্ত করে দেখে, আনোয়ারুল ইসলাম তাঁর হিসাব বিবরণীতে ৩২ লাখ ১২ হাজার ৩৩ টাকার সম্পদের হিসাব গোপন করেছেন। সে অভিযোগ তাঁর বিরুদ্ধে মামলা হয়। গত বছরের ২২ অক্টোবর আনোয়ারুল ইসলামের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দেয় দুদক।