মেয়েকে উত্ত্যক্তের প্রতিবাদ করায় বাবাকে হত্যা

স্কুলে যাওয়া–আসার পথে আলী হোসেনের মেয়েকে প্রায়ই উত্ত্যক্ত করত এলাকার কয়েকজন বখাটে। এ বিষয়ে বাসায় জানালে আলী হোসেন ওই বখাটেদের কাছে যান, তর্কাতর্কি হয় তাঁদের মধ্যে। সেই রাগে কিছুদিন পর সুযোগ বুঝে মোটরসাইকেলে চাপা দিয়ে আলী হোসেনকে হত্যা করে বখাটেরা। নির্মম এই ঘটনা ঘটে বরগুনার আমতলী উপজেলার গাজীপুর গ্রামে।

এ ঘটনায় মো. হিরণ গাজী (২৫) নামের এক বখাটেকে গত রোববার নারায়ণগঞ্জ থেকে গ্রেপ্তার করেছে পটুয়াখালী র‍্যাব-৮। আজ মঙ্গলবার সকালে পটুয়াখালী র‌্যাব-৮ ক্যাম্পে প্রেস ব্রিফিংয়ে এ তথ্য জানানো হয়। এ সময় গ্রেপ্তার হওয়া হিরণ গাজীকে গণমাধ্যমকর্মীদের সামনে উপস্থিত করা হয়। হিরণ গাজী বরগুনা জেলার আমতলী উপজেলার গাজীপুর গ্রামের রমজান গাজীর ছেলে।

প্রেস ব্রিফিংয়ে র‌্যাব-৮ পটুয়াখালী কোম্পানি অধিনায়ক মেজর মো. মাসুদ রানা জানান, গাজীপুর গ্রামের আলী হোসেনের স্কুলপড়ুয়া মেয়েকে (১৫) স্কুলে যাওয়া-আসার পথে প্রায়ই উত্ত্যক্ত করতেন হিরণ গাজীসহ কয়েকজন। গত ৬ সেপ্টেম্বর সকালে আলী হোসেনের মেয়ে ও এক ভাগনি স্কুলে যাচ্ছিল। এ সময় তাদের পথ আটকে উত্ত্যক্ত করেন হিরণ। বাড়িতে এসে মেয়ে মা-বাবাকে বিষয়টি জানায়। পরে এ ঘটনার বিষয়ে আলী হোসেন হিরণের কাছে জানতে চাইলে তিনি ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন। আলী হোসেনকে হত্যার হুমকিও দেন।

গত ২৪ সেপ্টেম্বর বেলা দেড়টার দিকে আলী হোসেন গাজীপুর বাজার থেকে বাড়ি ফিরছিলেন। পথে হিরণ গাজী ও তাঁর সঙ্গী আরিফ হোসেন (২৫) দ্রুতগতিতে একটি মোটরসাইকেলে করে এসে আলী হোসেনকে চাপা দেন। এতে গুরুতর আহত হন আলী হোসেন। তাঁকে প্রথমে পটুয়াখালী ২৫০ শয্যার হাসপাতালে নেওয়া হয়। পরে বরিশাল শের–ই–বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। অবস্থার অবনতি হলে তাঁকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গত ২৭ সেপ্টেম্বর আলী হোসেন মারা যান।

র‍্যাব জানায়, এ ঘটনার পর আমতলী থানায় একটি মামলা হয়। ঘটনার পর থেকে বখাটে হিরণ ও তাঁর সহযোগী আরিফ পলাতক ছিলেন। র‍্যাব ৮ পটুয়াখালীর ক্যাম্পের সদস্যরা বখাটে হিরণ ও তাঁর সহযোগীকে গ্রেপ্তারে অভিযানে নামে। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে গত রোববার নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লা এলাকা থেকে বখাটে হিরণকে র‌্যাব-৮ সদস্যরা গ্রেপ্তার করেন। আরিফকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।