সাধারণ জনগণের প্রতি সম্মান দেখান

গুরুদয়াল সরকারি কলেজ মাঠে বক্তৃতা করেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ। কিশোরগঞ্জ, ৮ অক্টোবর। ছবি: পিআইডির সৌজন্যে
গুরুদয়াল সরকারি কলেজ মাঠে বক্তৃতা করেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ। কিশোরগঞ্জ, ৮ অক্টোবর। ছবি: পিআইডির সৌজন্যে

রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ সাধারণ জনগণের প্রতি সম্মান দেখাতে এবং তাদের সঙ্গে ভালো ব্যবহার করতে জনপ্রতিনিধিদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেছেন, জনগণই রাষ্ট্রক্ষমতার প্রকৃত উৎস। নিজ শহর কিশোরগঞ্জে তিন দিনের সফর কর্মসূচির প্রথম দিন আজ সোমবার গুরুদয়াল কলেজ মাঠে এক গণসংবর্ধনা অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন। তিনি নির্বাচিত নেতাদের উদ্দেশে বলেন, জনগণকে সম্মান দেখাতে হবে এবং তাদের সঙ্গে ভালো ব্যবহার করতে হবে।

আবদুল হামিদ গত ২৪ এপ্রিল দ্বিতীয় দফায় দেশের রাষ্ট্রপতি হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণের পর জেলা শহর গুরুদয়াল কলেজে এটি তাঁর প্রথম সফর। এ উপলক্ষে জিলা সংবর্ধনা কমিটি কলেজ খেলার মাঠে এ সংবর্ধনা অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।

রাষ্ট্রপতি দেশ এবং দেশের জনগণের বৃহত্তর স্বার্থে আগামী সাধারণ নির্বাচনে ভালো প্রার্থীকে দলের মনোনয়ন দিতে রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতি আহ্বান জানান। বিশিষ্ট রাজনীতিবিদ এবং সাবেক স্পিকার আবদুল হামিদ দেশের বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতির উল্লেখ করে দেশের রাজনীতিতে গুণগতমান নিশ্চিত করতে আগামী নির্বাচনে প্রকৃত রাজনীতিবিদদের অগ্রাধিকার দেওয়ার ওপর গুরুত্বারোপ করেন।

রাষ্ট্রপতি দেশের সার্বিক উন্নয়নকে এগিয়ে নিয়ে যেতে যে দল কাজ করবে, আগামী সংসদ নির্বাচনে সেই দলকে ভোট দিতে ভোটারদের প্রতি আহ্বান জানান। তিনি বলেন, রাষ্ট্রপতির চেয়ারে বসে আমি কোনো রাজনৈতিক বক্তব্য দিতে পারি না। তবে কাজের বিনিময়ে খাদ্যসহ সব উন্নয়ন প্রকল্পের নামে সরকারি বরাদ্দ যেন কেউ আত্মসাৎ করতে না পারে, এমন লোকদের নির্বাচিত করতে তিনি ভোটারদের প্রতি আহ্বান জানান।

আবদুল হামিদ তাঁর ছাত্রজীবনের পর থেকে রাজনৈতিক জীবনের বিভিন্ন অধ্যায়ের উল্লেখ করে বলেন, এই বর্তমান অবস্থায় আসতে তাঁকে অনেক সমস্যা মোকাবিলা করতে হয়েছে। ইতিমধ্যে তিনি তাঁর অনেক ঘনিষ্ঠজন, বন্ধু ও রাজনৈতিক সহকর্মীকে হারিয়েছেন। তিনি তাঁদের অবদানের কথা স্মরণ করে তাঁদের প্রতি শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করেন এবং তাঁদের আত্মার শান্তি কামনা করেন। তিনি জনগণের কাছে দোয়া চেয়ে বলেন, ‘আমার বাকি জীবন দেশের ও জনগণের কল্যাণে ব্যয় করতে চাই।’

রাষ্ট্রপতি স্থানীয় জনগণের বিভিন্ন দাবির জবাবে কিশোরগঞ্জে একটি পূর্ণাঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন এবং সেখানে নির্বিঘ্ন রেল যোগাযোগ নিশ্চিত করার ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়ারও আশ্বাস প্রদান করেন।

অনুষ্ঠানে সাংসদ রেজওয়ান আহমেদ তৌফিক, আফজাল হোসেন, সোহরাব উদ্দিন, দিলারা বেগম আসমা, জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি কামরুল আহসান শাহজাহান, সাধারণ সম্পাদক এম এ আফজাল, রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ মেডিকেল কলেজের পরিচালক রাসেল আহমেদ তুহিন ও কিশোরগঞ্জ পৌরসভার মেয়র মাহাবুব পারভেজ উপস্থিত ছিলেন। কিশোরগঞ্জ জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মো. জিল্লুর রহমান অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন।
পরে এক মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।