মহাজোটের রাজনীতিতে জাপার বিপর্যয়

রাজনীতিতে রংপুর জেলা জাতীয় পার্টির দুর্গ হিসেবে পরিচিত। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার জন্য রংপুর জেলার ছয়টি আসনের মধ্যে চারটিতেই আওয়ামী লীগ প্রার্থী মনোনয়ন দিয়েছে। এ কারণে মহাজোটের রাজনীতিতে লেনদেনের দিক দিয়ে জাতীয় পার্টিতে লোকসানের পাল্লা ভারী হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে দলের নেতা-কর্মীরা উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছেন।

গতকাল রোববার বিভিন্ন অনলাইন পোর্টালে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পাওয়া ব্যক্তিদের তালিকা দেখার পর জাতীয় পার্টির নেতা-কর্মীরা হতাশ হয়ে পড়েন। রংপুর-১ (গঙ্গাচড়া) ও রংপুর-৩ (সদর) আসনে আপাতত জাতীয় পার্টির বরাদ্দে পড়েছে। এই দুটির মধ্যে সদর আসনে দলীয় প্রধান এরশাদ এবং গঙ্গাচড়া আসন দলের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মসিউর রহমানের জন্য রাখা হয়েছে।

মহানগর জাতীয় পার্টির সাধারণ সম্পাদক এস এম ইয়াসীর বলেন, ‘দলগতভাবে এখনো আমরা আশা ছাড়িনি। রংপুর-২ (বদরগঞ্জ-তারাগঞ্জ) আসনটি জাপার ঘরেই আসবে।’ রাজনীতিতে শেষ কথা নেই বলে মন্তব্য করে তিনি আরও বলেন, তিনটি আসনের জন্য শেষ পর্যন্ত চেষ্টা চলছে। আর তা যদি না হয়, তাহলে দলের নেতা-কর্মীদের জন্য এটি একটি দুঃসংবাদ বয়ে আনবে।

রংপুর মহানগর জাতীয় পার্টির দপ্তর সম্পাদক জাহিদ হাসান বলেন, জাপার দুর্গে এত কম আসন পাওয়ায় দলের মাঠপর্যায়ের নেতা-কর্মীদের মধ্যে হতাশা নেমে আসবে এবং দলীয় কার্যক্রমে স্থবিরতার সৃষ্টি হবে।

এ ছাড়া জাতীয় পার্টির বাইরে যাঁরা সাধারণ ভোটার, তাঁদের মধ্যেও রংপুরের রাজনীতিতে জাপার বর্তমান অবস্থান ও ভবিষ্যৎ নিয়ে গতকাল দিনভর আলোচনা-সমালোচনা ছিল। কেউ বলেছেন, এই টার্মেই জাতীয় পার্টি শেষ। আবার কারও কারও ভাষ্য, ভবিষ্যতে এই দলের কেউ কেউ ব্যক্তি ইমেজে দলের কার্যক্রম পরিচালনা করবেন।

রংপুর নগরের কাচারি বাজার এলাকায় কথা হয় কয়েকজন বিশিষ্টজনের সঙ্গে; যাঁরা সরাসরি রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত নন। এর মধ্যে শিক্ষাবিদ শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘ব্যক্তি ইমেজে যে দল গড়ে ওঠে, সেই ব্যক্তির অনুপস্থিতিতে দলের বড় বিপর্যয় নেমে আসে।’