বিগত দু-এক বছরের মধ্যে দেশ থেকে অর্থ পাচার হয়েছে বলে মনে করেন না অর্থমন্ত্রী

অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত। প্রথম আলো ফাইল ছবি
অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত। প্রথম আলো ফাইল ছবি

বিগত দুই-এক বছরের মধ্যে দেশ থেকে অর্থ পাচার হয়েছে বলে মনে করেন না অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত। তিনি বলেছেন, ‘আমি মনে করি না বিগত দু-এক বছরের মধ্যে দেশ থেকে অর্থ পাচার হয়েছে।’

অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত শুক্রবার বালিতে হোটেল ওয়েস্টিনে আন্তর্জাতিক অর্থ তহবিলের (আইএমএফ) উপব্যবস্থাপনা পরিচালক মিৎসুহিরো ফুরুসাওয়ার সঙ্গে বৈঠক করেন। পরে বৈঠকের ফলাফল সম্পর্কে সাংবাদিকদের ব্রিফিংকালে তিনি এই মন্তব্য করেন।

অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ে অর্জনগুলোর মধ্যে অন্যতম হচ্ছে পুঁজিবাজার স্থিতিশীল করা এবং এখন আমরা অপর কয়েকটি বিষয়ের দিকে নজর দেওয়ার চেষ্টা করব।’ আমদানি বেড়ে যাওয়ার কারণে অর্থ পাচারের সুযোগ সৃষ্টি হওয়া সম্পর্কিত এক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, ‘আমি এ ধরনের অভিযোগের সঙ্গে একমত নই।’ তিনি বলেন, আমি মনে করি না বিগত দু-এক বছরের মধ্যে দেশ থেকে অর্থ পাচার হয়েছে। তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ নিয়ে কোনো অনিশ্চয়তা আছে, আমি এমন কিছুও মনে করি না।’

অর্থমন্ত্রী দৃঢ় আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেছেন, বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় থাকলে প্রবৃদ্ধিসহ সব প্রত্যাশা পূরণ হবে। তিনি বলেন, কিন্তু ভবিষ্যতে খালেদা জিয়ার দল রাষ্ট্রপরিচালনার দায়িত্বে এলে প্রবৃদ্ধি হ্রাস পাবে এবং দেশবাসীর কোনো প্রত্যাশাই পূরণ হবে না।

অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘আগামী বছরগুলোতে প্রবৃদ্ধি অর্জনে নির্বাচনের কোনো প্রভাব পড়বে না, তবে প্রবৃদ্ধি নির্ভর করবে নির্বাচনের পর কে বা কোন দল সরকার গঠন করবে। যদি খালেদা জিয়া সরকার গঠন করেন, তবে আপনি নিশ্চিত ধরে নিতে পারেন, প্রবৃদ্ধি হ্রাস পাবে এবং তাঁর সময়ে কোনো উন্নয়ন হবে না।’ তিনি বলেন, ‘খালেদা জিয়া সমৃদ্ধি কী, তা জানেন না। বর্তমান সরকার পুনরায় ক্ষমতায় এলে প্রবৃদ্ধিসহ সব উন্নয়ন কর্মসূচি বাস্তবায়ন হবে।’

অর্থমন্ত্রী মুহিত বালিতে বিশ্বব্যাংক এবং আইএমএফের বার্ষিক সভায় বাংলাদেশের আগামী সাধারণ নির্বাচন নিয়ে কোনো আলোচনা হয়নি বলে উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, বৈঠকে বাংলাদেশের আগামী সাধারণ নির্বাচন নিয়ে কোনো আলোচনা হয়নি, বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এ নিয়ে বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছেন।

অর্থমন্ত্রী মুহিত আইএমএফের ডিএমডির সঙ্গে বৈঠকের ফলাফল সম্পর্কে বলেন, আইএমএফ বলেছে, বাংলাদেশের সার্বিক অর্থনীতি ভালো। তবে আইএমএফ বাংলাদেশের ব্যাংক সেক্টরে কিছুটা দুর্বলতার কথা উল্লেখ করেছে, বিশেষ করে ব্যাংক ঋণ প্রদানের ক্ষেত্রে।

অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত বলেন, আইএমএফের একটি মিশন সম্প্রতি ঢাকা সফরকালে বাংলাদেশের ব্যাংক খাত নিয়ে তাঁদের সঙ্গে তিনি একমত পোষণ করেছিলেন। তিনি বলেন, তিনি ব্যাংক খাত সংস্কারের পরিকল্পনা করেছেন। এক মাসের মধ্যে অথবা আগামী মাসে এ বিষয়ে পদক্ষেপ নেওয়া হবে বলে তিনি উল্লেখ করেন। আগামী মাসে তিনি ব্যাংক খাতের সংস্কার নিয়ে একটি লেখা প্রকাশ করবেন।

বিশ্বব্যাংকের প্রকাশিত মানবসম্পদ সূচকে বাংলাদেশের অবস্থান সম্পর্কিত এক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, দেশে শিক্ষা খাতে সরকার বরাদ্দ বাড়ালে মানবসম্পদ সূচকের আরও উন্নতি হবে। দেশে শিক্ষার হার আরও বৃদ্ধির সুযোগ রয়েছে বলে তিনি উল্লেখ করেন।