৮৬ প্রার্থীর মধ্যে নারী দুজন

>

রুমিন ফারহানা ,জেসমিন নূর
রুমিন ফারহানা ,জেসমিন নূর

রুমিন ফারহানা বিএনপির মনোনয়ন পেয়েছেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ আসনে। জেসমিন নূর ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৬ আসনে জাপার মনোনয়ন নিয়েছেন।

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নিতে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার ছয়টি আসনে বিভিন্ন দল, স্বতন্ত্রসহ ৮৬ জন প্রার্থী মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। তাঁদের মধ্যে নারী প্রার্থী রয়েছেন দুজন। তাঁরা হলেন রুমিন ফারহানা ও জেসমিন নূর।

রুমিন ফারহানা ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ (সরাইল ও আশুগঞ্জ) আসনে বিএনপির টিকিট নিয়ে গত বুধবার মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। তিনি বিএনপির আন্তর্জাতিক বিষয়ক সহসম্পাদক। তিনি ভাষাসৈনিক ও প্রবীণ রাজনীতিবিদ প্রয়াত অলি আহাদের মেয়ে। বিভিন্ন টেলিভিশনে টক শোয় অংশগ্রহণের মাধ্যমে সুবক্তা হিসেবে তিনি বেশ সুনাম কুড়িয়েছেন। তিনি পেশায় আইনজীবী।

জেসমিন নূর ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৬ (বাঞ্ছারামপুর) আসনে জাতীয় পার্টির (এরশাদ) টিকিট নিয়ে মনোনয়ন পেয়েছেন। তিনি জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য ও কেন্দ্রীয় মহিলা কমিটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক।

ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ আসনে আওয়ামী লীগ কোনো প্রার্থীকে মনোনয়ন দেয়নি। জোটের প্রার্থীর জন্য আসনটি রেখে দেওয়া হয়েছে বলে গুঞ্জন রয়েছে। এই আসনে বিভিন্ন দল, স্বতন্ত্রসহ ২৭ জন মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। তাঁদের মধ্যে বিএনপির ৯ জন প্রার্থী রয়েছেন। আওয়ামী লীগ দলীয়ভাবে কাউকে না দিলেও ছয়জন স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। এই আসনে আওয়ামী লীগ ও বিএনপির একাধিক প্রার্থীর পাশাপাশি জাতীয় পার্টিতে জামাই-শ্বশুরের মধ্যেও দ্বন্দ্ব চলছে।

স্থানীয় নেতা-কর্মীরা বলেন, এই আসনে কেন্দ্রীয় জাতীয় পার্টির ভাইস চেয়ারম্যান জিয়াউল হক পরপর দুবারের সাংসদ। তিনি এবারও এই আসনে দলীয় মনোনয়নপ্রত্যাশী ছিলেন। কিন্তু এই আসনে তাঁর জামাতা রেজাউল ইসলাম দলীয় মনোনয়ন পান। এর প্রতিবাদে জিয়াউলের কর্মী ও সমর্থকেরা মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছেন।

এই আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থীর মনোনয়নের দাবিতে কেন্দ্রীয় স্বেচ্ছাসেবক লীগের সহসভাপতি মঈনউদ্দিনের কর্মী–সমর্থকেরাও মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছেন। যদিও ১৯৭৩ সালের পর এই আসনে কখনোই জয় পায়নি আওয়ামী লীগ। আসনটিতে মনোনয়নপত্র জমাদানকারী ২৭ জনের মধ্যে রুমিন ফারহানাই একমাত্র নারী। তবে তৃণমূলের সঙ্গে তাঁর তেমন কোনো যোগাযোগ নেই বলে স্থানীয় বিএনপির নেতা-কর্মীদের দাবি।

জানতে চাইলে রুমিন ফারহানা বলেন, তাঁর শৈশব কেটেছে ঢাকার নাজিমুদ্দিন সড়ক এলাকায়। ছোটবেলায় বাবার সঙ্গে দেখা করতে প্রায়ই ঢাকা কারাগারে যেতে হয়েছে। তাই ছোটবেলায়ই রাজনীতি শিখেছেন তিনি। তিনি আরও বলেন, ‘ব্রাহ্মণবাড়িয়া আমার পূর্বপুরুষের রাজনীতির জনপথ। কেন্দ্রীয়, তৃণমূল ও জেলার নেতাদের সঙ্গে সব সময় যোগাযোগ ছিল এবং আছে।

আমি মাঠের বাইরের কোনো নেতা নই। আমার বিরুদ্ধে ২৫টি মামলাও রয়েছে। এখন প্রতিদিনই এলাকার মানুষের সঙ্গে কথা হচ্ছে। লোকজন আমাকে সাদরে গ্রহণ করেছেন। মানুষ পরিবর্তন চায় এবং ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে চায়। এখন সর্বক্ষেত্রেই নারীরা অবদান রাখছেন। তাই মনোনয়নের ব্যাপারে আমি শতভাগ আশাবাদী।’

অপর দিকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৬ আসনে বর্তমান সাংসদ উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এ বি তাজুল ইসলাম। তিনি এবারও আওয়ামী লীগের টিকিট নিয়ে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। এই আসনে বিভিন্ন দল, স্বতন্ত্রসহ ১০ প্রার্থী মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। এই ১০ প্রার্থীর মধ্যে জেসমিন নূরই একমাত্র নারী প্রার্থী।

জানতে চাইলে জেসমিন নূর বলেন, ‘আমি দীর্ঘদিন ধরে দলের কেন্দ্রীয় নেতাদের সঙ্গে যোগাযোগ করেছি। স্থানীয়সহ কেন্দ্রের রাজনীতির সঙ্গেও আমি সম্পৃক্ত। এখন নারীদের জয়গান চারদিকে। আমি উপজেলার একমাত্র নারী প্রার্থী। আশা করি, বিষয়টি বিবেচনা নিয়ে দল চূড়ান্ত মনোনয়ন দেবে।’