ওটা হচ্ছে জাতীয় শত্রুদের ঐক্য: শাজাহান

শাজাহান খান ।  ফাইল ছবি
শাজাহান খান । ফাইল ছবি

নৌপরিবহনমন্ত্রী শাজাহান খান বলেছেন, ড. কামাল হোসেন স্বাধীনতাবিরোধীদের সঙ্গে জাতীয় ঐক্য করেছেন। ওটা জাতীয় ঐক্য নয়, ওটা হচ্ছে জাতীয় শত্রুদের ঐক্য। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উন্নয়নে ক্ষিপ্ত হয়ে দেশে নতুন ষড়যন্ত্র শুরু হয়েছে। যাঁদের রাজনীতিতে কোনো খবরই ছিল না, হঠাৎ করেই শেখ হাসিনা সরকারের বিরুদ্ধে কথা বলতে শুরু করেছেন তাঁরা। তাঁরা গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনার কথা বলছেন।

মন্ত্রী বলেন, ইতিমধ্যে নিজেদের গড়া ঐক্যজোটে ভাঙন শুরু হয়েছে। ন্যাপ, এনডিপি বের হয়ে গেছে। ধীরে ধীরে অন্যরাও বেরিয়ে আসবে। তিনি প্রশ্ন রাখেন, ২০১৫ সালে বিএনপি-জামায়াত যখন গাড়িতে পেট্রলবোমা নিক্ষেপ করে আগুনে পুড়িয়ে মানুষ হত্যা করেছিল, তখন কোথায় ছিলেন ড. কামাল ও তাঁর সঙ্গীরা। যারা মানুষ পুড়িয়ে হত্যা করে, তাদের জন্য গণতন্ত্র হতে পারে না।

আজ শুক্রবার সকাল ১০টায় বরিশাল নদীবন্দরে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন করপোরেশনের (বিআইডব্লিউটিসি) বরিশাল আঞ্চলিক কার্যালয় কাম বাণিজ্যিক ভবনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্য মন্ত্রী এসব কথা বলেন।

এ সময় মন্ত্রী আরও বলেন, শেখ হাসিনার অপ্রতিরোধ্য শাসনামলে দেশ সামনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। তিনি যখনই ক্ষমতায় এসেছেন, তখনই দেশের উন্নয়নের কথা চিন্তা করে তা বাস্তবে রূপ দিয়েছেন। সেই নেত্রীকেই ১৯ বার হত্যার চেষ্টা করা হয়েছে। ২০০৪ সালে ঢাকার বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউতে গ্রেনেড বিস্ফোরণ করে শেখ হাসিনাকে হত্যার চেষ্টা করা হয়েছে। সেই মামলার রায় হয়েছে। মামলায় তারেক রহমানের যাবজ্জীবন ও লুৎফুজ্জামান বাবরের ফাঁসির আদেশ হয়েছে। বিএনপি-জামায়াতের উদ্দেশ্য ছিল বাংলাদেশকে ধ্বংস করে পাকিস্তানি ভাবধারায় দেশ পরিচালনা করা।

মন্ত্রী বর্তমান সরকারের বিভিন্ন উন্নয়ন কর্মকাণ্ড তুলে ধরে বলেন, দেশে খাদ্যঘাটতি নেই। বর্তমানে দেশে ১১ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদিত হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী ২০৪০ সালে ৬০ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন হবে বলে ঘোষণা দিয়েছেন। তিনি ১০০ বছরের ডেল্টা প্রকল্প প্রণয়ন করেছেন। বিদ্যুৎ উৎপাদনের পাশাপাশি সাধারণ কৃষকদের সার বিতরণ, বয়স্কভাতা, বিধবাভাতা, মাতৃত্বভাতা, প্রতিবন্ধী ভাতা প্রদান করছেন।

নৌমন্ত্রী বলেন, বরিশালে ইতিমধ্যে পাইলট বিশ্রামাগার নির্মাণ করা হয়েছে। নৌবন্দরের সৌন্দর্য বৃদ্ধির জন্য এবং বন্দরের জমি যাতে বেদখল না হয়, সে জন্য বনায়ন করা হয়েছে। বরিশাল নৌবন্দরের উত্তর পাশে বহুতল ভবন নির্মাণ করা হবে।

বিআইডব্লিউটিসির চেয়ারম্যান মোহাম্মদ মফিজুল হকের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন বরিশাল-২ আসনের সাংসদ তালুকদার মো. ইউনুস, বরিশাল-৫ (সদর) আসনের সাংসদ জেবুন্নেছা আফরোজ, বিআইডব্লিউটিএর ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান শহিদুল ইসলাম, নগর পুলিশ কমিশনার মোশারফ হোসেন এবং নৌ–পুলিশ সুপার কফিল উদ্দিন প্রমুখ। এতে স্বাগত বক্তব্য দেন বিআইডব্লিউটিসির পরিচালক সাহাদাত হোসেন। এর আগে ফিতা কেটে ভবনটির উদ্বোধন করেন নৌপরিবহনমন্ত্রী। এ সময় অতিথিরা উপস্থিত ছিলেন।

এ সময় মন্ত্রী বলেন, বরিশাল নদীবন্দর থেকে একদিকে স্টিমারঘাট এবং অপরদিকে পোর্ট রোড মৎস্য বন্দরের আগ পর্যন্ত উন্নয়ন প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে। এ ছাড়া এখানে বহুতল ভবন ও শপিং মল নির্মাণ করা হবে। আর আগামী ৬ মাসের মধ্যে এই প্রকল্প বাস্তবায়ন হবে বলে আশাব্যক্ত করেন মন্ত্রী।

অনুষ্ঠানে জানানো হয়, বরিশাল নদীবন্দরের সামনে প্রায় ১৪ শতক জমির ওপর ৪ কোটি ৫৯ লাখ ৪০ হাজার ৪৭০ টাকা ব্যয়ে ছয়তলাবিশিষ্ট এই বাণিজ্যিক ভবনটি নির্মাণ করা হয়। দ্বিতীয় থেকে ছয়তলা পর্যন্ত বাণিজ্যিক স্পেস রাখা হয়েছে। পাশাপাশি নিচতলায় ১৩টি বাণিজ্যিক দোকান নির্মাণ করা হয়েছে। এ ছাড়া ছয়তলার দক্ষিণ অংশে বিআইডব্লিউটিসির রেস্ট হাউস করা হয়েছে।