দাবি মানতে সরকারকে দুদিন সময় দিলেন প্রতিবন্ধীরা

কোটা সংরক্ষণের দাবিতে শাহবাগে অবস্থান কর্মসূচি পালন করছেন প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থী ও চাকরিপ্রত্যাশীরা। শাহবাগ, ঢাকা, ৮ অক্টোবর। ছবি: দীপু মালাকার
কোটা সংরক্ষণের দাবিতে শাহবাগে অবস্থান কর্মসূচি পালন করছেন প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থী ও চাকরিপ্রত্যাশীরা। শাহবাগ, ঢাকা, ৮ অক্টোবর। ছবি: দীপু মালাকার

আগামী বুধবারের মধ্যে ৫ শতাংশ কোটা বহালের দাবি মানা না হলে মহাসমাবেশের ঘোষণা দিয়েছে বাংলাদেশ প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থী ঐক্য পরিষদ। আজ সোমবার সন্ধ্যায় শাহবাগে জাতীয় জাদুঘরের সামনের সড়কে অবস্থান কর্মসূচি থেকে এই ঘোষণা দেওয়া হয়।

বাংলাদেশ প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থী ঐক্য পরিষদের আহ্বায়ক মো. আলী হোসেন সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমরা এ দেশের নাগরিক, আমাদের কেন বঞ্চিত করা হলো? আমাদের প্রতি অবিচার করা হয়েছে।’ তবে প্রধানমন্ত্রী তাঁদের বিষয়ে ভাববেন বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি। এ ছাড়া দাবি মানার জন্য সরকারকে মঙ্গল ও বুধবার এ দুদিন সময় দিয়েছেন। এর মধ্যে না মানা হলে বৃহস্পতিবার সকাল ১০টায় রাজধানীর মতিঝিলের শাপলা চত্বরে মহাসমাবেশ করবে প্রতিবন্ধীদের এ সংগঠনটি। এরপরও সরকার দাবি না মেনে নিলে আমরণ অনশন পালন করা হবে বলে ঘোষণা দেওয়া হয়।

সড়ক অবরোধ করে ৫ শতাংশ কোটা সংরক্ষণের দাবিতে অবস্থান কর্মসূচি পালন করছেন প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থী ও চাকরিপ্রত্যাশীরা। শাহবাগ, ঢাকা, ৮ অক্টোবর। ছবি: দীপু মালাকার
সড়ক অবরোধ করে ৫ শতাংশ কোটা সংরক্ষণের দাবিতে অবস্থান কর্মসূচি পালন করছেন প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থী ও চাকরিপ্রত্যাশীরা। শাহবাগ, ঢাকা, ৮ অক্টোবর। ছবি: দীপু মালাকার

প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির সরকারি চাকরিতে ৫ শতাংশ প্রতিবন্ধী কোটা সংরক্ষণ, প্রতিবন্ধী মন্ত্রণালয়, চাকরির লিখিত পরীক্ষায় প্রতি ঘণ্টায় ১০ মিনিট বেশি সময়, সরকারি-বেসরকারি সব চাকরিতে শ্রুতি লেখকের নীতিমালা, প্রতিবন্ধী সুরক্ষা আইন ২০১৩ অনুযায়ী চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা শিথিল, জাতীয় প্রতিবন্ধী অধিদপ্তর গঠনসহ ১১ দফা দাবির ঘোষণা দেয় বাংলাদেশ প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থী ঐক্য পরিষদ।
একই স্থানে পৃথকভাবে সমাবেশ করে ‘আমরা মুক্তিযোদ্ধার সন্তান’ নামের সংগঠন। তারা সরকারি চাকরির প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণিতে ৩০ শতাংশ কোটা বহালের দাবিতে আন্দোলন করছে। বিকেল পাঁচটা থেকে তারা অবস্থান নিতে শুরু করে। এ সংগঠনের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি হুমায়ূন কবীর সাংবাদিকদের বলেন, যাঁরা প্রজ্ঞাপন জারি করেছেন, তাঁরা প্রধানমন্ত্রীকে ভুল বুঝিয়েছেন। মুক্তিযোদ্ধার সন্তানেরা চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী হয়ে থাকতে পারেন না। যত দিন মুক্তিযোদ্ধা কোটার ৩০ শতাংশ বহাল করা না হবে, তত দিন তাঁরা আন্দোলন চালিয়ে যাবেন বলে জানান।

সড়ক অবরোধ করে ৫ শতাংশ কোটা সংরক্ষণের দাবিতে অবস্থান কর্মসূচি পালন করছেন প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থী ও চাকরিপ্রত্যাশীরা। শাহবাগ, ঢাকা, ৮ অক্টোবর। ছবি: দীপু মালাকার
সড়ক অবরোধ করে ৫ শতাংশ কোটা সংরক্ষণের দাবিতে অবস্থান কর্মসূচি পালন করছেন প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থী ও চাকরিপ্রত্যাশীরা। শাহবাগ, ঢাকা, ৮ অক্টোবর। ছবি: দীপু মালাকার

গতকাল রোববার মুক্তিযোদ্ধা সংসদ সন্তান কমান্ডের পক্ষ থেকে প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির সরকারি চাকরিতে কোটা বহালের দাবিতে আজ সোমবার বেলা তিনটা থেকে অবস্থান কর্মসূচি পালনের ঘোষণা দেওয়া হয়। তবে সন্ধ্যা পর্যন্ত তাঁদের অবস্থান নিতে দেখা যায়নি।

প্রসঙ্গত, গত বুধবার মন্ত্রিপরিষদের বৈঠকে প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির সরকারি চাকরিতে কোটা বাতিলের সিদ্ধান্ত অনুমোদন করেছে মন্ত্রিসভা। প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির সরকারি চাকরিতে কোটা বাতিলের যে সুপারিশ করেছিল সরকারি কমিটি, তাতে অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা। অর্থাৎ ৯ম থেকে ১৩তম গ্রেড পর্যন্ত চাকরিতে কোনো কোটা থাকবে না। এসব পদে নিয়োগ হবে মেধার ভিত্তিতে। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত মন্ত্রিসভার বৈঠকে এ প্রস্তাব অনুমোদন হয়।