রংপুরে ছয়টি আসনে সোয়া দুই লাখ নতুন ভোটার

রংপুরের ছয়টি সংসদীয় আসনে এবার যুক্ত হয়েছে সোয়া ২ লাখ নতুন ভোটার। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে কোনো কোনো আসনে এই নতুন ভোটাররা একটা বড় নিয়ামক হবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা।

তবে ছয় আসনের মধ্যে রংপুর-৪ (কাউনিয়া-পীরগাছা) ও রংপুর-৫ (মিঠাপুকুর) আসনে জয়-পরাজয় নির্ধারণ করতে নতুন ভোটারদের একটা বড় ভূমিকা থাকতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।

নির্বাচনসংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বলছেন, নতুন ভোটারের মধ্যে ৯০ ভাগ তরুণ-তরুণী। যাঁরা এর আগে ভোটার হতে পারেননি বা জেলার বাইরে ছিলেন, বাকি ১০ ভাগ তাঁরা।

জেলা নির্বাচন কার্যালয় থেকে পাওয়া তথ্যে জানা গেছে, একাদশ সংসদ নির্বাচনে রংপুরের ছয়টি আসনে মোট ভোটার ২১ লাখ ৩৫ হাজার ২৩ জন। দশম সংসদ নির্বাচনে মোট ভোটার ছিলেন ১৯ লাখ ২০ হাজার ৭৯২ জন। এবার নতুন ভোটার হয়েছেন ২ লাখ ১৪ হাজার ২৩১ জন। তাঁদের মধ্যে নারী ভোটার ১০ লাখ ৭৪ হাজার ৬১৭ জন এবং পুরুষ ভোটার ১০ লাখ ৬০ হাজার ৪০৬ জন।

নবম সংসদ নির্বাচনের (২০০৮) ফল বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, রংপুরের ছয় আসনের মধ্যে দুটি আসনে জয়ী ও নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীর ভোটের ব্যবধান অনেক কম ছিল। এ দুটি আসন হলো রংপুর-৪ ও রংপুর-৫। এ আসন দুটিতে ২০০৮ সালের নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী বিজয়ী হন। নিকটতম প্রার্থী ছিলেন জাতীয় পার্টির।

এই দুটি আসনের মধ্যে রংপুর-৪ আসনে নতুন ভোটার হয়েছেন ৪৪ হাজার। বিগত ২০০৮ সালের নির্বাচনে জয়ী ও নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীর মধ্যে ভোট ব্যবধান ছিল ১৫ হাজার।

রংপুর-৫ আসনে নতুন ভোটার হয়েছেন সাড়ে ৩৫ হাজার। ২০০৮ সালের নির্বাচনে জয়ী ও নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীর মধ্যে ভোটের ব্যবধান ছিল ২৪ হাজার।

এদিকে অন্য চারটি আসনে জয়ী ও নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীর মধ্যে ভোটের ব্যবধান ছিল অনেক বেশি।

পর্যবেক্ষকেরা বলছেন, রংপুর-৪ ও রংপুর-৫ আসন দুটিতে জয়-পরাজয়ের অন্যতম ভূমিকা রাখবেন এই নতুন ভোটাররা। নতুন ভোটাররা বলছেন, শিক্ষিত বেকার যুবকদের কর্মসংস্থান, বিভিন্ন ক্ষেত্রে তরুণদের সুযোগদানে সম্ভাবনার ক্ষেত্র তৈরি ও সার্বিক উন্নয়নের দিক বিবেচনায় নিয়ে ভোট দেবেন তাঁরা।

নতুন ভোটারদের একজন কলেজছাত্রী সাবাতুন নাহার। তিনি মিঠাপুকুরের বাসিন্দা, পড়াশোনা করছেন কারমাইকেল কলেজে। সুষ্ঠু নির্বাচনের প্রত্যাশা ব্যক্ত করে তিনি বলেন, এলাকাসহ দেশের সার্বিক উন্নয়নে যিনি অগ্রণী ভূমিকা রাখতে পারবেন, সমাজে নারীদের নিয়ে যিনি বেশি বেশি চিন্তা করে এগিয়ে আসবেন, তাঁকেই বেছে নেবেন নতুন ভোটাররা।

বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রথম বর্ষে পড়াশোনা করছেন ওয়ালিউর রহমান। তিনি কাউনিয়ার বাসিন্দা। এবারই নতুন ভোটার হয়েছেন। তিনি বলেন, মাদক নিয়ন্ত্রণে শুধু মুখের বুলি নয়, যিনি সত্যিকার অর্থে মাদকমুক্ত সমাজ গড়তে কাজ করবেন, তাঁর দিকেই নতুন ভোটাররা ছুটবেন।

রংপুর জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক রেজাউল করিম বলেন, রংপুরে বিশ্ববিদ্যালয় হয়েছে। হয়েছে বিভাগ। মেরিন একাডেমি হয়েছে। তিস্তা সেতু হয়েছে। মৃত্তিকা সম্পদ ইনস্টিটিউট হয়েছে। রংপুর নগরের ১৬ কিলোমিটার রাস্তা চার লেন হয়েছে। সেখানে নতুন ভোটারদের আকৃষ্ট করতে এসব চিত্র তুলে ধরা হবে।

অন্যদিকে মহানগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক শহিদুল ইসলাম বলেন, দেশে আইনের শাসন নেই বললেই চলে। বর্তমান সরকার আমলের নির্যাতনের চিত্র তুলে ধরে তরুণদের আকৃষ্ট করার চেষ্টা করা হবে।