মুক্তাবুরের মমতাজুড়ে অটিজম শিশু

নিজের প্রতিষ্ঠানে মো. মুক্তাবুর রহমান। ছবি: সংগৃহীত
নিজের প্রতিষ্ঠানে মো. মুক্তাবুর রহমান। ছবি: সংগৃহীত

মো. মুক্তাবুর রহমান ২৮ বছর ধরে অটিজম আক্রান্ত শিশুদের নিয়ে কাজ করছেন। তিনি ২০১০ সালে প্রতিষ্ঠা করেন একটি স্কুল। রাজধানীর মোহাম্মদপুরের নূরজাহান রোডে অটিজম মেধা বিকাশ কেন্দ্র নামের স্কুলটি অবস্থিত। এই স্কুলে এখন ৩০ জন প্রতিবন্ধী শিশু রয়েছে।

স্কুলটিতে বাইরে থেকে কোনো টাকাপয়সা আসে না। সরকারি সহযোগিতাও পায় না। শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে শ্রেণিভেদে টাকা নিয়ে স্কুল চালানো হয়। এ ছাড়া মুক্তাবুর নিজেও অর্থায়ন করেন।

স্কুলে ৫ জন নারী শিক্ষক আছেন। স্কুলের প্রতিটি ক্লাসরুম সাজানো-গোছানো। এখানে সপ্তাহে ছয় দিন ক্লাস হয়। শিশুদের নানা বিষয়ে পরিকল্পনা করে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। এর মধ্যে রয়েছে বাথরুম ব্যবহার, দাঁত ব্রাশ, টাকাপয়সা চেনা ইত্যাদি।

স্কুলে সপ্তাহে তিন দিন গানের ক্লাস হয়। শিশুদের জন্মদিন পালন করা হয়। শিশুপার্কসহ বিভিন্ন স্থানে শিশুদের ঘুরতে নিয়ে যাওয়া হয়। অভিভাবকদের নিয়ে তাঁরা তিন মাস পরপর মতবিনিময় করেন।

শিশুদের সঙ্গে মো. মুক্তাবুর রহমান। ছবি: সংগৃহীত
শিশুদের সঙ্গে মো. মুক্তাবুর রহমান। ছবি: সংগৃহীত

অটিজম আক্রান্ত শিশুদের থাকা-খাওয়ার সুবিধা দেওয়ার পরিকল্পনা আছে মুক্তাবুরের। তিনি এমন একটি মনোরম আবাসিক পরিবেশ গড়তে চান, যাতে এই শিশুরা সুস্থ-সুন্দরভাবে গড়ে উঠতে পারে।

মুক্তাবুরের প্রতিষ্ঠানে ফিজিওথেরাপির ব্যবস্থা আছে। এ জন্য আছে পৃথক কক্ষ ও সরঞ্জাম। এখানকার প্রশিক্ষকেরা প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত।

মুক্তাবুর জানালেন, তাঁরা শিশুদের এমনভাবে প্রশিক্ষণ দেন, যাতে তারা সুন্দরভাবে জীবন কাটাতে পারে। প্রতিকূলতা জয় করতে পারে।

মুক্তাবুর বলেন, তিনি যতটা পারেন, তাঁর প্রতিষ্ঠানের শিশুদের সময় দেন। এই শিশুদের জীবন সহজ করতে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন তিনি। আমৃত্যু এই শিশুদের নিয়ে কাজ করতে চান তিনি।

মুক্তাবুর বলেন, অটিজম আক্রান্ত শিশুরা সমাজের বোঝা নয়। সবার সহযোগিতা পেলে এই শিশুরা স্বাভাবিকভাবে জীবন যাপন করতে পারে। যথাযথ প্রশিক্ষণ পেলে তাদের জীবন আরও সুন্দর হয়ে উঠতে পারে। এ লক্ষ্যেই মুক্তাবুর কাজ করে যাচ্ছেন।

নাজিয়া হোসেন: দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী সাংবাদিক