নিশি কলমির দেখা পেলাম

নিশি কলমি, চট্টগ্রামে কর্ণফুলীতীরে।  ছবি: লেখক
নিশি কলমি, চট্টগ্রামে কর্ণফুলীতীরে। ছবি: লেখক

কলমি ফুল প্রধানত খুব সকালে সূর্যের আলো ফোটার সঙ্গে সঙ্গেই ফোটে। তারপর শেষ বিকেলে নেতিয়ে পড়ে। বাংলাদেশে অনেক প্রজাতির বুনো কলমির প্রজাতি রয়েছে। এরা জঙ্গলে, সড়কের পাশে, ঝোপঝাড়ে জন্মে। ফুল অনেক আকর্ষণীয় এবং নানান রঙের। বুনো কলমিলতার মধ্যে কিছু প্রজাতি সহজদৃষ্ট। আবার কিছু প্রজাতি দুর্লভ। সব প্রজাতির ফুল একই সময়ে ফোটে না। যে কারণে ফুলের দেখা না পেলে প্রজাতি শনাক্ত করা যায় না।

সম্প্রতি এক সন্ধ্যায় চট্টগ্রামের কর্ণফুলী নদীর তীরে অভয়মিত্র ঘাটের কাছে গিয়ে সাদা রঙের কলমির দেখা পাই। পাতা গাঢ় সবুজ। বেশ বড়সড় একটি ঝাঁকে কয়েকটি ফুল। ফুল দেখেই মনে হলো, এ প্রজাতির ফুল আগে চোখে পড়েনি। কলমির এ প্রজাতির ফুল দেখার জন্য অনেক বছর অপেক্ষা করেছি। অবশেষে দেখা হলো নিশি কলমির সঙ্গে। এ কলমির ফুল রাতে ফোটার কারণে সচরাচর মানুষের দৃষ্টিগোচর হয় না। নিশি কলমির বৈজ্ঞানিক নাম ipomoea alba।

এটি বহুবর্ষজীবী চিরসবুজ লতা। এ লতা প্রায় ৩০ মিটার লম্বা হয়। ফুল সুগন্ধি এবং পাপড়ির রং সাদা। সন্ধ্যায় ফুল ফোটা শুরু হয়, সারা রাত ফুটে থাকে এবং খুব সকালে পাপড়ি লুকিয়ে পড়ে। তবে কোনো কোনো মেঘাচ্ছন্ন দিনে সকালের দিকেও ফুল তাজা থাকে। পানি জমে না এবং সূর্যের আলো পড়ে এমন স্থানে জন্মে। আদি আবাস উষ্ণমণ্ডলীয় আমেরিকা। নিশাচর মথ এবং অন্যান্য পতঙ্গের মাধ্যমে পরাগায়ন ঘটে। বীজের মাধ্যমে বংশবৃদ্ধি। সমুদ্রপথে এরা পৃথিবীর নানা প্রান্তে ছড়িয়ে পড়েছে। সোনাদিয়া দ্বীপ ও সুন্দরবনেও এ লতা আছে।

লতার কষ রাবারের বল তৈরিতে ব্যবহার করা হয়। পৃথিবীর নানান দেশে শোভাবর্ধনকারী ফুল হিসেবে লাগানো হয়। কচি পাতা ও সতেজ বৃতি রান্না করে খাওয়া হয়।