বিতর্কের মধ্য উঠে আসে সত্য

বিতর্কচর্চা মানুষকে বদলে দেয়। বিতর্কের মধ্য দিয়ে উঠে আসে সত্য। আর সত্য উদঘাটিত হলে দূর হয় অন্ধকার, কুসংস্কার। কাজেই আলোকিত প্রজন্ম গড়ে তুলতে দরকার বিতর্কের পরিবেশ ও মানসিকতা।

রাজশাহী, রংপুর, বাগেরহাট ও ভোলায় রোববার অনুষ্ঠিত পুষ্টি-প্রথম আলো স্কুল বিতর্ক উৎসবের আঞ্চলিক পর্বে অতিথি ও বিচারকদের বক্তব্যের মোদ্দাকথা ছিল এটাই।

‘যোগ দাও যুক্তির মেলায়, করো যুক্তি দিয়ে বিশ্বজয়’ স্লোগানে অনুষ্ঠিত বিতর্ক উৎসবের সব আঞ্চলিক পর্বে ছিল খুদে বিতার্কিকদের প্রাণবন্ত উপস্থিতি। জাতীয় সংগীত পরিবেশন ও জাতীয় পতাকা উত্তোলনের মধ্যে দিয়ে উৎসব উদ্বোধন করা হয়। দিনব্যাপী আয়োজনে আরও ছিল কুইজ প্রতিযোগিতা এবং সমাপনী পর্বে পুরস্কার বিতরণী। দেশের ৪০টি অঞ্চলে এই বিতর্ক উৎসব হচ্ছে। প্রতি অঞ্চলের চ্যাম্পিয়ন দল ঢাকায় জাতীয় পর্যায়ের স্কুল বিতর্ক উৎসবে অংশ নেবে।

ঢাকার বাইরে প্রথম আলোর নিজস্ব প্রতিবেদক ও প্রতিনিধিদের পাঠানো খবর:
রাজশাহী শিক্ষা বোর্ড সরকারি মডেল স্কুল অ্যান্ড কলেজে সকাল সাড়ে ৯টায় উৎসব উদ্বোধন করেন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটির অধ্যক্ষ তাইফুর রহমান। চাঁপাইনবাবগঞ্জ ও রাজশাহীর ১২টি বিদ্যালয় এতে অংশ নেয়। চ্যাম্পিয়ন হয় রাজশাহী ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক স্কুল অ্যান্ড কলেজ। রানার্সআপ হয় রাজশাহী সরকারি বালিকা উচ্চবিদ্যালয় (হেলেনাবাদ)।

বিজয়ীদের মধ্যে পুরস্কার বিতরণ করেন রাজশাহীর লক্ষ্মীপুর বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক মো. ফারুক হোসেন, প্রথম আলোর রাজশাহীর নিজস্ব প্রতিবেদক আবুল কালাম মুহম্মদ আজাদ, রাজশাহী নিউ গভ. ডিগ্রি কলেজের বাংলা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক আ. সবুর, ইংরেজি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মো. আলাউদ্দীন ও রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের প্রভাষক জোহরুল ইসলাম।

রংপুর শহরের শিশু নিকেতন উচ্চবিদ্যালয়ে উৎসবের উদ্বোধন করেন বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক বিমল কুমার রায়। রংপুর ও নীলফামারীর ১২টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা এতে অংশ নেয়। চ্যাম্পিয়ন হয় রংপুর ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক স্কুল ও কলেজ এবং রানার্সআপ হয় ইন্টারন্যাশনাল গ্রামার স্কুল। সমাপনী পর্বে প্রধান অতিথি ছিলেন সরকারি বেগম রোকেয়া কলেজের বাংলা বিভাগের সাবেক বিভাগীয় প্রধান মোহাম্মদ শাহ আলম। আরও বক্তব্য দেন কারমাইকেল কলেজের সাবেক অধ্যাপক তোফায়েল হোসেন ও দিলীপ কুমার, বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক উমর ফারুক ও শাহীনুর রহমান, সরকারি বেগম রোকেয়া কলেজের শিক্ষক আজহারুল ইসলাম, পুলিশ লাইনস স্কুল ও কলেজের শিক্ষক মোমিনুল ইসলাম প্রমুখ।

বাগেরহাট শহরের বহুমুখী কলেজিয়েট স্কুলে উৎসব উদ্বোধন করেন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটির অধ্যক্ষ ফারহানা আক্তার। উৎসবে বাগেরহাট ও পিরোজপুরের সাতটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান অংশ নেয়। চ্যাম্পিয়ন হয়েছে পিরোজপুর সরকারি বালিকা উচ্চবিদ্যালয়। রানার্সআপ হয় বাগেরহাট সরকারি উচ্চবিদ্যালয়। প্রতিযোগিতায় বিচারক হিসেবে ছিলেন বাগেরহাট সরকারি মহিলা কলেজের বাংলা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক এ বি এম হাসানুজ্জামান, সরকারি পিসি কলেজের অর্থনীতি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মো. আলিমুজ্জামান, বাগেরহাট ডিবেটিং সোসাইটির সাধারণ সম্পাদক আইনজীবী পারভীন আহমেদ, শিক্ষক ও বন্ধুসভার উপদেষ্টা শেখ মুজিবুর রহমান, জেলা স্কাউটসের সহকারী কমিশনার শেখ সাকির হোসেন, খানজাহান আলী কলেজের প্রভাষক বুলবুল তালুকদার, বাগেরহাট প্রেসক্লাবের সভাপতি আহাদ হায়দার প্রমুখ।

ভোলার সদর উপজেলার কমরেড নলিনী দাস মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয় মাঠে উৎসব উদ্বোধন করেন বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক অসীম সাহা। সমাপনী পর্বে বিজয়ীদের মধ্যে পুরস্কার বিতরণ করেন ভোলা সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক মো. গোলাম জাকারিয়া। বিতর্ক প্রতিযোগিতায় চ্যাম্পিয়ন হয় ভোলা সরকারি বালিকা উচ্চবিদ্যালয়, রানার্সআপ ভোলা সরকারি বালক বিদ্যালয়। অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন ভোলা সরকারি বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আজহারুল হক, প্রথম আলো ভোলা বন্ধুসভার সভাপতি এস এম বাহাউদ্দিন প্রমুখ।

টাঙ্গাইল-কেরানীগঞ্জ-নারায়ণগঞ্জ-রাঙামাটির বিতর্ক উৎসব স্থগিত
অনিবার্য কারণে পুষ্টি-প্রথম আলো বিতর্ক উৎসব ও কুইজ প্রতিযোগিতার টাঙ্গাইল, কেরানীগঞ্জ, নারায়ণগঞ্জ ও রাঙামাটির উৎসব স্থগিত করা হয়েছে। টাঙ্গাইলে ১৯ নভেম্বর, নারায়ণগঞ্জে ২২ নভেম্বর, কেরানীগঞ্জে ২৩ নভেম্বর ও রাঙামাটিতে ২৪ নভেম্বরের বিতর্ক উৎসব ও কুইজ প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল। অনিবার্য কারণে তা স্থগিত করা হয়েছে। উৎসবের তারিখ পরে জানানো হবে।

দেশের ৪০টি অঞ্চলে বিতর্ক উৎসব হচ্ছে। প্রতি জেলায় চ্যাম্পিয়ন বিতর্ক দল ঢাকায় জাতীয় স্কুল বিতর্ক উৎসবে অংশ নেবে। আঞ্চলিক পর্ব শেষে রাজধানী ঢাকায় আয়োজন করা হবে চূড়ান্তপর্বের। বিতর্ক উৎসব সামনে রেখে ঢাকায় কর্মশালার আয়োজন করা হয়।