বৃদ্ধ মাকে রাস্তায় ফেলে গেলেন তাঁরা!

নড়াইলের লোহাগড়া উপজেলায় ফুজলী বেগমকে (৮৬) রাস্তায় ফেলে আসেন সন্তানেরা। এ ঘটনায় তাঁর দুই ছেলে ও এক মেয়েকে আটক করেছে পুলিশ। বৃহস্পতিবার রাতে তাঁদের আটক করা হয়।

ফুজলী বেগমের বাড়ি লোহাগড়ার লক্ষ্মীপাশা ইউনিয়নের কুচিয়াবাড়ি গ্রামে। স্থানীয় লোকজন জানান, ফুজলী বেগমের কৃষিজীবী স্বামী মারা গেছেন অন্তত ৩০ বছর আগে। তাঁদের বড় ছেলে ডাকু শেখ বর্গাচাষি। মেজ ছেলে বাবু শেখ মৌসুমি ফসলের ব্যবসায়ী এবং ছোট ছেলে রাবু শেখ ডাব বিক্রেতা। দুই মেয়ের মধ্যে বড় মেয়ে কুলসুমের বিয়ে হয়েছে পাশের উলা গ্রামে। তাঁর স্বামী নেই। হতদরিদ্র পরিবার। ছোট মেয়ে চায়নার বিয়ে হয়েছে পাশের বাড়িতে। তিনি ভারতে থাকেন। সম্প্রতি বাড়িতে এসেছেন। মেজ ছেলে বাবু শেখ পৃথক বাড়ি করেছেন।
প্রতিবেশী সাবেক ইউপি সদস্য গোলাম সরোয়ার মোল্লা জানান, দু-তিন মাস ধরে মেয়ে কুলসুমের বাড়িতে থেকেছেন ফুজলী বেগম। তাঁর নামে ছিল গ্রামের মাঠে ৪ শতাংশ জমি। সেই জমি লিখে নিয়েছেন কুলসুম। এতেই চটেছেন অন্য ছেলেমেয়েরা।
বৃদ্ধার স্বজন ও প্রতিবেশীরা জানান, গত বুধবার সন্ধ্যায় কুলসুম তাঁর মাকে রেখে যান বৃদ্ধার মেজ ছেলে বাবু শেখের বাড়িতে। বাবু শেখ রাতে মাকে বড় ছেলে ডাকু শেখের বাড়ির সামনে রাস্তায় একটি চটের ওপর রেখে যান। রাত সাড়ে ১০টার দিকে ওই অবস্থায় তাঁকে দেখেন আশপাশের লোকজন। প্রতিবেশীদের অনেক অনুরোধের পর বড় ছেলে রাত দুইটার দিকে ঘরের বারান্দায় নিয়ে রাখেন। কিন্তু ঘরে তুলতে রাজি নন কোনোমতেই। পরদিন সন্ধ্যায় প্রশাসনের চাপে ডাকু শেখ ঘরে তোলেন বৃদ্ধাকে। খবর পেয়ে উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান সৈয়দ ফয়জুল আমির ও লোহাগড়া থানার উপপরিদর্শক (এসআই) নূরুস সালাম সিদ্দিক ওই বাড়িতে যান।

নূরুস সালাম সিদ্দিক জানান, এ ব্যাপারে বড় ছেলে ডাকু শেখ, ছোট ছেলে রাবু শেখ ও মেয়ে কুলসুমকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করা হয়েছে। মেজ ছেলে বাবুকে আটকের চেষ্টা চলছে। ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে পরে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

সৈয়দ ফয়জুল আমির বলেন, ‘বৃদ্ধার জন্য পাঁচ হাজার টাকা দিয়ে এসেছি। আর তাঁর সন্তানদের বলে এসেছি, পরে আরও টাকা দেব, তোমরা এই নিষ্ঠুরতা বাদ দাও।’