আলোক শিক্ষালয়ের সংগীতানুষ্ঠানের আয়োজন

আফজালুন্নেসা ফাউন্ডেশনের অঙ্গসংগঠন আলোক শিক্ষালয় সংগীতানুষ্ঠানে আয়োজন করে। কবি সুফিয়া কামাল মিলনায়তন, জাতীয় জাদুঘর, ঢাকা। ছবি: সংগৃহীত
আফজালুন্নেসা ফাউন্ডেশনের অঙ্গসংগঠন আলোক শিক্ষালয় সংগীতানুষ্ঠানে আয়োজন করে। কবি সুফিয়া কামাল মিলনায়তন, জাতীয় জাদুঘর, ঢাকা। ছবি: সংগৃহীত

অস্ট্রেলিয়াপ্রবাসী অধ্যাপক আতিয়া নাসরিন নিজ উদ্যোগে আফজালুন্নেসা ফাউন্ডেশনের অঙ্গসংগঠন আলোক শিক্ষালয়ের জন্য এক সংগীতানুষ্ঠানের আয়োজন করেন। অনুষ্ঠানের প্রথম পর্বে সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের স্কুল আলোক শিক্ষালয়ের শিক্ষার্থীরা সংগীত, নৃত্য ও আবৃত্তি পরিবেশন করে শ্রোতা–দর্শকদের মুগ্ধ করে। দ্বিতীয় পর্বে ছিল আলোচনা ও সংগীতায়োজন।

জাতীয় জাদুঘরের কবি সুফিয়া কামাল মিলনায়তনে গতকাল শুক্রবার এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।

অনুষ্ঠানে সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে সাংবাদিক অজয় দাশগুপ্ত বলেন, তিনি এক দিন আলোক বিদ্যালয়ে গিয়েছিলেন। সেখানে তিনি আলোকের শিক্ষার্থীদের উপস্থাপনায় সংগীত-নৃত্য-আবৃত্তিসহ নানা কর্মকাণ্ড দেখেছেন, তাতে তাঁর উপলব্ধি হয়েছে, স্কুলের স্বল্প পরিসরে যেভাবে তারা শিক্ষার বাইরেও নানা রকম শিক্ষার সুযোগ পাচ্ছে, তা কোনোভাবেই তাদের সুবিধাবঞ্চিত বলা যায় না। তিনি বলেন, শিক্ষা আজ শহর ছাড়িয়ে অজপাড়াগাঁয়েও বিস্তৃত হয়েছে। তিনি শ্রদ্ধার সঙ্গে বলেন, আলোক যারা পরিচালনা করছেন, তাঁরা একটি বিশাল দায়িত্ব পালন করছেন। আজ থেকে তিনিও সেই দলে থাকবেন বলে আশা প্রকাশ করেন।

আয়োজক অধ্যাপক আতিয়া নাসরিন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ছিলেন। দীর্ঘ ৪৫ বছর যাবৎ তিনি অস্ট্রেলিয়াপ্রবাসী এবং এখনো সেখানে শিক্ষকতার পাশাপাশি সমাজসেবামূলক কর্মকাণ্ড পরিচালনা করেন। তিনি বলেন, সমাজসেবার সূত্র ধরেই তিনি তাঁর বন্ধু ডা. নীনা হোমায়রা নাজনীনের মাধ্যমে আলোকের সঙ্গে এবং আলোকের পরিচালক অধ্যাপক রাশেদা নাসরীনের সঙ্গে সম্পৃক্ত হয়েছেন। রাশেদা নাসরীনের কর্মকাণ্ডে মুগ্ধ হয়ে আলোকের জন্য একটা কিছু করার উদ্যোগ নিয়েছেন।

আলোকের সঙ্গে তাঁর দীর্ঘদিনের সম্পৃক্ততার কথা গর্বভরে উচ্চারণ করেন অধ্যাপক কাজি মদিনা। তিনি বলেন, আলোকের শিশুরা সুবিধাবঞ্চিত নয়—এ কথা সার্বিকভাবে সত্য নয়। তারা আলোকে নানা রকম শিক্ষার সুযোগ পাচ্ছে তা সত্য, তবে জীবনের অন্যান্য মৌলিক সুবিধা থেকে তারা একেবারেই বঞ্চিত। কেবল শিক্ষার্থীরা নয়, আলোকের অনেক শিক্ষকও নানা প্রতিকূলতার ভেতর দিয়ে নিজেরা শিক্ষিত হয়েছেন, পাশাপাশি এই না–পারার দলকে পারার দলে আনার যে অক্লান্ত পরিশ্রম করেছেন, তিনি তা কাছে থেকে দেখে রীতিমতো মুগ্ধ হয়েছেন। এ প্রসঙ্গে তিনি শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের এ পর্যায়ে আনার নেপথ্যের কৌশলী পরিচালক রাশেদা নাসরীনের আন্তরিক প্রচেষ্টা আর অক্লান্ত পরিশ্রমের কথা উল্লেখ করেন। আলোকের শুভার্থী হিসেবে তিনি সব সময় আলোকের পাশে আছেন, থাকবেন বলেও তিনি প্রতিশ্রুতি দেন।

অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন আফজালুন্নেসা ফাউন্ডেশনের উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্য বাচিক শিল্পী অধ্যাপক কাজী মদিনা, সভাপতি ডা. কে এম ইকবাল, নির্বাহী পরিচালক অধ্যাপক ড. মোফাখারুল ইসলাম, সদস্যসচিব ও আলোক পরিচালক অধ্যাপক রাশেদা নাসরীন, জীবন সদস্য ডা. নীনা হোমায়রা নাজনীন, তাহমিনা বেগম ও সাবিকুন্নাহার তাজি, আলোক পরিচালনা পরিষদের সদস্য অধ্যাপক হোসনে আরা আলম, অধ্যাপক মাহফুজা বেগম, অধ্যাপক রওনাক আরা বেগম, মাহফুজা হক নীলা, সহকারী অধ্যাপক ফেরদৌসী খান, জাতীয় জাদুঘরের পরিচালক ড. নীরু শামসুন্নাহার, স্থপতি আনিসুল ইকবাল, টেলিভিশন নাট্যশিল্পী সাঈদা ইসলাম প্রমুখ।

অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিল আলোকের শিশুশিল্পী দল ও নিবেদিত শিক্ষকেরা। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন সহযোগী অধ্যাপক ঝর্না রহমান। প্রেস বিঞ্জপ্তি।