লিপির স্বপ্ন পূরণ হবে কি?

লিপি খাতুন
লিপি খাতুন

বাবা আনসার সদস্য ছিলেন। ২০০৫ সালে দুর্বৃত্তদের গুলিতে নিহত হয়েছেন। এরপর সংসারে নেমে আসে সীমাহীন অভাব। এক বেলা খাবার জুটলে অন্য বেলা জোটে না। এ রকম শত সমস্যার সঙ্গে লড়াই করে পড়াশোনা করে এসএসসি ও এইচএসসিতে সাফল্য পেয়েছেন তিনি। এরপর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সুযোগ পেয়েছেন। কিন্তু টাকার অভাবে সেখানে ভর্তি হওয়া নিয়ে অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে।

এই কৃতী শিক্ষার্থীর নাম লিপি খাতুন। বাড়ি হাতীবান্ধা উপজেলার দক্ষিণ গড্ডিমারী গ্রামে। বাবা আজিজার রহমান আনসার–ভিডিপির সদস্য ছিলেন। লিপি খাতুন হাতীবান্ধা শাহ গরিবুল্লাহ বালিকা উচ্চবিদ্যালয় থেকে ২০১৬ সালে এসএসসি পরীক্ষায় মানবিক বিভাগে এবং হাতীবান্ধা মহিলা ডিগ্রি কলেজ থেকে চলতি বছর এইচএসসি পরীক্ষায় মানবিক বিভাগে জিপিএ–৫ পেয়েছেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের খ বিভাগে ভর্তি পরীক্ষায় তিনি উত্তীর্ণ হয়েছেন। লিপি খাতুনের স্বপ্ন, পড়াশোনা করে বিসিএস পরীক্ষা দিয়ে ক্যাডার হয়ে দেশ ও জাতির সেবা করবেন। কিন্তু স্বপ্নপূরণের প্রাথমিক পর্যায়েই তিনি সমস্যার মুখোমুখি হয়েছেন। কারণ, ভালোভাবে পড়াশোনার জন্য ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ পেয়েও আর্থিক সমস্যার কারণে সেখানে ভর্তি হতে পারছেন না।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ২০০৫ সালে লিপির বাবা আজিজার মারা যাওয়ার পর লিপির মা রহিমা বেগম ভীষণ বিপদে পড়েন। দিনমজুরি ও ধারদেনা করে এক ছেলে ও লিপিসহ দুই মেয়ের সংসার চালাতে গিয়ে নানা সমস্যার মুখোমুখি হন। দিনমজুরির কাজ পেলেই খাওয়া হয় আর কাজ না পেলে থাকতে হয় উপোস।

লিপি বলেন, ‘স্থানীয় লোকজন ও সবার সহযোগিতায় আমি এসএসসি ও এইচএসসিতে জিপিএ–৫ অর্জন করেছি। এবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়ার সুযোগ পাই। অভাবের মাঝে অনেক কষ্টে লেখাপড়া করেছি। আমার পরিবারের আমাকে বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ানোর মতো সামর্থ্য নেই। আমার বিসিএস ক্যাডার হওয়ার স্বপ্ন পূরণ হবে কি না তা জানি না।’

লিপি খাতুন আরও বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ে স্নাতক (সম্মান) প্রথম বর্ষে ভর্তি হওয়ার জন্য ১২–১৩ হাজার টাকা প্রয়োজন। এ ছাড়া হলে থাকাসহ প্রতি মাসে পড়াশোনার খরচ চালাতে আরাো সাত–আট হাজার টাকা করে দরকার হতে পারে।

লিপি খাতুনের মা রহিমা বেগম (৩৫) বলেন, ‘আমাদের ফসলি জমি নেই। বসতভিটার মাত্র পাঁচ শতক জমির ওপর ছোট একটি টিনের চালাঘর আছে। দিনমজুরির টাকায় অনেক কষ্টে সংসার চলে। মেয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ পেয়েছে। কিন্তু সেখানে পড়াশোনা করানোর মতো অর্থ আমাদের নেই। তা ছাড়া ছোট মেয়ে আয়শা সিদ্দিকা সামনে এসএসসি পরীক্ষার্থী। তার পড়াশোনার জন্যও অনেক টাকা খরচ হচ্ছে। এই পরিস্থিতিতে কেউ আমার মেয়ের পড়াশোনা চালাতে সহায়তা করলে আমরা উপকৃত হতাম।’ লিপীকে কেউ  সহায়তা করতে  চাইলে  বিকাশ করুন  (০১৭৩৮৪৮৪৪৬৩) নম্বরে ।