শীতের আগেই বাজার ভরা শীতের সবজি

উঠেছে শীতের নতুন সবজি। গতকাল শনিবার কারওয়ান বাজারে।  ছবি: প্রথম আলো
উঠেছে শীতের নতুন সবজি। গতকাল শনিবার কারওয়ান বাজারে। ছবি: প্রথম আলো

অফিস শেষে বাড়ি ফেরার পথে কাঁচাবাজারে চক্কর দিতে এসেছিলেন ব্যাংক কর্মকর্তা ফজলুল করিম। সবজি কিনতে গিয়ে প্রথমেই তাঁর নজরে আসে নতুন আলু। দরদাম করে তিনি ১২০ টাকা দিয়ে কিনলেন এক কেজি নতুন আলু, সঙ্গে ৬০ টাকায় এক কেজি ক্ষীরা।

কারওয়ান বাজার কাঁচাবাজারে গতকাল শনিবার বিকেলে কলাবাগানের বাসিন্দা ফজলুল করিম বলেন, ‘প্রকৃতিতে শীতের আবহ শুরু হয়ে গেছে। এ সময় রুই মাছে ফুলকপি, নতুন আলুর তরকারির স্বাদই আলাদা। সঙ্গে একটু ধনেপাতা হলে কথাই নেই।’ তবে আলুর দাম আরেকটু কম থাকলে ভালো হতো বলে তাঁর মন্তব্য। বাজার ঘুরে দেখা গেল, আবহাওয়ায় শীতের তেমন প্রভাব না পড়লেও বাজার ভরা শীতের সবজিতে। নতুন আলু, ফুলকপি, বাঁধাকপি, ওলকপি, মুলা, শিম, বরবটি, শালগম, লাউ, ক্ষীরা, তরতাজা পালংশাক, সরিষাশাক, পেঁয়াজপাতায় দোকানগুলোর চেহারাই বদলে গেছে।

গৃহিণী তামান্না বেগম বাজার ঘুরে ঘুরে কিনলেন ফুলকপি, বাঁধাকপি আর ওলকপি। তিনি বলেন, ‘এখন আর শীত জাঁকিয়ে বসার জন্য অপেক্ষা করতে হয় না। অনেক আগেই শীতের সবজি বাজারে এসে যায়। এসব সবজির নানা পদ তৈরি করা হয়। আমার ছোট মেয়ের ফুলকপির পাকুড়া খুব পছন্দ। তাই কিনতে এলাম।’  

ক্রেতারা বলছেন, শীতের সুস্বাদু সবজি বাজারে উঠলেও দাম অনেক চড়া। সবজি বিক্রেতারা জানান, তিন সপ্তাহ ধরে ঢাকার বাজারে শীতের সবজি আসছে। বেশির ভাগ সবজি আসছে উত্তরবঙ্গ থেকে। তবে নানান রকম শাক আর ধনেপাতা আসছে প্রধানত সাভার ও হেমায়েতপুর থেকে। তবে দাম এখন চড়া। সবজি ব্যবসায়ী মো. আজাদ বলেন, দাম কমতে আরও মাসখানেক পেরিয়ে যাবে। আগের তুলনায় মানুষের মধ্যে সবজির প্রতি আগ্রহ বেড়েছে। এ জন্য বেচাকেনাও ভালো। শীত যত এগিয়ে আসবে, সবজি বেচাকেনা বাড়বে। এখন তাঁর দোকানে প্রতিদিন গড়ে ৩০ কেজি নতুন আলু বিক্রি হয়।

বিক্রেতারা জানালেন, এখন প্রতিটি ফুলকপির দাম আকারভেদে ৪০-৫০ টাকা আর বাঁধাকপি ২৫-৩০ টাকা। তবে বাঁধাকপির তুলনায় ফুলকপি দ্বিগুণেরও বেশি বিক্রি হয় বলে জানালেন তাঁরা। ফুলকপির চাহিদা বেশি হলেও শিম হলো সবচেয়ে দামি, ১৪০ টাকা কেজি। দাম চড়া হলেও বাজারের ব্যাগে অল্পস্বল্প শিম তুলতে চান ক্রেতারা। চাকরিজীবী মাহবুবা সিদ্দিকী বলেন, ‘শীতের নতুন সবজির মধ্যে শিম অন্যতম মজার। আর স্বামীও শিমের তরকারি খেতে বেশ ভালোবাসেন। তাই দাম হলেও বাজারে দেখামাত্রই কিনে ফেলেছি।’

শীতের শাকের প্রতিও ক্রেতাদের আলাদা আকর্ষণ আছে। গরম ভাতের সঙ্গে শাকভাজি দারুণ জমে যায়।  রুস্তম আলী কারওয়ান বাজারে এক বছর ধরে শাক বিক্রি করছেন। তাঁর শাকের পসরায় আছে লাউ, পুঁই, ডাঁটা, পালং, সরিষা, লাল, বেথুয়া, মেথি, কলাই প্রভৃতি। তিনি জানালেন, প্রতিদিন আট থেকে দশ হাজার টাকার শাক বিক্রি হয়। তবে শীতের সবজির স্বাদ এখন সবাই আস্বাদন করতে পারছেন না চড়া দামের কারণে।