সিলেটে আ. লীগের কর্মসূচি শেষ

সিলেট নগরের কোর্ট পয়েন্টে আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা সরকারের উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের প্রচারপত্র বিলি করেন। ছবি: আনিস মাহমুদ
সিলেট নগরের কোর্ট পয়েন্টে আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা সরকারের উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের প্রচারপত্র বিলি করেন। ছবি: আনিস মাহমুদ

সরকারের ‘উন্নয়নের প্রচারপত্র বিলি’ করতে সিলেটে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের সমাবেশস্থল রেজিস্টারি মাঠের কাছে কোর্ট পয়েন্টে অবস্থান নিয়ে টানা দুই ঘণ্টা মিছিল করেছে আওয়ামী লীগসহ অঙ্গসংগঠন। আজ বুধবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে আওয়ামী লীগ মিছিল ও প্রচারপত্র বিলি করে কোর্ট পয়েন্ট এলাকা ত্যাগ করে।

আজই বেলা দুইটায় রেজিস্টারি মাঠে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের সমাবেশ। এখন সমাবেশস্থলে লোকজন আসছে।

কর্মসূচিতে সিলেট মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি বদরউদ্দিন আহমদ কামরান, মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আসাদউদ্দিন আহমদসহ প্রমুখ নেতা ছিলেন।

সিলেট মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি বদরউদ্দিন আহমদ কামরান বলেন, ‘আওয়ামী লীগ সরকারের ১০ বছর মেয়াদের সকল উন্নয়নের প্রচারপত্র বিলি করতেই আমরা এখানে জড়ো হয়েছি। এটি আমাদের পূর্বনির্ধারিত কর্মসূচি ছিল।’

দলীয় এ কর্মসূচি ঐক্যফ্রন্টের সঙ্গে সাংঘর্ষিক হবে না জানিয়ে মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আসাদউদ্দিন আহমদ বলেন, ঐক্যফ্রন্টের সমাবেশের আমাদের নজর থাকবে। কোনো ধরনের উসকানিমূলক ও বিশৃঙ্খল পরিবেশ সৃষ্টি হলে সিলেটের সর্বস্তরের জনসাধারণকে নিয়ে তা প্রতিহত করা হবে।

মাজার জিয়ারত
সিলেটে ঐক্যফ্রন্টের সমাবেশকে সামনে রেখে আজ বুধবার ভোরে সিলেটে পৌঁছে হজরত শাহজালাল (রহ.) ও শাহপরানের (রহ.) মাজার জিয়ারত করলেন জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের নেতারা।

বুধবার সকাল ছয়টায় হজরত শাহজালালের (রহ.) মাজার জিয়ারত করেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ নেতারা। সেখান থেকে তাঁরা হজরত শাহপরানের (রহ.) মাজারে যান।

জিয়ারতের সময় মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের সঙ্গে ছিলেন দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন, মওদুদ আহমদ, আবদুল মঈন খান, জেএসডি সভাপতি আ স ম আবদুর রব, সাধারণ সম্পাদক আবদুল মালেক রতন, নাগরিক ঐক্যর আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না, সিলেট সিটি করপোরেশনের মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী, সিলেট জেলা বিএনপির সভাপতি আবুল কাহের চৌধুরী প্রমুখ।

দুই মাজার জিয়ারতের সময় দেশ ও জাতির সুখ-সমৃদ্ধি, শান্তি ও কল্যাণ কামনা করে দোয়া ও মোনাজাত করেন তাঁরা। এর আগে নেতারা ভোর পাঁচটার ফ্লাইটে রওনা করে ছয়টায় সিলেট বিমানবন্দর নামেন। সেখান থেকে সরাসরি মাজারে যান। দুই আউলিয়ার মাজার জিয়ারত শেষে নেতারা বর্তমানে হোটেলে বিশ্রাম নিচ্ছেন। বেলা দুইটায় তাঁরা সমাবেশে যোগ দেবেন বলে কথা রয়েছে।

সিলেট নগরের কোর্ট পয়েন্টে আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা প্রচারপত্র বিলি করেন। ছবি: প্রথম আলো
সিলেট নগরের কোর্ট পয়েন্টে আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা প্রচারপত্র বিলি করেন। ছবি: প্রথম আলো


৬৮ জন আটক
সিলেটে ঐক্যফ্রন্টের সমাবেশের আগের গত ২৪ ঘণ্টায় বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের ৬৮ নেতা-কর্মীকে আটক করেছে সিলেট মহানগর পুলিশ। গতকাল মঙ্গলবার (২৩ অক্টোবর) ভোর থেকে আজ বুধবার (২৪ অক্টোবর) ভোররাত পর্যন্ত বিভিন্ন মামলায় এসব নেতা-কর্মীকে আটক করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন সিলেট মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত উপপুলিশ কমিশনার জ্যোতির্ময় সরকার।

এর আগে গতকাল মঙ্গলবার রাতে সিলেট জেলা বিএনপির সভাপতি আবুল কাহের শামীমের সুবাহনীঘাটের বাসা থেকে বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ও সিলেট মহানগর বিএনপির সাবেক আহ্বায়ক শাহরিয়ার হোসেন চৌধুরী এবং সিলেট মহানগর বিএনপির সহসভাপতি ও সিলেট সিটি করপোরেশনের ৪ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর রেজাউল হাসান কয়েস লোদীসহ ছয়জনকে আটক করে পুলিশ। কয়েস লোদীকে রাতেই ছেড়ে দেয় পুলিশ।

সিলেট নগরে ঐক্যফ্রন্টের সমাবেশকে কেন্দ্র করে আইন–শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের তৎপরতা। ছবি: আনিস মাহমুদ
সিলেট নগরে ঐক্যফ্রন্টের সমাবেশকে কেন্দ্র করে আইন–শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের তৎপরতা। ছবি: আনিস মাহমুদ


ঐক্যফ্রন্টের সমাবেশস্থলে লোক সমাগম শুরু
কোর্ট পয়েন্টে আওয়ামী লীগের কর্মসূচি শেষ হওয়ার পর ঐকফ্রন্টের সমাবেশস্থল রেজিস্টারি মাঠে সমাবেশস্থলে মানুষজন আসতে শুরু করেছে। বেলা ১টার পর থেকে বিচ্ছিন্নভাবে মানুষের গন্তব্য সমাবেশের দিকে দেখা গেছে। সেখানে পুলিশ ও র‌্যাবের পাহারা রয়েছে।

এর আগে কর্মসূচি সমন্বয়ের দায়িত্বে থাকা জেলা বিএনপির সভাপতি আবুল কাহের চৌধুরী, জেলার সাধারণ সম্পাদক আলী আহমদ, মহানগরের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক আজমল বখত চৌধুরী সমাবেশস্থলে গিয়ে অবস্থান নেন। নেতাদের দেখে কর্মীরাও সেখানে যাচ্ছেন। ভোরে সিলেট পৌঁছানো বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা আমান উল্লাহ আমান, জয়নাল আবেদিন ফারুক, মোহাম্মদ শাহজাহানও সমাবেশস্থলে আছেন।

আলী আহমদ বলেন, ‘বেলা ২টায় শুরু হবে সমাবেশের কার্যক্রম। এ সময় ড. কামাল হোসেন, মির্জা ফখরুলসহ ঐক্যফ্রন্টের শীর্ষ নেতারা সমাবেশস্থলে পৌঁছাবেন। আওয়ামী লীগ কিংবা পুলিশসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা কোনো ধরনের বাধা না দিলে সমাবেশে বিপুল লোক সমাগম হবে বলে আমরা আশা করছি।’