আ.লীগে ৪, বিএনপিতে ১২ জন মনোনয়নপ্রত্যাশী

>
  • গাজীপুর সিটির একাংশ ও গাজীপুর ক্যান্টনমেন্ট এলাকা নিয়ে গাজীপুর-২
  • এখানে মনোনয়নপ্রত্যাশীদের দৌড়ঝাঁপ শুরু হয়েছে অনেক আগেই
  • আসনটির বর্তমান সাংসদ আ. লীগের জাহিদ আহসান রাসেল
  • রাসেলের মনোনয়ন অনেকটাই নিশ্চিত বলে নেতা-কর্মীদের ধারণা

গাজীপুর-২ আসনে আওয়ামী লীগের মনোনয়নপ্রত্যাশী চারজন। তবে দলের অনেক নেতা–কর্মীর ধারণা, বর্তমান সাংসদ জাহিদ আহসান রাসেলই মনোনয়ন পেতে যাচ্ছেন। এদিকে বিএনপির মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করেছেন ১২ জন। এ ছাড়া জাতীয় পার্টিতেও আছেন একাধিক মনোনয়নপ্রত্যাশী।

গাজীপুর সিটি করপোরেশনের একাংশ ও গাজীপুর ক্যান্টনমেন্ট এলাকা নিয়ে আসনটি গঠিত।

২০০৮ সালের নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী জাহিদ আহসান ২ লাখ ৬২ হাজার ৯৬৮ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হন। তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপির হাসান উদ্দিন সরকার পেয়েছিলেন ১ লাখ ৩৮ হাজার ৭৯ ভোট। ২০০১ সালে আওয়ামী লীগের আহসান উল্লাহ মাস্টার ৯৪ হাজার ৭৩২ ভোট পেয়ে বিজয়ী হন। তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন বিএনপির এম এ মান্নান। তিনি পান ৮৭ হাজার ৬৯১ ভোট।

স্থানীয় লোকজন জানান, একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ঘিরে এখানে মনোনয়নপ্রত্যাশীদের দৌড়ঝাঁপ শুরু হয়েছে অনেক আগেই। ঈদ ও পূজার মতো ধর্মীয় উৎসব উপলক্ষে পোস্টার সাঁটিয়ে এলাকাবাসীকে শুভেচ্ছা জানানোর মধ্য দিয়ে নিজেদের প্রার্থিতার কথা জানান দেন তাঁরা। আবার প্রার্থীদের পক্ষে তাঁদের সমর্থকেরাও পোস্টার–ব্যানার সাঁটিয়ে দোয়া চেয়েছেন। আনুষ্ঠানিক গণসংযোগ শুরু না করলেও এলাকায় উঠান বৈঠক করে ভোটারদের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করে চলেছেন মনোনয়নপ্রত্যাশীরা।

আওয়ামী লীগ

প্রয়াত সাংসদ আহসান উল্লাহ মাস্টারের ছেলে জাহিদ আহসান রাসেল দলীয় মনোননয়ন চেয়েছেন। আওয়ামী লীগের বেশ কয়েকজন নেতা-কর্মী বলেন, তাঁর মনোনয়ন অনেকটাই নিশ্চিত।

জাহিদ আহসান ছাড়াও এই আসনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন চেয়েছেন, গাজীপুর মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি আজমত উল্লাহ খান, মহানগর আওয়ামী লীগের সহসভাপতি আলীম উদ্দিন ও আওয়ামী লীগের যুব ও ক্রীড়াবিষয়ক কেন্দ্রীয় উপকমিটির সদস্য মোস্তফা কামাল হুমায়ূন।

জাহিদ আহসান প্রথম আলোকে বলেন, তাঁর বাবা মানুষকে ভালোবাসতেন। মানুষকে ঘিরেই ছিল তাঁর স্বপ্ন। তিনি গাজীপুরের উন্নয়নে অনেক কাজ করেছেন। বাবার স্বপ্ন বাস্তবায়নে তিনিও কাজ করে যাচ্ছেন। এলাকায় তিনি ব্যাপক উন্নয়নকাজ করেছেন। শিক্ষার বিস্তারে তাঁর ভূমিকা আছে। এসব কারণে তিনি দলের মনোনয়ন পাবেন বলে আশাবাদী।

আজমত উল্লাহ প্রথম আলোকে বলেন, ‘দলের জন্য নিঃস্বার্থভাবে কাজ করে যাচ্ছি। ত্যাগ স্বীকার করেছি। দলের কাছে মনোনয়ন চেয়েছি। মনোনয়ন পাওয়ার ব্যাপারে আশাবাদী।’

আর মোস্তফা কামাল বলেন, তিনি ছাত্ররাজনীতি থেকে শুরু করে দীর্ঘদিন আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। দল তাঁকে মনোনয়ন দেবে বলে তিনি আশা করছেন।

বিএনপি

২০০৮ সালের নির্বাচনে বিএনপির নেতৃত্বাধীন চারদলীয় জোটের মনোনয়ন পেয়েছিলেন সাবেক সাংসদ হাসান উদ্দিন সরকার। সম্প্রতি গাজীপুর সিটি করপোরেশনের নির্বাচনে মেয়র পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে তিনি হেরে যান। তিনি দলীয় মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করেছেন। এ ছাড়া এই আসন থেকে দলীয় মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করেছেন গাজীপুর সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র এম এ মান্নান ও তাঁর ছেলে মনজুরুল করিম।

দলীয় নেতা–কর্মীরা বলছেন, এম এ মান্নান শারীরিকভাবে অসুস্থ। এ কারণে তিনি যদি দলীয় মনোনয়ন না পান, সে জন্য বিকল্প হিসেবে তাঁর ছেলেও মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করেছেন। তরুণ নেতা হিসেবে তিনিও আলোচনায় আছেন।

এম এ মান্নান ১৯৯১ সালের সংসদ নির্বাচনে এই আসন থেকে নির্বাচিত হন। এরপর প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব পেয়েছিলেন। আসন ভাগ হলে ২০০৮ সালে তিনি গাজীপুর-৩ আসন থেকে নির্বাচন করে আওয়ামী লীগের প্রার্থী রহমত আলীর কাছে হেরে যান।

এ ছাড়া শ্রমিক দলের কার্যকরী সভাপতি সালাহ উদ্দিন সরকার, বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য মাজহারুল আলম, গাজীপুর মহানগর বিএনপির সহসভাপতি হালিমুজ্জামান, মহানগর বিএনপির সহসভাপতি নাজিম উদ্দিন, মহানগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক সোহরাব হোসেন, গাজীপুর জেলা ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি সারাফত হোসেন, ছাত্রদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক হান্নান মিয়া দলীয় মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করেছেন ।

হাসান উদ্দিন সরকার বলেন, এই আসনে তাঁর বিকল্প কোনো প্রার্থী নেই। দল তাঁকেই মনোনয়ন দেবে বলে তিনি আশা করছেন। সিটি নির্বাচনে কারচুপি না হলে তিনিই জয়লাভ করতেন।

বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য মাজহারুল আলম বলেন, তিনি সংসদ নির্বাচনের প্রার্থী হওয়ার জন্য অনেক দিন ধরেই নেতা–কর্মীদের নিয়ে মাঠে প্রচার–প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন।   

জাতীয় পার্টি

জাতীয় পার্টি থেকে এই আসনে নির্বাচন করবেন সাবেক স্বাস্থ্যসচিব এম এম নিয়াজ উদ্দিন। সম্প্রতি তিনি জাতীয় পার্টিতে যোগ দেন। এ ছাড়া গাজীপুর মহানগর জাতীয় পার্টির সাবেক সাধারণ সম্পাদক জয়নাল আবেদীন ও কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য মাহবুব আলমও দলীয় মনোনয়নপ্রত্যাশী।