এবার স্বতন্ত্র হলেন দুই সাংসদ

আবদুল মুনিম চৌধুরী ও আমাতুল কিবরিয়া
আবদুল মুনিম চৌধুরী ও আমাতুল কিবরিয়া

বর্তমান সাংসদ জাতীয় পার্টির (জাপা)। তাঁকে বাদ দিয়ে দলটি আরেকজনকে প্রার্থী করেছে। আবার সংরক্ষিত নারী আসনের একজন সাংসদ আওয়ামী লীগের মনোনয়ন চেয়ে পাননি। এই দুই সাংসদই গতকাল বুধবার হবিগঞ্জ-১ আসনের জন্য স্বতন্ত্র হিসেবে মনোনয়নপত্র জমা দেন।

নবীগঞ্জ ও বাহুবল নিয়ে হবিগঞ্জ-১ আসন। বর্তমান সাংসদ জাপার কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক আবদুল মুনিম চৌধুরী (বাবু)। তাঁকে বাদ নিয়ে এবার দলের প্রেসিডিয়াম সদস্য আতিকুর রহমান আতিককে মনোনয়ন দিয়েছে জাপা। এর প্রতিবাদে বর্তমান সাংসদ আবদুল মুনিম চৌধুরী স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছেন।

 আবদুল মুনিম চৌধুরী বাবুর পক্ষে গতকাল সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা ও নবীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) তৌহিদ বিন হাসানের কাছে মনোনয়নপত্র জমা দেওয়া হয়। তিনি বলেন, এলাকার সাধারণ মানুষের কথা ভেবে এবং জনগণের চাপে তিনি স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন।

একইভাবে এই আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে গতকাল মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন আমাতুল কিবরিয়া কেয়া চৌধুরীও। তিনি জাতীয় সংসদের সংরক্ষিত নারী আসনের (হবিগঞ্জ ও সিলেট) সাংসদ। তিনিও আওয়ামী লীগ থেকে মনোনয়ন চেয়ে পাননি। এ আসনে দলটি মনোনয়নের চিঠি দিয়েছে প্রয়াত সাংসদ দেওয়ান ফরিদ গাজীর ছেলে শাহ নওয়াজ মিলাদ গাজীকে।

গতকাল বুধবার বিকেলে আমাতুল কিবরিয়া কেয়া চৌধুরীর পক্ষে একদল নেতা-কর্মী হবিগঞ্জ জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তা ও জেলা প্রশাসক মাহমুদুল কবীর মুরাদের কাছে গিয়ে মনোনয়নপত্র জমা দেন। এ বিষয়ে তিনি বলেন, নির্বাচনী এলাকার মুক্তিযোদ্ধা ও সুশীল সমাজের প্রতিনিধিদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে তিনি মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। তা ছাড়া এ আসনে এখনো মহাজোটের প্রার্থী নির্ধারণ করা হয়নি। কাজেই এখনো তাঁর  মনোনয়ন চাওয়ার সুযোগ রয়েছে। দল মনোনয়ন দিলে তিনি নির্বাচন করবেন। নইলে দল থেকে যে সিদ্ধান্ত আসবে, তা তিনি মেনে নেবেন।

চার আসনে মোট ৩২ জন: হবিগঞ্জ-১ আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী শাহ নওয়াজ মিলাদ গাজী ও জাপার প্রার্থী আতিকুর রহমানও গতকাল মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। এ আসনে মোট আটজন মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। অন্যরা হলেন সাবেক অর্থমন্ত্রী শাহ এ এম এস কিবরিয়ার ছেলে রেজা কিবরিয়া (গণফোরাম), সাবেক সাংসদ ও যুক্তরাজ্যপ্রবাসী শেখ মো. সুজাত মিয়া (বিএনপি), যুক্তরাজ্যপ্রবাসী আবদুল হান্নান (স্বতন্ত্র) ও আবু হানিফ আহমদ হোসেইন (ইসলামী আন্দোলন)। 

হবিগঞ্জ-২ (বানিয়াচং ও আজমিরীগঞ্জ) আসনেও মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন আটজন। তাঁরা হলেন বর্তমান সাংসদ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবদুল মজিদ খান, বিএনপির কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক এস এম সাখাওয়াত হাসান ও  ছাত্রদল কেন্দ্রীয় কমিটির সহসাংগঠনিক সম্পাদক জাকির হোসেন, জেলা জাতীয় পার্টির সাধারণ সম্পাদক শংকর পাল, জমিয়তে ওলামায়ে ইসলামের সহসভাপতি আবদুর রব ইউসূফী, খেলাফত মজলিসের নায়েবে আমির আবদুল বাসিত আজাদ, ইসলামী আন্দোলনের এ জে মাসউদ হাসান ও স্বতন্ত্র হিসেবে সাংবাদিক আফছার আহমেদ রূপক।

হবিগঞ্জ-৩ (সদর, লাখাই ও শায়েস্তাগঞ্জ) আসনেও মনোনয়নপত্র জমা দেন মোট আটজন। তাঁরা হলেন বর্তমান সাংসদ ও জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মো. আবু জাহির, হবিগঞ্জ পৌরসভার মেয়র ও জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক জি কে গউছ, জেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক এনামুল হক সেলিম, জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য ও জেলা সভাপতি আতিকুর রহমান, গণফোরাম থেকে চৌধুরী আশরাফুল বারী নোমান, ইসলামী আন্দোলনের মুহিব উদ্দিন আহমেদ সোহেল, এনপিপির আবদুল কাদির ও কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের নুরুল হক।

হবিগঞ্জ-৪ ( চুনারুঘাট ও মাধবপুর) আসনে মনোনয়ন জমা দিয়েছেন চারজন। তাঁরা হলেন আওয়ামী লীগের বর্তমান সাংসদ আইনজীবী মো. মাহবুব আলী, জেলা বিএনপির সভাপতি সৈয়দ মোহাম্মদ ফয়সল, খেলাফত মজলিসের কেন্দ্রীয় মহাসচিব আহমদ আবদুল কাদের ও ইসলামী আন্দোলনের শেখ সামছুল আলম।