ইলিশ নিয়ে পুলিশের এএসআইয়ের কাণ্ড!

মুন্সিগঞ্জের লৌহজংয়ে জেলেদের ভয় দেখিয়ে ইলিশ মাছ ও টাকা আদায়ের অভিযোগে পুলিশের এক সহকারী উপপরিদর্শকসহ (এএসআই) তিনজনকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। আজ শুক্রবার সকাল ১০টার দিকে উপজেলার সামুর বাড়ি এলাকায় স্থানীয় লোকজন তাঁদের আটক করে পুলিশে সোপর্দ করেন।

পুলিশ সূত্রে জানা যায়, গ্রেপ্তার ব্যাক্তিরা হলেন: ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) সোহেল রানা, তাঁর দুই সহযোগী মো. মোহন (২৪) ও লিটন শেখ (২২)। সোহেলের বাড়ি জামালপুর জেলার সরিষাবাড়ীতে।  তিনি মুন্সিগঞ্জ পুলিশ লাইনে কর্মরত ছিলেন। ৪ মাস আগে দায়িত্বে অবহেলার জন্য তাঁকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। এ মাসের শুরুতে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশে যোগ দেওয়ার জন্য মুন্সিগঞ্জ থেকে ছাড়পত্র নেন তিনি। অপর দুজনের বাড়ি মুন্সিগঞ্জের সিরাজদিখান উপজেলার জৈনসার এলাকায়।

ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী মো. ইউনুস আলী প্রথম আলোকে বলেন, গতকাল বৃহস্পতিবার উপজেলার একটি চরে জেলেরা মাছ বিক্রি করছিলেন। সেখানে গিয়ে সোহেল নিজেকে লৌহজং থানার পুলিশ কর্মকর্তা বলে পরিচয় দেন। মা ইলিশ ধরার অপরাধে তিনি জেলেদের গ্রেপ্তার করার কথা বলেন। একপর্যায়ে জেলেদের কাছ থেকে পাঁচ হাজার টাকা ও ১২৫টি মা ইলিশ নিয়ে সবাইকে ছেড়ে দেন। অভিযোগ উঠেছে, সোহেল এর আগেও এখানে এসে জেলেদের কাছ থেকে মাছ ও টাকা নিয়েছেন। পরে জেলেরা লৌহজং থানায় খোঁজ নিয়ে জেনেছেন, সোহেল মুন্সিগঞ্জ জেলায় কর্মরত নন। প্রত্যক্ষদর্শী ব্যক্তিরা জানান, বৃহস্পতিবার মাছ ও টাকা নেওয়ার পরদিন শুক্রবার সকালেও সোহেল সহযোগীদের নিয়ে সামুর বাড়ি এলাকায় যান। সেখানে আবারও গ্রেপ্তারের ভয় দেখিয়ে জেলেদের কাছে টাকা চান। এ সময় জেলেরা দুই সহযোগীসহ সোহেলকে আটক করে থানায় খবর দেন।

লৌহজং থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. রাজিব খান প্রথম আলোকে বলেন, সোহেল রানা ও তাঁর সহযোগীদের বিরুদ্ধে ঘটনার সত্যতা পাওয়া গেছে। তাঁদের বিরুদ্ধে প্রতারণা ও বলপূর্বক অর্থ আদায়ের মামলা হয়েছে। এএসআই সোহেলের পরিচয় নিশ্চিত করে রাজিব খান বলেন, মামলা হওয়ার পর তাঁদের আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

মুন্সিগঞ্জ জেলা পুলিশ সুপার মো.জায়েদুল আলম ফুয়াদ প্রথম আলোকে বলেন, প্রকৃত সত্য জানার জন্য থানা পুলিশকে তদন্তের নির্দশ দেওয়া হয়েছে। যদি সোহেল দোষী না হন, মামলার বাদীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তিনি আরও বলেন, সোহেলের বিরুদ্ধে অভিযোগ আমলে নিয়ে মামলা হয়েছে।