ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের 'ঘ' ইউনিটের পুনঃপরীক্ষা সম্পন্ন

এ কে এম গোলাম রব্বানী
এ কে এম গোলাম রব্বানী

কারও বিরুদ্ধে জালিয়াতি প্রমাণিত হলে পাস করে গেলেও তাঁর সনদ বাতিল করা হবে বলে মন্তব্য করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর এ কে এম গোলাম রব্বানী। আজ শুক্রবার সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদভুক্ত ‘ঘ’ ইউনিটের পুনঃ ভর্তি পরীক্ষা শেষে তিনি সাংবাদিকদের এই কথা বলেন।

জালিয়াতদের ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের অবস্থান পরিষ্কার, উল্লেখ করে প্রক্টর বলেন, 'আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও গণমাধ্যম উভয়ই আমাদের সহযোগিতা করছে ৷ জালিয়াতদের অনেককে আটক করা হয়েছে ৷ তদন্তের ভিত্তিতে আমরা পদক্ষেপ নিচ্ছি। কারও বিরুদ্ধে জালিয়াতি প্রমাণিত হলে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়ে পাস করে গেলেও তার সনদ বাতিল করা হবে।’

আজ বেলা তিনটা থেকে ঘণ্টাব্যাপী এই পরীক্ষা চলে। শুধু পূর্বের পরীক্ষায় উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীরা এতে অংশ নিতে পেরেছেন। ক্যাম্পাসের ১৯টি কেন্দ্রে এই পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। প্রচলিত পদ্ধতিতে ১২০ নম্বরের এমসিকিউতে এই পরীক্ষার প্রশ্নপত্র সাজানো হয়। গত ১২ অক্টোবর এই ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়েছিল, যাতে উত্তীর্ণ হয়েছিলেন ১৮ হাজার ৪৬৩ জন শিক্ষার্থী। পরে প্রশ্ন ফাঁস ও জালিয়াতির অভিযোগে ওই পরীক্ষার ফলাফল বাতিল করে পুনরায় পরীক্ষা নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন বলছে, পুনঃ ভর্তি পরীক্ষায় কোনো ধরনের অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনার খবর তারা পায়নি।

পরীক্ষাকে কেন্দ্র করে জালিয়াতি বা অনাকাঙ্ক্ষিত কোনো ঘটনার খবর আসেনি, উল্লেখ করে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর কে এম গোলাম রব্বানী বলেন, ‘ভালো মানের পরীক্ষা আয়োজনে সবার দায়িত্ব আছে। জালিয়াত চক্রের সদস্যরা অসৎ উপায়ে সহজে অর্থ উপার্জন করতে চায় ৷ কিন্তু অর্থের বিনিয়োগটা আসে শিক্ষার্থীদের পরিবার থেকে ৷ অভিভাবকদের কাছে অনুরোধ, এই কাজে অর্থ বিনিয়োগ করে পুরো শিক্ষাব্যবস্থাকে যেন আমরা ধ্বংসের দিকে ঠেলে না দিই। শিক্ষার্থীরা তাঁদের যোগ্যতা অনুযায়ী বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হবেন।’

এদিকে, ‘ঘ’ ইউনিটের পুনঃপরীক্ষায় শিক্ষার্থীদের পরীক্ষা শুরুর ৩০ মিনিট আগে কেন্দ্রে প্রবেশের নির্দেশনা ছিল। কয়েকজন শিক্ষার্থী পরীক্ষা শুরুর ১২ মিনিট আগে কলাভবন কেন্দ্রে ঢুকতে চান ৷ পুলিশ তাঁদের বাধা দিলে সেখানে বিশৃঙ্খল পরিবেশের সৃষ্টি হয়। ওই শিক্ষার্থীরা ক্ষুব্ধ হয়ে কলাভবনের মূল ফটকের কাচ ভাঙচুর করেন। পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী প্রক্টর আবদুর রহিম এসে তাঁদের শান্ত করে পরীক্ষাকেন্দ্রে নিয়ে যান। এ ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর বলেন, ‘শিক্ষার্থীদের প্রতি আমার অনুরোধ, তারা যে প্রতিষ্ঠানে পড়ার জন্য ভর্তি পরীক্ষা দিতে এসেছে, সেখানে তারা যেন সৌজন্য বজায় রাখে। পরীক্ষার ফলভোগী তো তারাই ৷ তারা যেন বিষয়গুলো খেয়াল রাখে।’

‘ঘ’ ইউনিটের ১২ অক্টোবরের পরীক্ষায় অনুত্তীর্ণ আনিকা বিনতে ইউনুস নামের এক শিক্ষার্থীর বাবা আইনজীবী ইউনুস আলী আকন্দ গত ২১ অক্টোবর এই পরীক্ষা বাতিল ও ভর্তি স্থগিত চেয়ে হাইকোর্টে রিট করেন ৷ এ বিষয়ে প্রক্টর বলেন, ‘মহামান্য আদালতের প্রতি আমরা শ্রদ্ধাশীল ৷ উচ্চ আদালত ওই রিটের শুনানি ১৮ নভেম্বর পর্যন্ত স্থগিত করেছেন ৷ ফলে আইনগতভাবে কোনো বাধা নেই ৷ ওই শিক্ষার্থীর পরীক্ষা নেওয়া হয়নি।’

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষায় সাধারণত পরীক্ষা শেষে প্রশ্নপত্র শিক্ষার্থীদের দিয়ে দেওয়া হয়। কিন্তু ‘ঘ’ ইউনিটের এই পুনঃপরীক্ষার প্রশ্নপত্র শিক্ষার্থীদের দেওয়া হয়নি ৷ এ বিষয়ে জানতে চাইলে প্রক্টর জানান, এটি কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্ত ৷ সবার জন্য মঙ্গল হতে পারে—এমন বিষয়গুলো সিদ্ধান্তে নেওয়া হয়েছে। এবারের প্রশ্নপত্রের কাঠামো ভালো ছিল ৷