ঢাবিতে ভর্তির সুযোগ পাচ্ছেন সেই হৃদয়

২১ সেপ্টেম্বর হৃদয় সরকারকে কোলে করে পরীক্ষার হলে নিয়ে যান মা সীমা রানি সরকার।
২১ সেপ্টেম্বর হৃদয় সরকারকে কোলে করে পরীক্ষার হলে নিয়ে যান মা সীমা রানি সরকার।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধী কোটার বিধিমালায় সংস্কার এনে শারীরিক প্রতিবন্ধীদেরও যুক্ত করেছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। ফলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে পারবেন শারীরিক প্রতিবন্ধী হৃদয় সরকার৷

আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিনস কমিটির সভায় প্রতিবন্ধী কোটা সংস্কারের বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয়৷

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক মো. আখতারুজ্জামান প্রথম আলোকে বলেন, ‘যুগের চাহিদা মেটানো ও অন্তর্ভুক্তিমূলক সমাজ গঠনের জন্য আমরা আমাদের প্রতিবন্ধী কোটার বিধিমালায় সংস্কার এনেছি৷ আগে বিশ্ববিদ্যালয়ে শুধু দৃষ্টি, শ্রবণ আর বাকপ্রতিবন্ধীদের জন্য প্রতিবন্ধী কোটা প্রযোজ্য ছিল৷ এর সঙ্গে আমরা শারীরিক প্রতিবন্ধীদেরও যুক্ত করেছি, যাতে ফিজিক্যাল চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি ছেলে-মেয়েরা মেধার স্বাক্ষর রাখলে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ পায়৷ অবস্থাদৃষ্টে বাস্তবতার নিরিখে এটি করা হয়েছে৷ ’

গত ২১ সেপ্টেম্বর ‘খ’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষার দিন বিজয় একাত্তর হল থেকে পরীক্ষার হলে হৃদয়কে কোলে করে নিয়ে যান তার মা৷ এ ছবিটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে ব্যাপক সাড়া পড়ে। ভর্তি পরীক্ষায় হৃদয় সরকার বাংলা অংশে ৯ দশমিক ৩০, ইংরেজি অংশে ১৪ দশমিক ৪০ ও সাধারণ জ্ঞান অংশে ২৭ দশমিক ৯০ নম্বরসহ মোট ১২০ দশমিক ৯৬ নম্বর পেয়ে ৩ হাজার ৭৪০ তম হন ৷ প্রতিবন্ধী কোটায় ভর্তির আবেদন করেছিলেন হৃদয়৷ কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিবন্ধী কোটার বিধিমালা অনুযায়ী শুধু দৃষ্টি, শ্রবণ ও বাক-প্রতিবন্ধীদের জন্য প্রতিবন্ধী কোটা প্রযোজ্য ছিল৷ ফলে হৃদয় সরকারের ভর্তি নিয়ে তৈরি হয় অনিশ্চয়তা৷

এ নিয়ে গত মঙ্গলবার হৃদয়ের হাহাকার  শিরোনামে প্রথম আলো অনলাইনে একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। আজ প্রতিবন্ধী কোটায় শারীরিক প্রতিবন্ধীদের যুক্ত করার সংবাদ শুনে তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন হৃদয় সরকারের মা সীমা রানি সরকার। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘খুব খুশির একটা খবর শুনলাম৷ মরা গাছে ফুল ফুটলে যেমন লাগে, তেমনই লাগছে৷ স্বপ্ন ছিল আমার ছেলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়বে৷ সেই স্বপ্ন পূরণ হতে চলেছে৷ এই অনুভূতি প্রকাশ করার ভাষা নেই৷’