তফসিলেই আইন লঙ্ঘন করেছে ইসি?

জাতীয় সংসদ নির্বাচন পরিচালনার দায়িত্ব নির্বাচন কমিশনের (ইসি)। দেশের প্রধান বিরোধী দল এই নির্বাচনে অংশ নেবে কি না, সেই চ্যালেঞ্জ সামনে রেখেই একাদশ সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করেছে সাংবিধানিক এই প্রতিষ্ঠানটি। এই তফসিলেই আইন লঙ্ঘন করেছে ইসি।

ঘোষিত তফসিলেই ইসি আগামী দিনের আইনপ্রণেতাদের বেআইনি সুযোগ দিয়ে দিয়েছে। নির্বাচনী আইন অনুযায়ী, ভোট গ্রহণের দিন থেকে ২১ দিনের আগে প্রচারকাজ শুরু করা যাবে না। কিন্তু এবারের তফসিলে সম্ভাব্য প্রার্থীদের ভোট গ্রহণের দিনের ২৩ দিন আগে থেকে প্রচারকাজ শুরুর সুযোগ দেওয়া হয়েছে। তবে ইসি বলছে, তারা যেভাবে সিদ্ধান্ত দিয়েছে, সেভাবেই হবে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে সাবেক নির্বাচন কমিশনার এম সাখাওয়াত হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, এ-সংক্রান্ত আইনকে ভিন্নভাবে ব্যাখ্যার সুযোগ নেই। ইসিকে অবশ্যই আইন ও বিধি মেনে কাজ করতে হবে। ভোট গ্রহণের দিন থেকে ২১ দিনের আগে কোনোভাবেই প্রচার শুরু করা যাবে না। কিন্তু তফসিল অনুযায়ী সময় দেওয়া হয়েছে ২৩ দিন।

ইসি ৮ নভেম্বর একাদশ সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করেছে। তফসিল অনুযায়ী মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার শেষ দিন ১৯ নভেম্বর। মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের শেষ দিন ২৯ নভেম্বর। ভোট গ্রহণ হবে ২৩ ডিসেম্বর।

নির্বাচনী আচরণবিধির ১২ ধারায় বলা আছে, কোনো রাজনৈতিক দল, প্রার্থী বা প্রার্থীর পক্ষে ভোট গ্রহণের জন্য নির্ধারিত দিনের ২১ দিনের আগে প্রচারকাজ শুরু করা যাবে না।

আইনের এই ধারাটি বিশ্লেষণ করলে দেখা যায়, চূড়ান্ত প্রার্থীরা প্রতীক বরাদ্দ পাবেন ৩০ নভেম্বর। সাধারণত নির্বাচনে প্রতীক বরাদ্দের পরপরই রাজনৈতিক দল, প্রার্থী ও তাঁদের কর্মী-সমর্থকেরা প্রচারে নেমে যান। আর এবারও যদি তা-ই হয়, তবে প্রার্থীরা প্রচারের জন্য দুই দিন বেশি সময় পাবেন, যা আইনসম্মত নয়।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে ইসি সচিবালয়ের সচিব হেলালুদ্দীন আহমদ প্রথম আলোকে বলেন, কমিশনের ক্ষমতা অগাধ। তাঁরা যেভাবে সিদ্ধান্ত দিয়েছেন, সেভাবেই হবে। প্রতীক পাওয়ার পর থেকে প্রচার শুরু করা যাবে।

কিন্তু এম সাখাওয়াত বলেন, নির্বাচনে ইসি যদি আইন না মানে, তবে অন্যরা কেন আইন মেনে চলবে। ২১ দিনের বেশি সময় যদি দিতেই হয় সে ক্ষেত্রে ইসি বিধি সংশোধন করে নিতে পারে। এ বিষয়ে তাদের ক্ষমতা নিরঙ্কুশ। কিন্তু ২৩ দিন দেওয়ার কোনো সুযোগ নেই।