চট্টগ্রামে মা মেয়ে খুন!

চট্টগ্রামের ডবলমুরিং থানার পাঠানটুলি গায়েবি মসজিদ এলাকার একটি বাসা থেকে মা ও মেয়ের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। দুজনকে শ্বাসরোধে হত্যা করা হয়েছে বলে পুলিশের ধারণা।

আজ মঙ্গলবার ওই বাসা থেকে লাশ দুটি উদ্ধার করে পুলিশ। ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন ডবলমুরিং থানার পরিদর্শক (তদন্ত) জহির হোসেন।

নিহত দুজন হলেন হোসনে আরা (৫০) ও তাঁর মেয়ে পারভীন (১৮)। পারভীন শহরের একটি পোশাকশিল্প কারখানায় কাজ করতেন। এ ঘটনার মূলে পারভীনের স্বামী আবদুল মতিন রয়েছেন বলে সন্দেহ করা হচ্ছে। মতিন পলাতক।

সরেজমিনে দেখা যায়, দোতলা বাড়িটির কক্ষগুলোয় আলাদা ভাড়াটে থাকেন। নিম্ন আয়ের লোকজন সেখানে ভাড়া থাকেন। নিচতলায় পাশাপাশি কয়েকটি কক্ষ। এর দুটি কক্ষ থেকে হোসনে আরা ও পারভীনের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। আজ ভোররাতের কোনো এক সময়ে হত্যার ঘটনা ঘটে থাকতে পারে বলে মনে করছে পুলিশ।

নিহত হোসনে আরার ছেলে সোহেল (২০) দাবি করেন, ভগ্নিপতি মতিন তাঁর মা ও বোনকে হত্যা করে পালিয়েছেন। তাঁর ভাষ্য, স্থানীয় এক বেকারিতে তিনি কাজ করেন। স্ত্রী ও মাকে নিয়ে তিনি এক কক্ষে ভাড়া থাকতেন। স্ত্রী অন্তঃসত্ত্বা হওয়ায় মাস দুয়েক আগে বাবার বাড়ি গেছেন। মা একাই ছিলেন কক্ষে। পাশের কক্ষে ভাড়া থাকছিলেন বোন পারভীন ও তাঁর স্বামী মতিন। দেড় বছর আগে রিকশাচালক মতিনের সঙ্গে পারভীনের বিয়ে হয়। মতিন নির্যাতন করার কারণে তাঁর বোন এখানে চলে আসেন। দেড় মাস আগে মতিন এসে ‘আর মারধর করবেন না’ জানিয়ে এখানে বসবাস শুরু করেন।

সোহেল জানান, গতকাল সোমবার রাতে তিনি কারখানায় ছিলেন। সকাল ১০টার দিকে বাড়ি এসে বিছানার ওপর মাকে অচেতন অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখেন। তিনি চিৎকার শুরু করলে আশপাশ থেকে লোকজন ছুটে আসে। পরে পুলিশে খবর দেওয়া হয়। পুলিশ এসে পাশে পারভীনের কক্ষটি তালাবদ্ধ দেখতে পায়। তালা ভাঙার পর দেখা যায়, বিছানায় পারভীনের লাশ পড়ে আছে।

আশপাশের বাসিন্দারা জানান, গতকাল রাতে পারভীন ও মতিনের মধ্যে প্রচণ্ড বাগ্‌বিতণ্ডা শুনেছেন তাঁরা।

ডবলমুরিং থানার পরিদর্শক (তদন্ত) জহির হোসেন বলেন, মা–মেয়ের গলায় দাগ দেখা গেছে। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা যাচ্ছে, ঘুমের মধ্যে শ্বাসরোধে তাঁদের হত্যা করা হয়েছে। সন্দেহভাজন হিসেবে মতিনকে খুঁজে বের করা হবে বলে তিনি জানান। মা-মেয়ের লাশ চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে।

এর আগে গত শুক্রবার নগরের হালিশহর এলাকায় নালা থেকে সুমি ইসলাম নামের এক নারীর মস্তকবিহীন লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। ঘটনার দুদিন পর সুমি ইসলামের স্বামী জাহিদ হোসেনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। পরে ডবলমুরিং এলাকার একটি কবরস্থান থেকে সুমির বিচ্ছিন্ন মাথা উদ্ধার করা হয়।