ইসির দিকে ঐক্যফ্রন্ট নেতার তর্জনী অমার্জনীয়

এইচ টি ইমাম
এইচ টি ইমাম

জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের সঙ্গে থাকা অনিবন্ধিত একটি দলের নেতা নির্বাচন কমিশনের (ইসি) সঙ্গে বৈঠকে অমার্জিত ও কুরুচিপূর্ণ বক্তব্য দিয়েছেন বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রীর রাজনৈতিক বিষয়ক উপদেষ্টা এইচ টি ইমাম। তিনি বলেন, ওই নেতা সেদিন তর্জনী তুলে ইসিকে ভয়ভীতি দেখিয়েছেন, যা অমার্জনীয়। জনগণ ভোটের মাধ্যমে এর জবাব দেবে।

আজ বুধবার বিকেলে ইসির সঙ্গে এইচ টি ইমামের নেতৃত্বে সংলাপে বসে আওয়ামী লীগের ১৭ সদস্যের একটি প্রতিনিধিদল। ওই সংলাপ শেষে আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে ইসি কার্যালয়ে ব্রিফ করা হয়। এই ব্রিফিংয়ে এইচ টি ইমাম নির্বাচনের তফসিল ও ভোটের বিভিন্ন বিষয় নিয়ে কথা বলেন।

এইচ টি ইমাম বলেন, অতি সম্প্রতি ইসি কয়েকটি দলের সঙ্গে সংলাপ করেছে। এসব সংলাপ ফলপ্রসূ হয়েছে। কিন্তু জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট এর ব্যতিক্রম। তাদের সঙ্গে থাকা অনিবন্ধিত একটি দলের নেতা ইসির সঙ্গে সংলাপে অমার্জিত কুরুচিপূর্ণ বক্তব্য দিয়েছেন। তর্জনী তুলে ভয়ভীতি দেখিয়েছেন। এ ধরনের আচরণ অমার্জনীয়। দেশের মানুষ তা সহ্য করবে না। জনগণ এর জবাব দেবে ভোটের মাধ্যমে।

এইচ টি ইমাম বলেন, ‘আমরা যেহেতু সরকারের সঙ্গে আছি, তাই আমাদের দায়দায়িত্ব অনেক বেশি। আওয়ামী লীগের একটি নিজস্ব নির্বাচনী সেল আছে। সেই গবেষণা সেলের কাজ হলো নির্বাচন নিয়ে গবেষণা করা। সে হিসেবে নির্বাচন কীভাবে ভালো করা যায়, সেই বিষয়টা আমরা ইসির কাছে তুলে ধরেছি। তফসিল বা নির্বাচনের তারিখ ইসির যেভাবে সিদ্ধান্ত সেভাবেই থাকবে।’

এইচ টি ইমাম বলেন, ‘আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে নারীদের ভোট নেওয়ার জন্য পর্যাপ্ত বুথ রাখার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। আন্তর্জাতিক ও দেশীয় পর্যবেক্ষকদের নিবন্ধন আছে কি না, সে দিকে লক্ষ রাখতে বলা হয়েছে। পর্যটক ভিসা নিয়ে কেউ বলবে “আমি পর্যবেক্ষক” তা হবে না। সিইসি জানিয়েছেন, নির্বাচনে সীমিত আকারে ইভিএম ব্যবহার করা হবে। আওয়ামী লীগের প্রস্তাব হলো, প্রার্থীর পোলিং এজেন্টদের ইভিএম সম্পর্কে প্রশিক্ষণ দেওয়া। কোনো বেসরকারি ব্যাংক বা এনজিও থেকে যেন ভোট গ্রহণ কর্মকর্তা নিয়োগ না দেওয়া হয়।’

সেনাবাহিনী মোতায়েনের বিষয়ে ইমাম বলেন, আওয়ামী লীগ আগেও এর বিরুদ্ধে ছিল না, এখনো নেই। সেনা মোতায়েন হবে আইন অনুযায়ী। ফৌজদারি কার্যবিধি—সিআরপিসি অনুযায়ী। তারা স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে নিয়োজিত থাকবে। সব দলের অংশগ্রহণে নির্বাচন হবে, আওয়ামী লীগের এটাই প্রত্যাশা। ঐক্যফ্রন্টের কর্মসূচি প্রসঙ্গে ইমাম বলেন, তফসিল ঘিরে কোনো সহিংসতা গ্রহণযোগ্য হবে না।

আওয়ামী লীগের সংলাপ প্রসঙ্গে ইসি সচিব হেলালুদ্দীন আহমদ সাংবাদিকদের বলেন, সকালে জাতীয় পার্টির (জাপা) সঙ্গে ইসি সংলাপ করেছে। জাপা বলেছে নির্বাচনের তফসিল যেন পেছানো না হয়। বিকেলে আওয়ামী লীগও একই পরামর্শ দিয়েছে। তারা বলেছে, ইসি যেন সংবিধান ও আইন মেনে নির্বাচন করে। আওয়ামী লীগ থেকে আরও বলা হয়েছে, তফসিলের আগে যেন আর কোনো দলের সঙ্গে সংলাপ না হয়। তবে কোনো দলের সঙ্গে সংলাপ হবে কি হবে না, সেটা ইসিই ঠিক করবে।

প্রসঙ্গত, গত সোমবার ইসির সঙ্গে তফসিল পেছানোর বিষয়ে কথা বলে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের একটি প্রতিনিধিদল। সেখানে নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্নার সঙ্গে ইসির উত্তপ্ত বাক্যবিনিময় হয় বলে খবর প্রকাশিত হয়। রাজনৈতিক দল হিসেবে নাগরিক ঐক্যের নির্বাচন কমিশনে নিবন্ধন নেই।