জমে উঠেছে সায়েন্স ফিকশন বই মেলা

>পাঁচ শতাধিক বই নিয়ে রাজধানীর কেন্দ্রীয় গণগ্রন্থাগার প্রাঙ্গণে শুরু হয়েছে সায়েন্স ফিকশন বইমেলা

প্রতিনিয়ত নানা জায়গায় ভিন্নধর্মী অনেক বইমেলা হয়। কিন্তু শুধু সায়েন্স ফিকশন বই নিয়ে মেলার আয়োজন করে থাকে বাংলাদেশ সায়েন্স ফিকশন সোসাইটি (বিএসএফএস)। কল্পবিজ্ঞানের প্রায় সব বই নিয়ে পঞ্চমবারের মতো আয়োজিত এই বইমেলা গতকাল শনিবার শুরু হয়েছে শাহবাগের গণগ্রন্থাগার অধিদপ্তর প্রাঙ্গণে। কল্পবিজ্ঞানের বৈচিত্র্যপূর্ণ ও মজার মজার বইয়ের সমাহার ঘটেছে মেলায়। তাই প্রথম দিন থেকেই বিজ্ঞানপিপাসু পাঠকের আগমনে সরব হয়ে ওঠে মেলা।

‘এসো এসো, সায়েন্স ফিকশন বইমেলা ২০১৮-তে এসো; হারিয়ে যাও কল্পবিজ্ঞানের অজানা জগতে’ স্লোগান নিয়ে গতকাল দুপুরে বইমেলার উদ্বোধন করেন শিশুসাহিত্যিক আলী ইমাম। এর আগে কেন্দ্রীয় গণগ্রন্থাগারের সেমিনার কক্ষে আয়োজন করা হয় উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের। এতে অতিথি ছিলেন কথাসাহিত্যিক ও কালের কণ্ঠ-এর নির্বাহী সম্পাদক মোস্তফা কামাল, কথাসাহিত্যিক দীপু মাহমুদ। এ ছাড়া উপস্থিত ছিলেন সায়েন্স ফিকশন সোসাইটির সহসভাপতি এবং বাংলাদেশ জ্ঞান ও সৃজনশীল প্রকাশক সমিতির সভাপতি ফরিদ আহমেদ। সংগঠনের দপ্তর সম্পাদক আজহারুল হক ফরাজীর উপস্থাপনায় স্বাগত বক্তব্য দেন বইমেলা উদযাপন কমিটির আহ্বায়ক আমিনুল ইসলাম সবুজ। সভাপতিত্ব করেন সায়েন্স ফিকশন সোসাইটির সভাপতি কথাসাহিত্যিক মোশতাক আহমেদ।

আলী ইমাম বলেন, ‘সায়েন্স ফিকশন হচ্ছে রোমাঞ্চকর এবং অচেনা ও অজানা পৃথিবীতে যাত্রা। লেখকেরা যখন কল্পনা ও বিজ্ঞানের সাহায্যে নতুন পৃথিবীর কথা বলেন, তখন পাঠকও সেই চিন্তায় আলোড়িত ও অনুপ্রাণিত হয়। কিশোর-কিশোরী, তরুণ-তরুণী শুধু নয়, সব বয়সের পাঠকই পড়ে সায়েন্স ফিকশন বই।’

বিশেষ অতিথি মোস্তফা কামাল বলেন, ‘১৫ বছর আগে যখন প্রথম সায়েন্স ফিকশন লিখি, তখন এ ধারার পাঠক কম ছিল; প্রকাশকেরও আগ্রহ কম ছিল। তখন অনেকে সায়েন্স ফিকশনকে সাহিত্যই মনে করতেন না। কিন্তু সেই সময় আর নেই। সায়েন্স ফিকশন বর্তমানে সাহিত্যের জনপ্রিয় এক ধারা।’

অমর একুশে গ্রন্থমেলায় সায়েন্স ফিকশনের বই ও লেখকদের জন্য বিশেষ কর্নার স্থাপনের দাবি জানিয়ে কথাসাহিত্যিক দীপু মাহমুদ বলেন, ‘বিজ্ঞানের নানা গুরুত্বপূর্ণ আবিষ্কারের মূলেই রয়েছে সায়েন্স ফিকশনের গুরুত্বপূর্ণ অবদান। সেসব আবিষ্কার মানবসভ্যতাকে এগিয়ে দিয়েছে অনেকখানি।’

বাংলাদেশ জ্ঞান ও সৃজনশীল প্রকাশক সমিতির সভাপতি ফরিদ আহমেদ বলেন, ‘পৃথিবীতে নানা ধরনের বইমেলা হয়। শুধু সায়েন্স ফিকশনের বই নিয়ে বইমেলা হয়, পৃথিবীতে এমন উদাহরণ আর নেই। আমরা এ ক্ষেত্রে পথিকৃৎ বলা যায়।’

সভাপতির বক্তব্যে সায়েন্স ফিকশন সোসাইটির সভাপতি কথাসাহিত্যিক মোশতাক আহমেদ বলেন, ‘আজকের কল্পনা আগামীর বিজ্ঞান—এই স্লোগানে উদ্বুদ্ধ হয়ে আমরা যখন পাঁচ বছর আগে প্রথমবারের মতো এ মেলার আয়োজন করেছিলাম, তখনো ভাবতে পারিনি পাঠক ও মানুষ তা কীভাবে গ্রহণ করবে। আয়োজন নিয়মিত অব্যাহত রাখতে পারব কি না, তা নিয়েও শঙ্কা ছিল। পাঁচ বছরের ধারাবাহিকতায় এখন আমাদের আর কোনো শঙ্কা নেই। আমরা আপনাদের সব সময় পাশে পেতে চাই।’

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সায়েন্স ফিকশন বইপড়া প্রতিযোগিতায় বিজয়ীদের পুরস্কৃত করা হয়। অতিথিরা বিজয়ীদের হাতে ক্রেস্ট ও পদক তুলে দেন। দ্য সিটি ব্যাংক লিমিটেডের পৃষ্ঠপোষকতায় সাত দিনের এ মেলায় বিভিন্ন প্রকাশনার বিজ্ঞানবিষয়ক বই ২৫ শতাংশ ছাড়ে কেনা যাবে। উৎসবের সর্বোচ্চসংখ্যক বই ক্রেতাকে সমাপনী দিনে বিশেষ পুরস্কারে ভূষিত করা হবে। প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত এ মেলা চলবে। মেলা শেষ হবে ২৬ অক্টোবর।