পলাতক মেজর জিয়াসহ ৮ আসামি

ফয়সল আরেফীন দীপন
ফয়সল আরেফীন দীপন

জাগৃতি প্রকাশনীর মালিক ফয়সল আরেফীন দীপন হত্যা মামলায় আনসার আল ইসলামের সামরিক শাখার প্রধান ও বরখাস্ত হওয়া মেজর সৈয়দ জিয়াউল হককে প্রধান আসামি করে আটজনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র প্রস্তুত করেছে পুলিশ। তদন্ত কর্মকর্তা জানিয়েছেন, অনুমোদনের জন্য স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে আবেদন করা হয়েছে। সন্ত্রাসবিরোধী আইনে দায়ের করা এই মামলাটি ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ প্রায় তিন বছর ধরে তদন্ত করছে।

জিয়াউল হক ছাড়া অন্য আসামিরা হলেন খাইরুল ইসলাম ওরফে জামিল (২৪), মো. শেখ আবদুল্লাহ ওরফে জুবায়ের (২৭), মইনুল হাসান শামীম ওরফে সিফাত (২৪), আকরাম হোসেন ওরফে হাসিব (২৮), মো. আবু সিদ্দিক সোহেল ওরফে সাকিব (৩৪), মো. মোজাম্মেল হুসাইন ওরফে সায়মন (২৫) ও মো. আবদুস সবুর ওরফে সামাদ। তাঁদের মধ্যে জিয়া ও আকরাম পলাতক রয়েছেন। বাকি ছয়জন গ্রেপ্তারের পর স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।

পুলিশ সদর দপ্তর এর আগে সৈয়দ জিয়াউল হককে ধরিয়ে দিতে পুরস্কার ঘোষণা করেছিল। জঙ্গি সংগঠনটির প্রধান ও তাত্ত্বিক নেতা মুফতি জসীমউদ্দিন রাহমানী কারাগারে আছেন। রাজধানীর পল্লবীতে ব্লগার আহমেদ রাজীব হায়দার হত্যা মামলায় তাঁর পাঁচ বছরের সাজা হয়েছে।

২০১৫ সালের ৩১ অক্টোবর দুপুরের পর শাহবাগের আজিজ সুপার মার্কেটে জাগৃতি প্রকাশনীর কার্যালয়ে দীপনকে কুপিয়ে হত্যা করে দুর্বৃত্তরা। একই দিন কাছাকাছি সময়ে লালমাটিয়ায় শুদ্ধস্বর প্রকাশনীর কার্যালয়ে ঢুকে এর স্বত্বাধিকারী আহমেদুর রশীদ টুটুল, লেখক সুদীপ কুমার ওরফে রণদীপম বসু ও প্রকৌশলী আবদুর রহমানকে দুর্বৃত্তরা কুপিয়ে ও গুলি করে হত্যার চেষ্টা করে। তদন্ত কর্মকর্তারা বলছেন, দুটি ঘটনাতেই আনসার আল ইসলামের সদস্যরা জড়িত।

দীপনের বাবা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের সাবেক অধ্যাপক আবুল কাসেম ফজলুল হক গতকাল প্রথম আলোকে বলেন, দুদিন আগে চিঠি দিয়ে পুলিশ তাকে অভিযোগপত্র প্রস্তুতের খবরটি জানিয়েছে।

মামলার তদন্তসংশ্লিষ্ট সূত্র বলেছে, দীপনকে হত্যার নির্দেশদাতা, মূল পরিকল্পনা ও নেতৃত্বে ছিলেন সৈয়দ জিয়াউল হক। আর খাইরুল, আবদুস সবুর ও মইনুলকে তিনি হত্যাকাণ্ডের আগে প্রশিক্ষণ দিয়েছিলেন।

আহমেদুর রশীদসহ তিনজনকে হত্যাচেষ্টার মামলায় আনসার আল ইসলামের চারজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে তদন্তসংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো জানিয়েছে। তাঁরা হলেন রশিদুন্নবী ভূঁইয়া টিপু, আবদুস সবুর ওরফে সামাদ ওরফে সুজন ওরফে সাদ, মইনুল হাসান ওরফে শামীম ওরফে সামীর ও সুমন পাটোয়ারি। সবুর, সুমন ও রশিদুন্নবী স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। তাঁদের প্রশিক্ষণদাতা শরিফুল ওরফে মুকুল রানা হামলার সময় ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিলেন। শরিফুল গত বছরের ১৮ জুন রাতে খিলগাঁওয়ের মেরাদিয়ায় ডিবির সঙ্গে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ নিহত হন। তিনি ব্লগার অভিজিৎ রায় হত্যাকাণ্ডে অংশ নিয়েছিলেন।

জানতে চাইলে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের গোয়েন্দা দক্ষিণ বিভাগের সহকারী পুলিশ কমিশনার মো. ফজলুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, অভিযোগপত্র প্রস্তুত করে অনুমোদনের জন্য স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে আবেদন করা হয়েছে।