সোয়া ৩ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে ব্যাংক কর্মকর্তা গ্রেপ্তার

মেহেরপুরের অগ্রণী ব্যাংক সদর শাখা থেকে ৩ কোটি ২৫ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগে ওই শাখার হিসাবরক্ষক মাহমুদুল করিম শিমুলকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গতকাল সোমবার রাত ১২টার দিকে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়।

গত রোববার মেহেরপুর সদর থানায় ওই শাখার ব্যবস্থাপক মেহেদি মাসুদ বাদী হয়ে পাঁচজনের বিরুদ্ধে অর্থ আত্মসাতের মামলাটি করেন। অন্য আসামিরা হলেন মাহমুদুল করিমের স্ত্রী জেসমিন করিম, বড় ভাই সামিউল করিম, বোন নুরুন নাহার ও চাচা কোমরা আলী।

মাহমুদুল করিম ২০১২ সালে অগ্রণী ব্যাংকে যোগ দেন। সদরের আমঝুপি ইউনিয়নের চাঁদবিল গ্রামে পরিবার নিয়ে বাস করেন তিনি।

মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, ২০১৫ থেকে ২০১৭ সাল পর্যন্ত মাহমুদুল করিম ব্যাংকটির আন্তখাত হিসাব (ইন্টারনাল অ্যাকাউন্ট) থেকে তাঁর পরিবারের চারজন সদস্যের নামে টাকা পাঠিয়েছেন। ব্যাংকের আন্তখাত হিসাব দেশের প্রতিটি শাখার সঙ্গে সম্পৃক্ত থাকে। ওই হিসাবের মাধ্যমে ব্যাংকের নিজস্ব অর্থ লেনদেন হয়। ভাউচারবিহীন খরচের হিসাব দেখিয়ে ব্যাংকের বেশির ভাগ কর্মকর্তার গোপন নম্বর ব্যবহার করে দীর্ঘদিন ধরে অর্থ সরানোর কাজ করেছেন তিনি।

ব্যাংকের শাখা ব্যবস্থাপক মেহেদি মাসুদ প্রথম আলোকে বলেন, সম্প্রতি মেহেরপুর শাখার আন্তখাতের হিসাব প্রধান কার্যালয়ে পাঠানোর জন্য কর্মকর্তারা নথি তৈরি করছিল। এ সময় টাকা লেনদেনের অনলাইন আদান–প্রদানের কাগুজে ভাউচার মেলাতে গিয়ে ৩ কোটি ২৫ লাখ টাকা হেরফেরের বিষয়টি উঠে আসে। টাকা সরানোর বছর ও মাসের হিসাব করে দেখা গেছে, ওই সময় হিসাবরক্ষক হিসেবে কর্মরত ছিলেন মাহমুদুল করিম। তাঁর সময়ে টাকা লেনদেনে কোনো কাগুজে ভাউচার পাওয়া যায়নি। অনলাইন লেনদেনের হিসাবে বেশির ভাগ টাকা পাঠানো হয়েছে পাঁচটি হিসাব নম্বরে। সব কটি হিসাব নম্বর ছিল মাহমুদুল করিমের আত্মীয়দের।

শাখাটি একাধিক সূত্র জানায়, অর্থ আত্মসাতের বিষয়ে খুলনার মহাব্যবস্থাপকের কার্যালয় থেকে পৃথক তদন্ত দল গঠন করা হয়েছে। গত রোববার থেকে তারা শাখাটির আন্তখাত হিসাবের অর্থ লেনদেনের বিষয়ে তদন্ত করছে।

ঘটনা জানার পর ব্যাংকের পক্ষ থেকে মাহমুদুল করিমের স্ত্রী জেসমিন করিমের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। তাঁর স্ত্রী প্রমাণ সাপেক্ষে সমুদয় টাকা ফেরত দেওয়ার লিখিত অঙ্গীকার করেন। একপর্যায়ে তিনি কয়েক দফায় ২০ লাখ টাকা ব্যাংক ব্যবস্থাপক বরাবর পে-অর্ডার করে জমা দেন। বাকি টাকা তাঁর পক্ষে জমা দেওয়া সম্ভব না হওয়ায় শাখা ব্যবস্থাপক মামলাটি করেন।

মেহেরপুর সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রবিউল ইসলাম বলেন, মামলাটি তালিকাভুক্ত করা হয়েছে। মামলার প্রধান আসামি মাহমুদুল করিমকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। অন্য আসামিদের গ্রেপ্তারে পুলিশ কাজ করছে।