প্রযুক্তির আক্রমণ সত্ত্বেও বই টিকে থাকবে: অর্থমন্ত্রী

ফিতা কেটে বাংলাদেশ বইমেলার উদ্বোধন করেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত। ছবি: ভাস্কর মুখার্জি
ফিতা কেটে বাংলাদেশ বইমেলার উদ্বোধন করেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত। ছবি: ভাস্কর মুখার্জি

কলকাতায় ১০ দিনব্যাপী বাংলাদেশ বইমেলা আজ শুক্রবার থেকে শুরু হয়েছে। মেলা শেষ হবে ১১ নভেম্বর। এবারের মেলাও বসেছে কলকাতার রবীন্দ্র সদনের কাছে ঐতিহ্যবাহী মোহরকুঞ্জ প্রাঙ্গণে। এই বইমেলা এবার ৮ বছরে পা দিল। বাংলাদেশে প্রকাশিত বিভিন্ন বই নিয়ে এই একক বইমেলার আয়োজন করা হয়েছে।

প্রধান অতিথি হিসেবে এবারের বইমেলা উদ্বোধন করেন বাংলাদেশের অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত। সম্মানিত অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক শামসুজ্জামান খান ও কলকাতা পৌর করপোরেশনের মেয়র পারিষদ দেবাশীষ কুমার। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন অধ্যাপক রতন সিদ্দিকী এবং পাবলিশার্স ও বুক সেলার্স গিল্ডের সাধারণ সম্পাদক ত্রিদিপ চট্টোপাধ্যায়। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন কলকাতায় নিযুক্ত বাংলাদেশের উপহাইকমিশনার তৌফিক হাসান।

উদ্বোধনের প্রাক্কালে প্রধান অতিথিকে রণপা নৃত্যের মাধ্যমে স্বাগত জানানো হয়। বইমেলার উদ্বোধন করে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত বলেন, ‘আজকের বিশ্বে প্রযুক্তির আক্রমণ সত্ত্বেও বই টিকে আছে। টিকে থাকবে বই। আমি বিশ্বাস করি, বই থাকবে আমাদের চিরদিনের সঙ্গী হয়ে। বইয়ের জগৎ আরও প্রসারিত হবে।’ মন্ত্রী আরও বলেন, ‘কলকাতার মতো আমরা ঢাকায়ও কলকাতার বইয়ের মেলা করার উদ্যোগ নেব।’ মেলা উদ্বোধনের পর প্রধান অতিথি বিভিন্ন বইয়ের বিভিন্ন স্টল ঘুরে দেখেন।

অনুষ্ঠানে অধ্যাপক রতন সিদ্দিকী বাংলাদেশ অভ্যুদয়ের পটভূমি ব্যাখ্যা করে বলেন, এই বইমেলা দুই বাংলার সংস্কৃতি মানসে ঐক্য গড়ে তুলতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।

এবারের বইমেলায় বাংলাদেশের ৬৯টি প্রকাশনা সংস্থা অংশ নিয়েছে। প্রতিদিন এই মেলা চলবে বেলা ২টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত। ছবি: ভাস্কর মুখার্জি
এবারের বইমেলায় বাংলাদেশের ৬৯টি প্রকাশনা সংস্থা অংশ নিয়েছে। প্রতিদিন এই মেলা চলবে বেলা ২টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত। ছবি: ভাস্কর মুখার্জি

যৌথভাবে এই বইমেলার আয়োজন করেছে বাংলাদেশ রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো, কলকাতার বাংলাদেশ উপহাইকমিশন এবং বাংলাদেশ জ্ঞান ও সৃজনশীল প্রকাশক সমিতি। বইমেলায় বাংলাদেশের ৬৯টি প্রকাশনা সংস্থা অংশ নিয়েছে। গত বছর বইমেলায় বাংলাদেশের ৫১টি প্রকাশনা সংস্থা অংশ নিয়েছিল।

বইমেলায় প্রতিদিন থাকছে আলোচনা সভা এবং সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। ১০ দিনব্যাপী আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে যোগ দেবেন দুই দেশের বিশিষ্টজন ও শিল্পীরা। তাঁদের মধ্যে থাকবেন বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি অধ্যাপক আবদুল্লাহ আবু সায়ীদ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক সৈয়দ মঞ্জুরুল ইসলাম, ইতিহাসবিদ মুনতাসির মামুন, কথাসাহিত্যিক মইনুল আহসান সাবের, শিশু সাহিত্যিক আলী ইমাম, কথাসাহিত্যিক ইমদাদুল হক মিলন, কবি কামাল চৌধুরী, কবি তারিক সুজাত, কালি ও কলম সম্পাদক আবুল হাসনাত প্রমুখ। অন্যদিকে পশ্চিমবঙ্গ থেকে আলোচনায় অংশ নেবেন অধ্যাপক পবিত্র সরকার, সাহিত্যিক সমরেশ মজুমদার, অধ্যাপক ইমানুল হক, জাতীয় অধ্যাপক জয়ন্ত কুমার রায়, স্বপন বসু প্রমুখ।

সংগীতানুষ্ঠানে যোগ দেবেন বাংলাদেশের বিশিষ্ট শিল্পী ফাতেমাতুজজোহরা, লিলি ইসলাম, তানজিনা তমা, অনিমা রায়, নাহিদ নাজিয়া প্রমুখ। এ ছাড়া যোগ দেবেন কলকাতার বিশিষ্ট শিল্পীরাও। ৫ নভেম্বর বইমেলায় উদ্‌যাপিত হবে শিশু দিবস। বইমেলায় থাকবে ঐতিহ্যবাহী রণপা নৃত্য।

প্রতিদিন এই মেলা চলবে বেলা ২টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত। তবে শনি ও রোববার মেলা চলবে রাত সাড়ে ৮টা পর্যন্ত।