রোহিঙ্গাদের পেছনে ব্যয় হয়েছে কত টাকা?

রোহিঙ্গা শরণার্থী শিবির। ফাইল ছবি
রোহিঙ্গা শরণার্থী শিবির। ফাইল ছবি

রোহিঙ্গা সংকট মোকাবিলায় জাতিসংঘের অঙ্গসংস্থাগুলোর কাছে এই পর্যন্ত ৬৮২ মিলিয়ন ডলার বা ৫ হাজার ৭৯৭ হাজার কোটি টাকার তহবিল এসেছে। এর ফলে এই তহবিল থেকে বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গাদের মাথাপিছু সাহায্যের পরিমাণ দাঁড়ায় ৫৭ হাজার টাকা। এখন দেখার বিষয় এই টাকার কত অংশ রোহিঙ্গারা পেয়েছেন আর কত অংশই–বা ব্যয় হয়েছে সংস্থাগুলোর প্রধান কার্যালয় বা মাঠপর্যায় পরিচালন ব্যয়ে।

ব্যয়ের এই হিসাব জানতেই শনিবার ঢাকায় একটি আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। এতে বলা হয়, রোহিঙ্গাদের জন্য করা ব্যয় ও সংস্থাগুলোর করা ব্যয়ের তথ্য অবিলম্বে প্রকাশ করা করা উচিত।

সিরডাপ মিলনায়তনে বারগেন অঙ্গীকার অনুযায়ী ‘বৈদেশিক সহায়তার স্বচ্ছতা’ শীর্ষক এই আলোচনার আয়োজন করে কোস্ট ট্রাস্ট। এতে সহযোগিতা করে অক্সফাম ইন্টারন্যাশনাল। সভায় রোহিঙ্গা সংকট মোকাবিলায় পরিচালিত ত্রাণ কর্মসূচির পরিচালন ব্যয় এবং তহবিলের স্বচ্ছতা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন বক্তারা।

কোস্ট ট্রাস্টের রেজাউল করিম চৌধুরীর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন একই সংস্থার মো. মজিবুল হক মনির। এতে কক্সবাজার-টেকনাফের স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের বক্তব্য সংবলিত একটি প্রামাণ্যচিত্র দেখানো হয়। এই প্রামাণ্যচিত্রে উঠে আসে রোহিঙ্গা সংকটের কারণে সেখানকার মূল জনগোষ্ঠীর বিভিন্ন সমস্যার কথা।

সভায় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জাতিসংঘ উইংয়ের মহাপরিচালক নাহিদা সোবহান বলেন, সরকারের উদ্দেশ্য টেকসই, নিরাপদ এবং স্বেচ্ছা প্রত্যাবাসন। এই মানবিক সংকটে বৃহত্তর সমন্বয় খুব প্রয়োজন। স্থানীয় এনজিওদের এই সমন্বয়ের গুরুত্বপূর্ণ অংশ করতে হবে।

এনজিও–বিষয়ক ব্যুরোর মহাপরিচালক কে এম আবদুস সালাম বলেন, প্রত্যাবাসন বিষয়ে সরকারি সিদ্ধান্তের বাইরে গিয়ে কাজ করা উচিত নয়। এনজিওদের কাজ মানবিক সহায়তার মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকতে হবে।

রেজাউল করিম চৌধুরী বলেন, কক্সবাজার জেলায় পরিবেশ, শিক্ষা ও অর্থনীতির ক্ষতি মোকাবিলায় সরকার, আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংস্থা এবং জাতিসংঘ মিলে একটি মানবিক ও উন্নয়নবিষয়ক সমন্বিত পরিকল্পনা গ্রহণ করতে হবে।

বাংলাদেশ দুর্যোগ ফোরামের গওহার নঈম ওয়ারা বলেন, ‘বলা হয় যে স্থানীয় এনজিওদের সক্ষমতা নেই, কিন্তু তাই যদি হয়, তাহলে আন্তর্জাতিক বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান দেশীয় প্রতিষ্ঠান থেকে তাদের কর্মী নিয়ে যাচ্ছে কেন? অস্বস্তিকর হলেও আমাদের প্রশ্নটা তুলতে হবে, দাতা সংস্থাগুলো রোহিঙ্গাদের নামে কত টাকা সংগ্রহ করেছে?’