জাপার সোহেল রানা নাকি আ.লীগের শাহে আলম?

শাহে আলম তালুকদার ও সোহেল রানা
শাহে আলম তালুকদার ও সোহেল রানা

বরিশাল-২ আসনে জাতীয় পার্টির সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও বাংলা চলচ্চিত্রের জনপ্রিয় নায়ক মাসুদ পারভেজ ওরফে সোহেল রানা মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। এই আসনে আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়ন পেয়েছেন ছাত্রলীগের সাবেক কেন্দ্রীয় সভাপতি মো. শাহে আলম তালুকদার। তিনিও গতকাল বুধবার মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন।

বরিশাল-২ (উজিরপুর-বানারীপাড়া) সোহেল রানা প্রার্থী হচ্ছেন, এটা বেশ কয়েক দিন ধরে এলাকায় আলোচিত হচ্ছিল। জাতীয় পার্টি তাঁকে এখানে মহাজোটের প্রার্থী করতে চাইছে। কিন্তু আওয়ামী লীগ প্রথমে এই আসনে বর্তমান সাংসদ তালুকদার মো. ইউনুসকে দলীয় প্রার্থী ঘোষণা দেয়। কিন্তু গত মঙ্গলবার দলের পক্ষ থেকে শাহে আলম তালুকদারকে নতুন করে প্রার্থী ঘোষণা করা হয়। দলের এই সিদ্ধান্তকে মেনে নিয়েছেন তালুকদার মো. ইউনুস।

ইউনুস বলেন, ‘আমি মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর জননেত্রী শেখ হাসিনার সিদ্ধান্তকে মেনে নিয়ে দলীয় প্রার্থীকে সমর্থন দিয়েছি।’

নাম প্রকাশ না করার শর্তে বানারীপাড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের কয়েকজন নেতা বলেন, তাঁরা চান এ আসনে তাঁদের দলীয় প্রার্থী থাকুন। এ আসনটিতে আওয়ামী লীগের নিজস্ব ভোটব্যাংক আছে। এ ছাড়া তালুকদার ইউনুস এবং এখন যাঁকে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে শাহে আলম, তাঁদের দুজনের ভাবমূর্তি এলাকায় উজ্জ্বল। শাহে আলম ৯০ দশকে স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনে নেতৃত্ব দিয়েছেন, পরবর্তী সময়ে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সভাপতি ছিলেন। এ আসনে আওয়ামী লীগের বিজয় সুনিশ্চিত।

অন্যদিকে জাতীয় পার্টির নেতা-কর্মীরা বলছেন, এই আসনে সোহেল রানা প্রার্থী হচ্ছেন, এই খবর শুনে এলাকার মানুষের মধ্যে ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দীপনার সৃষ্টি হয়েছে। সোহেল রানা দেশজুড়ে যেমন চলচ্চিত্রের নায়ক হিসেবে জনপ্রিয়, তেমনি ব্যক্তিগত জীবনে তিনি একজন ন্যায়পরায়ণ মানুষ। এলাকার উন্নয়নে তিনি ভূমিকা রাখতে পারবেন।

জাতীয় পার্টির উজিরপুর উপজেলা সাংগঠনিক সম্পাদক সৈয়দ জাহিদ আলম বলেন, এখানে মহাজোটের পক্ষ থেকে শেষ পর্যন্ত সোহেল রানাই প্রার্থী থাকবেন। তিনি এখানে বিপুল ভোটে জয়ী হবেন। জাতীয় পার্টির পক্ষ থেকে মহাজোট নেত্রী ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে যেসব আসন দাবি করা হয়েছে, তার মধ্যে অন্যতম হচ্ছে এ আসনটি। তিনি এখানে মহাজোটের প্রার্থী হচ্ছেন, এটা নিশ্চিত হওয়ার পরই তিনি মনোনয়ন জমা দিয়েছেন।

সোহেল রানা দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে উজিরপুরে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে মনোনয়নপত্র জমা দেন। এ সময় তাঁর সঙ্গে ছিলেন তাঁর ছোট ভাই নায়ক রুবেল এবং স্থানীয় জাতীয় পার্টির অন্যান্য নেতারা।

এ প্রসঙ্গে সোহেল রানার বক্তব্য জানার জন্য গতকাল বেশ কয়েকবার ফোন করা হলেও তিনি ফোন ধরেননি। তবে গত রোববার তিনি বলেন, তিনি এই এলাকা থেকে মনোনয়ন পাচ্ছেন। এলাকার উন্নয়নে সর্বাত্মক চেষ্টা চালাবেন।

এদিকে গতকাল আওয়ামী লীগের মনোনয়নপ্রার্থী শাহে আলমও মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। এ সময় তাঁর সঙ্গে বর্তমান সাংসদ তালুকদার মো. ইউনুসও উপস্থিত ছিলেন।

তালুকদার বলেন,এখানে আওয়ামী লীগের পক্ষে গণজোয়ার সৃষ্টি হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী তাঁকে এখানে দলীয় মনোনয়ন দিয়েছেন। এ জন্য তিনি কৃতজ্ঞ। সোহেল রানার প্রার্থিতার বিষয়ে তিনি বলেন, ‘আমি শুনিনি তাঁকে এখানে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে। আর তিনি মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন, সে খবরও আমার জানা নেই। এখানে দল আমাকে একমাত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন দিয়েছে। দলের সর্বস্তরের নেতা-কর্মী এবং সাধারণ মানুষ আমার পক্ষে নেমে এসেছে।’