বিরোধ থাকবে, তাই বলে নেতৃত্বশূন্য করার চেষ্টা হবে?

রাজনীতি মানে কি বিরোধী দলের ওপর পৈশাচিক আক্রমণ? এই রাজনীতি এ দেশের জনগণ চায় না। সরকারি ও বিরোধী দলের মধ্যে শত বিরোধ থাকবে, তাই বলে নেতৃত্বশূন্য করার চেষ্টা চালানো হবে? রাজনীতিতে এমন ধারা চালু থাকলে মানুষ রাজনীতিবিমুখ হয়ে পড়বে।

আজ বুধবার দুপুরে ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলার রায়ের পর্যবেক্ষণে বিশেষ আদালত-৫–এর বিচারক শাহেদ নূর উদ্দীন এই মন্তব্য করেছেন।

২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলার দায়ে সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবরসহ ১৯ জনের ফাঁসির আদেশ এবং বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারপারসন তারেক রহমানসহ ১৯ জনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেন আদালত। এ ছাড়া আরও ১১ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে সাজা দিয়েছেন আদালত।

রায়ের পর্যবেক্ষণে আদালত বলেন, রাজনীতিতে ক্ষমতাসীন দল এবং বিরোধী দলের মধ্যে শত বিরোধ থাকবে। তাই বলে কি বিরোধী দলকে নেতৃত্বশূন্য করার প্রয়াস চালানো হবে? গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে ক্ষমতায় বিরোধী যে দলই থাকবে, বিরোধী দলের প্রতি তাদের উদারনীতি প্রয়োগের মাধ্যমে গণতন্ত্র সুপ্রতিষ্ঠিত করার প্রচেষ্টা থাকতে হবে।

আদালত বলেন, বিরোধী দলের নেতাদের হত্যা করে ক্ষমতাসীনদের রাজনৈতিক ফায়দা লোটা মোটেও গণতান্ত্রিক চিন্তার বহিঃপ্রকাশ নয়। রাজনৈতিক জনসমাবেশে গ্রেনেড হামলা চালিয়ে রাজনৈতিক নেতা ও সাধারণ জনগণকে হত্যার এ ধারা চালু থাকলে সাধারণ মানুষ রাজনীতিবিমুখ হয়ে পড়বে।

আদালত এ দেশে আর এমন হামলার পুনরাবৃত্তি চান না—এমন মন্তব্য করে বিচারক শাহেদ নূর উদ্দীন বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, সাবেক অর্থমন্ত্রী শাহ এ এম এস কিবরিয়ার ওপর হামলা বা রমনা বটমূলে হামলার মতো ঘটনার পুনরাবৃত্তি চায় না। আসামিদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিয়ে নৃশংস হামলার পুনরাবৃত্তি ঠেকানো সম্ভব।

আদালত বলেন, এ আদালত চিকিৎসক প্রাণ গোপাল দত্ত, আওয়ামী লীগ নেতা সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত, সাহারা খাতুন, বাহাউদ্দিন নাছিমের জবানবন্দি গভীরভাবে পর্যালোচনা করেছেন। সাক্ষী নীলা চৌধুরী গ্রেনেড হামলায় আহত হয়ে দুর্বিষহ জীবন যাপন করছেন। আদালত বলেন, ভয়াবহ গ্রেনেড হামলার ফলে তৎকালীন বিরোধী দলের নেতা বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ডান কান গুরুতম জখম হয়।