'ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন' বাংলাদেশের নির্বাচনে নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে: ব্রিটিশ প্রতিমন্ত্রী

মার্ক ফিল্ড।
মার্ক ফিল্ড।

বাংলাদেশে সম্প্রতি পাস হওয়া ‘ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন’ আসন্ন নির্বাচনে নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে বলে মন্তব্য করেছেন যুক্তরাজ্যের বৈদেশিক ও কমনওয়েলথ দপ্তরের প্রতিমন্ত্রী মার্ক ফিল্ড। বাংলাদেশের আসন্ন নির্বাচন এবং ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন নিয়ে দেশটির এক এমপির করা প্রশ্নের লিখিত জবাবে গত বুধবার তিনি ওই মন্তব্য করেন।

মাত্র তিন মাস আগে বাংলাদেশ সফর করে যাওয়া ব্রিটিশ এই রাজনীতিক বলেন, বাংলাদেশে একটি ন্যায়সংগত, অবাধ ও অংশগ্রহণমূলক জাতীয় নির্বাচন দেখতে চায় যুক্তরাজ্য। কিন্তু মতপ্রকাশের স্বাধীনতায় অব্যাহত নিয়ন্ত্রণ আরোপ এই নির্বাচনে নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে।

গত বুধবার তিনি বাংলাদেশ বিষয়ে করা মোট ৭টি প্রশ্নের জবাব দিয়েছেন। বাংলাদেশের আসন্ন নির্বাচন, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন, আটক খ্যাতিমান আলোকচিত্রী শহিদুল আলম এবং মতপ্রকাশের স্বাধীনতাসহ নিরাপদ সড়কের দাবিতে আন্দোলন করা শিক্ষার্থীদের ওপর সরকারি দমন-পিড়ীন প্রসঙ্গে ওই সব প্রশ্ন করেন দেশটির ক্ষমতাসীন কনজারভেটিভ দলের এমপি অ্যান মেইন। অ্যান মেইন ‘কনজারভেটিভ ফ্রেন্ডস অব বাংলাদেশ’–এর প্রেসিডেন্ট। সেই সঙ্গে তিনি ব্রিটিশ সংসদের বাংলাদেশ–বিষয়ক সর্বদলীয় কমিটির সভাপতি।

বাংলাদেশে মতপ্রকাশের স্বাধীনতা প্রসঙ্গে মার্ক ফিল্ড বলেন, বাংলাদেশে মতপ্রকাশের স্বাধীনতায় অব্যাহতভাবে নিয়ন্ত্রণ আরোপের ঘটনায় তিনি গভীরভাবে উদ্বিগ্ন। ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের ব্যাখ্যাগত অস্পষ্টতা এবং এর অপব্যবহারের ঝুঁকিসহ এই আইন নিয়ে বাংলাদেশের সুশীল সমাজ ও গণমাধ্যমগুলোর আতঙ্কের বিষয়টি তুলে ধরেন তিনি।

নির্বাচন প্রসঙ্গে মার্ক ফিল্ড বলেন, যুক্তরাজ্য বাংলাদেশে সুষ্ঠু, অবাধ ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন দেখতে চায়। এ বিষয়টি যুক্তরাজ্য সরকার বারবার পরিষ্কার করে বলেছে। তিনি বলেন, গত ২৯ জুন থেকে ১ জুলাই বাংলাদেশ সফরের সময় পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলমসহ সরকারের শীর্ষ কর্মকর্তা এবং বিরোধী রাজনীতিকদের তিনি কার্যকর সংলাপে বসার আহ্বান জানিয়েছেন। সংলাপের মাধ্যমে নির্বাচনে ইলেকট্রনিক ভোটার মেশিনের ব্যবহার এবং ভোট জালিয়াতি নিয়ে সম্ভাব্য উদ্বেগের সুরাহা হওয়া উচিত বলে তিনি মনে করেন। বাংলাদেশ সফরের সময় আসন্ন নির্বাচন নিয়ে যুক্তরাজ্যের উদ্বেগগুলোর কথাও জানিয়েছেন বলে উল্লেখ করেন ব্রিটিশ এই প্রতিমন্ত্রী।

মার্ক ফিল্ড জানান, যুক্তরাজ্যের ফরেন অ্যান্ড কমনওয়েলথ দপ্তরের মন্ত্রী জেরেমি হান্ট বাংলাদেশে মতপ্রকাশের স্বাধীনতা, আলোকচিত্রী শহিদুল আলম এবং আসন্ন নির্বাচন বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গেও আলোচনা করেছেন। গত ২৪ সেপ্টেম্বর নিউইয়র্কে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের সভায় তাঁদের কথা হয়।

মার্ক ফিল্ড আরও বলেন, বাংলাদেশ এখনো ভঙ্গুর মানবাধিকার পরিস্থিতির কারণে যুক্তরাজ্যের উদ্বেগের শীর্ষে থাকা দেশগুলোর তালিকায় রয়েছে।