ভোর হতেই মাছের মেলা

>
  • সকালে কয়েক ঘণ্টা শান্তিনগর মোড় থেকে মালিবাগের দিকের ফুটপাতে বসে মাছের মেলা। 
  • মাছের মধ্যে বেশির ভাগই সতেজ
  • ক্রেতাদের আগ্রহও একটু বেশি

সকাল ছয়টা। প্রতিদিনের মতো ফজরের নামাজ শেষে বসেছে হরেক রকম মাছের সমারোহ। কেনাবেচা চলে সকাল সাড়ে আটটা পর্যন্ত। এখানকার মাছের মধ্যে বেশির ভাগই সতেজ। তাই ক্রেতাদের আগ্রহও একটু বেশি। প্রতিদিন সকালে কয়েক ঘণ্টা শান্তিনগর মোড় থেকে মালিবাগের দিকের ফুটপাতে যেন বসে মাছের মেলা।

শান্তিনগর বাজারে মাছের স্থায়ী দোকান থাকলেও কয়েক বছর ধরে শান্তিনগর মোড়ে ফুটপাতে অস্থায়ী এই মাছের বাজার নিয়মিত বসছে। ফজরের নামাজ শেষে শুরু হওয়া বাজার চলে সাড়ে আটটা পর্যন্ত। তারপর ফুটপাত থেকে চলে যান ব্যবসায়ীরা। সব মাছ বিক্রি না হলে পরে সেগুলো আশপাশের মহল্লার গলিতে নিয়ে ফেরি করে বিক্রি করা হয়।

প্রতিদিন সকালে শান্তিনগর মোড়ে ফুটপাতে বসে অস্থায়ী মাছের বাজার। সেখানে নানা প্রজাতির  মাছ বিক্রি হয়। যার বেশির ভাগই থাকে টাটকা। গতকাল সকালে তোলা ছবি। প্রথম আলো
প্রতিদিন সকালে শান্তিনগর মোড়ে ফুটপাতে বসে অস্থায়ী মাছের বাজার। সেখানে নানা প্রজাতির মাছ বিক্রি হয়। যার বেশির ভাগই থাকে টাটকা। গতকাল সকালে তোলা ছবি। প্রথম আলো

গতকাল রোববার সরেজমিনে দেখা গেছে, বিক্রেতারা ফজরের নামাজ শেষেই সড়কের পশ্চিম পাশের ফুটপাতে বিভিন্ন প্রজাতির মাছের পসরা সাজিয়ে বসেছেন। আকারভেদে দামের পার্থক্য রয়েছে। দুই ঘণ্টা ধরে চলা এই বাজারে ক্রেতাদের উপচে পড়া ভিড় লেগেই আছে। সেখানে শোল মাছ আকারভেদে বিক্রি হচ্ছে ৫০০ থেকে ৮০০ টাকা, রুই প্রতি কেজি ৩০০ থেকে ৪৫০ টাকা, পাবদা ৫০০ থেকে ৭০০ টাকা, কাতলা ৩০০ থেকে ৫৫০ টাকা, শিং ৩০০ থেকে ৮০০ টাকা, দেশি কই ৬০০ থেকে ৮০০ টাকা, চাষের কই ১৫০ থেকে ১৮০ টাকা, মাগুর ৪০০ থেকে ৭০০ টাকা ও রুপচাঁদা ৮০০ থেকে ১০০০ টাকায়।

এ ছাড়া দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে আসা নানা প্রজাতির মাছও হরদম বিক্রি হচ্ছে। পুকুর ও নালার পুঁটি মাছ থেকে শুরু করে বোয়াল, নদীর কাজলি মাছ, সামুদ্রিক রুপচাঁদা থেকে শুরু করে পোয়া মাছ দেদার বিক্রি হচ্ছে। অনেক মাছই তরতাজা। অবস্থা দেখে অনেকের কাছে মনে হতে পারে কিছুক্ষণ আগেই পুকুর, নদী, খাল বা হাওর থেকে এসব মাছ ধরে আনা হয়েছে।

সেখানকার ব্যবসায়ীদের দাবি, তাঁরা দেশের বিভিন্ন নদী, অসংখ্য খাল, বিল, হাওর, বাঁওড়, ডোবা, নালা থেকে ধরা নানা জাতের মাছ নিয়ে এই বাজারে আসেন। ক্রেতাদের কাছে এসব মাছের বেশ চাহিদাও রয়েছে।

এই বাজার থেকে সপ্তাহে অন্তত তিন দিন মাছ কেনেন স্থানীয় বাসিন্দা মিজানুর রহমান। গতকাল তিনি বলেন, শান্তিনগরের মাছের স্থায়ী বাজারের চেয়ে এখানকার মাছের প্রতি তাঁর পরিবারের আগ্রহ বেশি। এখানকার মাছ তুলনামূলক ভালো। বাজারে আনার পরও বেশির ভাগ মাছ তাজা। খেতেও বেশ সুস্বাদু। তাই সকালে ব্যায়াম শেষে বাসায় যাওয়ার আগে তিনি মাছ নিয়েই ঘরে ফেরেন।

শান্তিনগর মোড়ে অস্থায়ী মাছের এই বাজার বসার কারণে শান্তিনগর স্থায়ী মাছের বাজারে বিক্রি আগের চেয়ে অনেক কমেছে। শান্তিনগর বাজারের ব্যবসায়ীরা বলেন, দিনের শুরুতেই ক্রেতাদের অনেকে শান্তিনগর মোড় থেকে মাছ কেনেন, তাই স্থায়ী মাছের বাজারের অনেক ব্যবসায়ীর ক্রেতা কমে গেছে।