দুই আসনে আওয়ামী লীগের প্রাথমিক বাছাই চারজন

হাবিবুর রহমান মোল্লা,কাজী মনিরুল ইসলাম,হাজি মো. সেলিম,আবুল হাসনাত
হাবিবুর রহমান মোল্লা,কাজী মনিরুল ইসলাম,হাজি মো. সেলিম,আবুল হাসনাত

ঢাকা-৫ ও ঢাকা-৭ আসনে দোদুল্যমান অবস্থায় আছেন ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের চার মনোনয়নপ্রত্যাশী। গতকাল রোববার এই দুটি আসনে চারজনের নাম প্রস্তাব করেছে আওয়ামী লীগ। কিন্তু তাঁদের মধ্যে কোন দুজন দলের চূড়ান্ত মনোনয়ন পাবেন, তা নিয়ে চলছে নানা জল্পনা-কল্পনা।

গতকাল বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউতে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয় থেকে দলীয় প্রার্থীদের মনোনয়ন পাওয়ার চিঠি দেন দলের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। তাঁদের মধ্যে ঢাকা-৫ আসনে দলীয় মনোনয়নে দুজনের নাম রয়েছে। তাঁরা হলেন বর্তমান সাংসদ হাবিবুর রহমান মোল্লা ও যাত্রাবাড়ী থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি কাজী মনিরুল ইসলাম। অন্য দিকে ঢাকা-৭ আসনে বর্তমান সাংসদ হাজি মো. সেলিম ও আওয়ামী লীগের ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সভাপতি আবুল হাসনাতের নাম রয়েছে।

আওয়ামী লীগের দায়িত্বশীল একটি সূত্র জানিয়েছে, ঢাকা-৫ আসনে দলীয় মনোনয়নপ্রত্যাশী ছিলেন ৯ জন এবং ঢাকা-৭ আসনে ছিলেন ২৩ জন। দলের কৌশলের অংশ হিসেবে এই দুটি আসনে প্রাথমিকভাবে চারজনকে বাছাই করা হয়েছে। দু-এক দিনের মধ্যেই এই দুটি আসনে একক প্রার্থী নির্ধারণ করা হবে। এ ক্ষেত্রে দলীয় সভানেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত হবে।

দলের মনোনয়ন না পাওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন আওয়ামী লীগের অন্য মনোনয়নপ্রত্যাশীরা। তাঁদের দাবি, ওই চারজনের চেয়ে দলের তৃণমূল পর্যায়ে আরও যোগ্যতাসম্পন্ন বা গুরুত্বপূর্ণ মনোনয়নপ্রত্যাশী ছিলেন। দল তাঁদের যথাযথ মূল্যায়ন করেনি। এ অবস্থায় আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তাঁদের ভূমিকা নিয়ে শঙ্কা রয়েছে।

ঢাকা-৫ আসন: ঢাকা-৫ আসনের (যাত্রাবাড়ী ও ডেমরা) বর্তমান সাংসদ হাবিবুর রহমান মোল্লা। তিনি ১৯৯৬ ও ২০০৮ সালে এই আসন থেকে সাংসদ নির্বাচিত হয়েছিলেন। এবার এই আসনে মনোনয়নপ্রত্যাশীদের মধ্যে হাবিবুর রহমান মোল্লা ও যাত্রাবাড়ী থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি কাজী মনিরুল ইসলামকে দলীয় তালিকায় রাখা হয়েছে। এর বাইরে যাত্রাবাড়ী থানা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হারুনর রশিদ, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সহসভাপতি ও ঢাকা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক খন্দকার এনায়েত উল্লাহ, ডেমরা থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি রফিকুল ইসলাম মনোনয়নপ্রত্যাশীদের মধ্যে দৌড়ে এগিয়ে ছিলেন বলে আওয়ামী লীগ সূত্রে জানা গেছে।

>ঢাকা-৫ ও ঢাকা-৭ আসনে মনোনয়নপ্রত্যাশী ছিলেন যথাক্রমে ৯ জন ও ২৩ জন। হতাশ ও ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন মনোনয়নবঞ্চিতরা।

হাবিবুর রহমান মোল্লার মুঠোফোনে একাধিকবার কল দিলেও তিনি তা ধরেননি। তবে তাঁর ছেলে ডেমরা থানা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মশিউর রহমান মোল্লা প্রথম আলোকে বলেন, ‘দলের তৃণমূল পর্যায়ে বাবার ব্যাপক জনপ্রিয়তা রয়েছে। দল থেকে বাবাকেই একক প্রার্থী দেওয়ার বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয়েছে। আপাতত কৌশলগত কারণে কাজী মনিরুল ইসলামকে তালিকায় রাখা হয়েছে বলে আমরা জানতে পেরেছি।’


ঢাকা-৭ আসন: আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা জানান, ঢাকা-৭ আসনে (লালবাগ, চকবাজার, বংশাল) দলীয় মনোনয়নপ্রত্যাশী ছিলেন ২৩ জন। তাঁদের মধ্যে বর্তমান সাংসদ হাজি মোহাম্মদ সেলিম, বিএমএ সভাপতি ও এই আসনের সাবেক সাংসদ মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন ও আওয়ামী লীগের ঢাকা মহানগর দক্ষিণ কমিটির সভাপতি আবুল হাসনাত ছিলেন অন্যতম। এই তিনজনের মধ্যে হাজি মোহাম্মদ সেলিম ও আবুল হাসনাতকে প্রাথমিকভাবে মনোনয়নের চিঠি দেওয়া হয়েছে। এর বাইরে মনোনয়নের জন্য চেষ্টা চালিয়েছিলেন ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সহসভাপতি হুমায়ূন কবির, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক আখতার হোসেন, ২৬ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হাসিবুর রহমান। তবে দলের এমন সিদ্ধান্তের বিষয়ে মনোনয়নবঞ্চিতরা কোনো মন্তব্য করেননি, শুধু হতাশা ও ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।