জামায়াত ৬১ আসন থেকে মনোনয়ন ফরম তুলবে

>

• জামায়াত ইতিমধ্যে নির্বাচন কমিশনের নিবন্ধন হারিয়েছে
• নেতারা স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করছেন
• জামায়াতকে ২০-২৫টি আসন দিতে পারে বিএনপি
• সমঝোতা হলে জামায়াত ধানের শীষে নির্বাচন করবে

জাতীয় সংসদের ৬১টি আসনে মনোনয়ন ফরম তুলবে জামায়াতে ইসলামী। ইতিমধ্যে দলটির সম্ভাব্য প্রার্থীরা রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয় থেকে মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ শুরু করেছেন। গতকাল মঙ্গলবার জামায়াতের কেন্দ্রীয় সেক্রেটারি জেনারেল শফিকুর রহমান মনোনয়ন ফরম নিয়েছেন।

স্বাধীনতাবিরোধী দল জামায়াতে ইসলামী ইতিমধ্যে রাজনৈতিক দল হিসেবে নির্বাচন কমিশনের নিবন্ধন হারিয়েছে। এ অবস্থায় দলের নেতারা স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করছেন বলে দলটির দায়িত্বশীল সূত্র জানায়।

ঢাকা-১৫ (মিরপুর-কাফরুল) আসনে জামায়াতের সেক্রেটারি শফিকুর রহমানের জন্য মনোনয়ন ফরম কেনা হয়েছে। গতকাল বিকেলে ঢাকা জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয় থেকে তাঁর পক্ষে মনোনয়ন নেন জামায়াতের ঢাকা মহানগর উত্তরের সহকারী সেক্রেটারি লস্কর মোহাম্মদ তসলিমসহ কয়েকজন নেতা।

অবশ্য অনেক আগে থেকে শোনা যাচ্ছিল শফিকুর রহমান নিজ এলাকা মৌলভীবাজার-২ আসনের বদলে সিলেট সদর আসনে প্রার্থী হতে আগ্রহী। এখন ঢাকা-১৫ আসন থেকে কেন মনোনয়ন ফরম নিলেন, এ বিষয়ে দলীয় একটি মাধ্যমে শফিকুর রহমানের সঙ্গে কথা বলার চেষ্টা করে পাওয়া যায়নি। তবে বক্তব্য চেয়ে প্রশ্ন পাঠালে তাঁর পক্ষে লিখিত জবাব দেন দলের কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদের সদস্য মুহাম্মদ সেলিম উদ্দিন। তিনি বলেন, সংগঠনের কেন্দ্রীয় কমিটির পক্ষ থেকে শফিকুর রহমানকে এ আসনে প্রার্থী হতে অনুরোধ করা হয়েছে। শফিকুর রহমান জামায়েতের পক্ষ থেকে জোটের সঙ্গে লিয়াজোঁ কমিটির প্রধান, তাই দল ও জোটের মধ্যে সমন্বয় রক্ষার জন্য তাঁর ঢাকায় অবস্থান প্রয়োজন।

২০০৮ সালের নির্বাচনে ঢাকা-১৫ আসন থেকে বিএনপির প্রার্থী ছিলেন বিশিষ্ট মুক্তিযোদ্ধা প্রয়াত হামিদুল্লাহ খান। তিনি আওয়ামী লীগের প্রার্থী কামাল আহমেদ মজুমদারের কাছে পরাজিত হন।

প্রথম আলোর প্রতিনিধিরা জানান, পাবনা-১ আসন থেকে জামায়াতের সাবেক আমির (যুদ্ধাপরাধের দায়ে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত) মতিউর রহমান নিজামী দুবার সাংসদ হয়েছিলেন। তাঁর ছেলে নাজিব মোমেনকে প্রার্থী করা হবে বলে প্রচার ছিল। কিন্তু গতকাল পাবনা-১ (সাঁথিয়া ও বেড়ার একাংশ) আসনের জন্য মনোনয়ন ফরম নেন জামায়াতের নেতা আবদুল বাসেত। গতকাল জয়পুরহাট-১ (সদর ও পাঁচবিবি) আসনে দলটির ফজলুর রহমান মনোনয়ন ফরম নিয়েছেন।

গত রোববার চট্টগ্রাম-১০ (ডবলমুরিং) আসন থেকে জামায়াতের শাহজাহান চৌধুরী ও চট্টগ্রাম-১৫ আসন (সাতকানিয়া) থেকে আ ন ম শামসুল ইসলাম মনোনয়ন ফরম নেন।

জানা গেছে, বিএনপির সঙ্গে আসন সমঝোতা না হওয়ায় জামায়াতের নেতারা স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয় থেকে মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করছেন। দর-কষাকষির কৌশল হিসেবে ৬১টি আসনে তারা মনোনয়ন ফরম তুলবে।

তবে বিএনপির দায়িত্বশীল একটি সূত্র জানায়, সমঝোতা হলে এবার জামায়াতকে ২০–২৫টি আসন ছাড় দেওয়া হতে পারে। ২০০৮ সালের নির্বাচনে তাদের ৩৫টি আসন দেওয়া হয়েছিল।

এদিকে বিএনপি নির্বাচন কমিশনে পাঠানো এক চিঠিতে ২০-দলীয় জোটের শরিক আটটি নিবন্ধিত দলকে ‘ধানের শীষ’ প্রতীক বরাদ্দ দিতে বলেছে। বিএনপির মহাসচিব এই চিঠি দেন। চিঠিতে বলা হয়, মনোনয়ন চূড়ান্ত করার সময়সীমার মধ্যে সংশ্লিষ্ট নির্বাচনী আসনে জোটগত মনোনীত প্রার্থীকে প্রতীক বরাদ্দের জন্য লিখিতভাবে অবহিত করা হবে।

জামায়াতের দায়িত্বশীল সূত্র জানায়, বিএনপির সঙ্গে আসন সমঝোতা হলে জামায়াতের প্রার্থীরা ধানের শীষ প্রতীকে নির্বাচনে অংশ নেবেন।