তারেক রহমানকে ফিরিয়ে আনা কঠিন কাজ নয়: অ্যাটর্নি জেনারেল

অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম। ফাইল ছবি
অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম। ফাইল ছবি

অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম বলেছেন, ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলায় যাবজ্জীবন কারাদণ্ড পাওয়া বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে দেশে ফিরিয়ে আনা কঠিন কাজ নয়। আজ বৃহস্পতিবার নিজ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন। বার্তা সংস্থা ইউএনবি এক প্রতিবেদনে এ খবর জানিয়েছে।

আওয়ামী লীগের সভানেত্রী শেখ হাসিনাকে হত্যার উদ্দেশ্যে ২০০৪ সালে ২১ আগস্ট চালানো গ্রেনেড হামলা মামলার গতকাল বুধবার দেওয়া রায়ে সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর, উপমন্ত্রী আবদুস সালাম পিন্টুসহ ১৯ জনের মৃত্যুদণ্ড দেন আদালত। এই মামলায় বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান, হারিছ চৌধুরী, সাবেক সাংসদ কায়কোবাদসহ ১৯ জনের যাবজ্জীবন দেওয়া হয়। ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল-১-এর বিচারক শাহেদ নূর উদ্দীন এই রায় দেন। এর মধ্য দিয়ে ১৪ বছর আগে সংঘটিত নৃশংস এই হত্যাকাণ্ডের বিচার বিচারিক আদালতে শেষ হলো।

এই মামলার রায় পর্যালোচনা করে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের দণ্ড বৃদ্ধির আপিল করা হবে বলে জানিয়েছেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম। তিনি বৃহস্পতিবার বলেন, ‘এ মামলায় তারেক রহমানকে যদি নাটের গুরু বলা হয়ে থাকে, তবে সেটা রায় পর্যালোচনা করে দেখব। রায় পড়ে যদি দেখি তারও মৃত্যুদণ্ড হওয়া উচিত ছিল, তবে তার দণ্ড বাড়াতে রাষ্ট্রপক্ষ থেকে আপিল করব। সবটাই নির্ভর করবে রায়টি পড়ার পর।’

পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী জুলফিকার আলী ভুট্টোর প্রসঙ্গ টেনে মাহবুবে আলম বলেন, ‘তিনি নিজে খুন করেননি, কিন্তু খুন করিয়েছেন বলে তাঁকেও মৃত্যুদণ্ড পেতে হয়েছে। তাই আমার মনে হয়, তারেকের অন্যদের মতো ফাঁসি হওয়া উচিত ছিল। আজ বিভিন্ন পত্রপত্রিকায় এসেছে যে রাষ্ট্রীয় সমর্থন, প্ররোচনা ও অর্থায়নে এই হামলা হয়েছিল।’

মৃত্যুদণ্ড হলে অনেক দেশ দণ্ডিত ব্যক্তিকে রাজনৈতিক আশ্রয় দেয় জানিয়ে মাহবুবে আলম বলেন, ‘আন্তর্জাতিক আইন অপরাধীকে আশ্রয় দেওয়া সমর্থন করে না। ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলায় তারেক রহমানের তো যাবজ্জীবন সাজা হয়েছে। তাই তাকে দেশে ফিরিয়ে আনতে কষ্ট হবে না।’

মামলার ডেথ রেফারেন্স হাইকোর্টে এলে দ্রুত শুনানির মাধ্যমে নিষ্পত্তির উদ্যোগ নেওয়া হবে বলেও জানান অ্যাটর্নি জেনারেল। তিনি বলেন, ‘রায়ে যাঁদের মৃত্যুদণ্ড হয়েছে, তাঁরা যদি আপিল করেন, তবে সেটাও ডেথ রেফারেন্সের সঙ্গে শুনানি হবে। সে ক্ষেত্রে আমরা রাষ্ট্রপক্ষ যত দ্রুত সম্ভব শুনানির জন্য পদপেক্ষ নেব। তবে পেপারবুক তৈরি করার বিষয় রয়েছে, সেগুলো আদালতের বিষয়। কিন্তু মামলার আপিল শুনানিতে আমাদের পদক্ষেপগুলো আমরা নেব।’

মামলায় একজন পাকিস্তানি নাগরিকের সাজা হয়েছে উল্লেখ করে অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, ‘এখানে আমরা অনুমান করছি, বাংলাদেশের ক্ষতি করার জন্য, বাংলাদেশকে নেতৃত্বশূন্য করার জন্য পাকিস্তান এখনো নিবৃত্ত হয়নি। পাকিস্তান এরই মধ্যে সন্ত্রাসবাদে জড়িয়ে পড়েছে। আমরা সে ক্ষেত্রে জেএমবিসহ জঙ্গিদের দমন করতে সফল হয়েছি। সাজাপ্রাপ্ত ওই পাকিস্তানি নাগরিককে নিয়ে যথেষ্ট সন্দেহ রয়েছে। দেশকে অস্থিতিশীল করতে পাকিস্তানের ইন্ধন থাকতে পারে।’