ঢাকায় বিএনপির সভা বৃহস্পতিবার, স্থান ঠিক হয়নি

রুহুল কবির রিজভী। ফাইল ছবি
রুহুল কবির রিজভী। ফাইল ছবি

ঢাকায় আগামী বৃহস্পতিবার জনসভা করবে বিএনপি। দলটির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী আজ সোমবার এ কথা জানান। রিজভী বলেছেন, সোহরাওয়ার্দী উদ্যান অথবা রাজধানীর নয়াপল্টনে এ সভা হতে পারে।

আজ সকালে নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সাংবাদিক সম্মেলনে জনসভার ঘোষণা দেন রিজভী। তিনি বলেন, বৃহস্পতিবার বেলা দুইটায় এই জনসভা হবে।

আজকের সংবাদ সম্মেলনে সমাবেশের ঘোষণা দেওয়ার পাশাপাশি বিভিন্ন বিষয়ে সরকারের তীব্র সমালোচনা করেন। রিজভী বলেন, ‘আওয়ামী লীগের সুশাসনের বোধ কখনোই ছিল না। নানা ফন্দিফিকির করে ক্ষমতায় এসে সন্ত্রাস বিতরণের কেন্দ্রে পরিণত হয়। চাঁদাবাজি, দখল, টেন্ডার–সন্ত্রাস, লুটপাট, নির্যাতন-অত্যাচারের কাহিনি প্রতিদিন সংবাদপত্রের পাতায় জায়গা দখল করে থাকে।’

সাবেক ছাত্রনেতা রিজভী বলেন, ‘আওয়ামী রাজনীতি কখনোই দলীয় সংকীর্ণতার বলয় থেকে বেরিয়ে আসতে পারেনি। সে জন্য আওয়ামী ক্ষমতাসীনরা ব্যাংক-বিমা, শেয়ারবাজার, বিদ্যুৎ, জ্বালানি, শিক্ষা ও স্বাস্থ্য সেক্টর সবই আত্মসাৎ করেছে।’

গত সপ্তাহে সাবেক প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার একটি বই প্রকাশিত হয়। রিজভীর বক্তব্যে কয়েক দিন ধরেই সেই প্রসঙ্গ উঠে আসছে। আজকের সংবাদ সম্মেলনেও ছিল সিনহা প্রসঙ্গ। রিজভী বলেন, ‘সাবেক প্রধান বিচারপতি এস কে সিনহার প্রতি সরকারের আচরণের ঘটনাগুলো প্রকাশ হওয়ায় দেশবাসীসহ বিশ্ববাসী বিমূঢ় বিস্ময়ে হতবাক হয়েছে। দেশের প্রধান বিচারপতিকে যেভাবে সরকারপ্রধান থেকে শুরু করে অন্য মন্ত্রীরা হুমকি, গালিগালাজ ও লাঞ্ছিত করেছেন, তাতে আওয়ামী রাজনীতির বিকৃত সংস্কৃতি আবারও জনগণের কাছে সুস্পষ্টভাবে ফুটে উঠেছে।’

আগামী ১০ অক্টোবর ২১ আগস্টের গ্রেনেড হামলার মামলার রায়ের তারিখ নির্ধারণ করেছেন আদালত। কয়েক দিন ধরে এ মামলা এবং বিচারিক প্রক্রিয়া নিয়ে সমালোচনায় মুখর আছেন রিজভী। গতকাল রোববার সংবাদ সম্মেলনে তিনি ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট আওয়ামী লীগের সমাবেশে গ্রেনেড হামলাকে ‘আওয়ামী রাজনীতির কুটিল পাটিগণিত’ বলে মন্তব্য করেন। রিজভী বলেন, ২১ আগস্ট বোমা হামলার পুরো বিষয়টাই একটি প্রহেলিকা। জাতীয়তাবাদী শক্তিকে ধ্বংস করার দেশীয় ও বৈদেশিক চক্রান্তের বিপজ্জনক ব্লুপ্রিন্ট। বিএনপিকে নিশ্চিহ্ন করার নানাবিধ ষড়যন্ত্রের ধারাবাহিকতায় ২১ আগস্ট বোমা হামলা মামলায় সরকার হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করছে আইন-আদালতকে। 

বিএনপি ক্ষমতায় থাকার সময় ২০০৪ সালের ২১ আগস্টের ভয়াবহ হামলায় মহিলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আইভী রহমানসহ আওয়ামী লীগের ২৬ নেতা-কর্মী নিহত হন। ভয়াবহ ওই হামলায় আহত হন সংসদের তৎকালীন বিরোধীদলীয় নেত্রী ও বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

আজকের সংবাদ সম্মেলনেও রিজভী ২১ আগস্ট প্রসঙ্গ আনেন এবং মুখর হন সমালোচনায়। তিনি বলেন, দেশ এখন আওয়ামী কুরাজনীতির ঘোঁট পাকানো অবস্থার মধ্যে নিপতিত হয়েছে। এখন সরকারের ইচ্ছা–অনিচ্ছা অনুযায়ী আইনি প্রক্রিয়া ও বিচারিক কার্যক্রম চলে। ২১ আগস্টের বোমা হামলা মামলা এটির একটি প্রকৃষ্ট উদাহরণ। রিজভীর বক্তব্য , বিএনপির নির্দোষ ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানসহ অন্য কর্মকর্তাদের কাল্পনিক গল্প তৈরি করে ফাঁসানোই হচ্ছে মূল উদ্দেশ্য। ২১ আগস্ট বোমা হামলা মামলায় তারেক রহমানের নাম জড়ানো সম্পূর্ণরূপে চক্রান্তমূলক ও সরকারপ্রধানের ক্রোধ ও ঈর্ষার ঝাল মেটানোরই বর্ধিত প্রকাশ।