ভাইকে 'ধরিয়ে' দিয়ে খুঁজছেন তিনি

আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ‘ভয়ভীতিতে’ ভাইকে ধরিয়ে দিয়েছেন সেলিনা আক্তার। নয়াপল্টনে বিএনপির কার্যালয়ের সামনে পুলিশের সঙ্গে বিএনপির নেতা-কর্মীদের সংঘর্ষের ঘটনায় হওয়া মামলায় ভাই আসামি। তবে ‘ডিবি পুলিশ’ ধরে নিয়ে যাওয়ার পর ভাই কোথায় আছেন, তা জানেন না সেলিনা আক্তার। কিন্তু গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) বলছে, এ ধরনের আটকের খবর তারা জানেন না।

সেলিনার ভাইয়ের নাম সোহাগ ভুঁইয়া। তিনি রাজধানীর শাজাহানপুর থানা ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক। ঘটনার দিন লাঠি হাতে তাঁর একটি ছবি বিভিন্ন মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। তাঁকে ধরতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা তাঁর বোন সেলিনা আক্তারের খোঁজে যান বলে জানান তিনি।

সেলিনার শ্বশুরবাড়ি কুমিল্লার নাঙ্গলকোট থানায়। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, গতকাল শনিবার দিবাগত রাত দুইটার দিকে ডিবি পুলিশের সদস্য পরিচয়ে সেখানে গিয়ে তাঁকে ঘুম থেকে তোলা হয়। ভাইয়ের খোঁজ জানার জন্য ওই রাতেই তাঁর ছোট ছেলেসহ নাঙ্গলকোট থানায় নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। তিনি বলেন, ‘ভাইয়ের খোঁজ না দিলে শ্বশুরবাড়ির লোকজনকে হেনস্তা করা হবে বলে পুলিশ ভয়ভীতি দেখায়। ঢাকায় শাজাহানপুরে আমার বাবাকেও দোকান খুলতে দেওয়া হচ্ছে না। তাদেরও ভয় দেখানো হচ্ছে।’ তিনি জানান, তাঁর ভাইয়ের কিছু হবে না। কয়েক দিন রেখে ছেড়ে দেবে—এই আশ্বাস দেওয়া হয়। ডিবি পুলিশের সদস্যদের কারও নাম সেলিনা আক্তার জানেন না। তিনি বলেন, তাঁর সামনে কেউ নাম ধরে কথা বলেনি।

সেই রাতেই তাঁকে ঢাকায় আনা হয় অভিযোগ করে সেলিনা বলেন, সকাল সাড়ে সাতটা থেকে আটটার দিকে শনির আখড়ার এক দূর সম্পর্কের আত্মীয়ের বাসা থেকে ভাইকে তাঁর উপস্থিতিতেই ধরে নিয়ে যায় ডিবি। তবে এরপর থেকে তাঁর ভাই কোথায় আছেন, তিনি জানেন না। দুপুরে মিন্টো রোডে ডিবি কার্যালয়ে গেলে তাঁকে জানানো হয়, সোহাগ ভুঁইয়া নামে কাউকে সেখানে নেওয়া হয়নি। সেলিনার দাবি, তাঁর ভাই কোনো ভাঙচুর করেননি। সংঘর্ষের ঘটনায় লাঠি হাতে থাকা ও দলে পদবি থাকায় তাঁকে ধরা হয়েছে।

বিষয়টি নিয়ে ডিবির সহকারী কমিশনার (এসি) আতিকুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, ডিবি এ রকম কাউকে ধরেনি। তাঁদের কাছে এ নামে কাউকে আটকের কোনো তথ্যও নেই। তবে তিনি জানান, শাজাহানপুর থানায় পরিবার থেকে সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করা হলে তাঁরা তদন্ত করে দেখতে পারেন।