রাজধানীতে নির্বাচনী সহিংসতায় প্রাণ গেল ২ জনের

রাজধানীর মোহাম্মদপুরের আদাবর এলাকায় আওয়ামী লীগের দুই গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষের সময় পিকআপের ধাক্কায় দুই তরুণ নিহত হয়েছেন। আজ শনিবার দুপুরে সংঘর্ষের এই ঘটনা ঘটে। গত বৃহস্পতিবার একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর এটাই নির্বাচনী সহিংসতায় বড় ধরনের প্রাণহানির প্রথম ঘটনা। 


নিহত দুই তরুণ হলেন আরিফ ও সুজন। তাঁদের বয়স ১৮ থেকে ২০ বছরের মধ্যে। সুজন নির্মাণশ্রমিক ছিলেন।

আদাবর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কাওসার আহমেদ দুই তরুণের মৃত্যুর তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, পিকআপের ধাক্কায় আহত অবস্থায় সুজনকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ও আরিফকে শ্যামলীর সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসকেরা তাঁদের মৃত ঘোষণা করেন।
ওসি জানান, ঘটনাটি মোহাম্মদপুর থানা এলাকায় ঘটেছে।

পুলিশের ভাষ্য, নিহত দুই তরুণ আওয়ামী লীগের দুই গ্রুপের মিছিলে ছিলেন। তবে তাঁরা কোন পক্ষের সমর্থনে ছিলেন, তা পুলিশ জানাতে পারেনি।
অন্যদিকে, নিহত দুই তরুণের এক বন্ধু দাবি করেছেন, তাঁরা বেড়ানোর উদ্দেশে বেরিয়েছিলেন। পথে সংঘর্ষের মধ্যে পড়ে যান।

জানা গেছে, ঢাকা ১৩ আসনের সাংসদ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর কবির নানক ও ওই আসনে মনোনয়নপ্রত্যাশী মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সাদেক খানের কর্মী–সমর্থকদের মধ্যে এই সংঘাতের ঘটনা ঘটে। আজ সকাল সাড়ে নয়টার দিকে আওয়ামী লীগের মনোনয়নপ্রত্যাশী সাদেক খানের মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করার জন্য তাঁর কর্মী সমর্থকদের একটি গাড়িবহর–মিছিল মোহাম্মদপুর এলাকার সুনিবিড় হাউজিংয়ের সামনে এলে নানকের সমর্থকেরা বাধা দেন। তখন দুই পক্ষের মধ্যে পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার ঘটনা ঘটে।


নাম প্রকাশ না করার শর্তে পুলিশের মোহাম্মদপুর বিভাগের এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলেন, ওই দুই তরুণ মিছিলে অংশ নিয়েছিলেন।

আরিফ ও সুজনের বন্ধু নুরুল আমিন প্রথম আলোর কাছে দাবি করেন, তাঁরা মিছিলে ছিলেন না। তাঁরা কয়েকজন বন্ধু পিকআপে করে বেড়াতে যাচ্ছিলেন। সে সময় মোহাম্মদপুরে বেড়িবাঁধের পাশে লোহার গেটসংলগ্ন সড়কে দুই গ্রুপের ইটপাটকেল নিক্ষেপের মধ্যে পড়ে যান তাঁরা। ওই সময় ইটপাটকেল থেকে বাঁচতে তাঁরা পিকআপ থেকে লাফিয়ে নেমে পড়েন। তখন তড়িঘড়ি করে চালক পিকআপ টান দিলে পিকআপের ধাক্কায় আরিফ ও সুজন আহত হন। হাসপাতালে নেওয়ার পর তাঁরা মারা যান।