ঢাকায় অষ্টম শ্রেণির ছাত্রকে হত্যার দায়ে শিক্ষকের মৃত্যুদণ্ড

ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত আসামি হলেন সবুজ চন্দ্র সূত্রধর। ছবি: আসাদুজ্জামান
ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত আসামি হলেন সবুজ চন্দ্র সূত্রধর। ছবি: আসাদুজ্জামান

ঢাকায় ছাত্রকে খুন করার দায়ে এক শিক্ষককে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত। ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল-৪-এর বিচারক আবদুর রহমান সরদার আজ রোববার এই রায় দেন।

নিহত ছাত্রের নাম সজল চন্দ্র মজুমদার (১৪)। সে কাফরুল উচ্চবিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণির ছাত্র ছিল। আর ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত আসামি হলেন সবুজ চন্দ্র সূত্রধর। কাফরুল এলাকায় একটি কোচিং সেন্টার পরিচালনা করতেন তিনি। রায় ঘোষণার সময় আসামি সবুজকে কারাগার থেকে আদালতে হাজির করা হয়।

২০১৩ সালের ২৯ আগস্ট রাজধানীর ক্যান্টনমেন্ট এলাকায় সজলের লাশ পাওয়া যায়। এর আগের দিন সজল বাসা থেকে বের হয়।

মামলার কাগজপত্র বলছে, ইংরেজি পড়ার জন্য সজল আসামি সবুজের কোচিং সেন্টারে ভর্তি হয়। কোচিং সেন্টারের নাম ফ্যান্টাসি এডুকেশন কেয়ার কোচিং। ভর্তি হওয়ার পর মাত্র আট থেকে দশ দিন সে কোচিংয়ে ক্লাস করতে যায়।

সজলকে হত্যার কথা স্বীকার করে সবুজ চন্দ্র সূত্রধর আদালতকে বলেন, তাঁর মায়ের দুটি কিডনি নষ্ট হয়ে যায়। ছোট বোনের বিয়ে দেওয়ার জন্য অনেক ধারদেনা করেন। টাকার তাঁর খুব প্রয়োজন ছিল। ঘটনার দিন সজলের সঙ্গে বাসার নিচে দেখা হয়। সজল তখন শিক্ষক সবুজের বাসায় যেতে চায়। বাসায় যাওয়ার পর সজল সবুজের কাছে কিছু খেতে চায়। সজল তখন ঘরের বাইরে গিয়ে এক বোতল কোমলপানীয় কেনে। ওষুধের দোকান থেকে ঘুমের ওষুধ কেনে। ঘুমের ওষুধ কোমল পানীয়ের সঙ্গে মিশিয়ে সজলকে পান করতে দেয়।

১৬৪ ধারার স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে শিক্ষক সবুজ বলেন, কোমল পানীয় পান করার পর সজল বেঘোরে বাসায় ঘুমাতে থাকে। সবুজ তখন বাসার সামনের একটি ফ্লেক্সিলোডের দোকান থেকে সিম কেনেন। এরপর সেই সিম মোবাইলে ভরে সজলের বাবাকে ফোন দিয়ে মুক্তিপণ চান। না দেওয়ায় পরে সজলকে বালিশ চাপা দিয়ে হত্যা করে লাশ বস্তায় ভরে ফেলে দিয়ে ফেনীতে চলে যান। সেখান থেকে পুলিশ সবুজকে গ্রেপ্তার করে নিয়ে আসে।

এ ঘটনায় সজলের বাবা শ্যামল চন্দ্র বাদী হয়ে কাফরুল থানায় মামলা করেন। মামলা তদন্ত করে পুলিশ সবুজ চন্দ্র সূত্রধরের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র জমা দেয়। ২০১৫ সালের ২৬ নভেম্বর আসামির বিরুদ্ধে আদালত অভিযোগ গঠন করেন। ১৪ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ শেষে রায় ঘোষণা করেন আদালত।