গরিব প্রার্থীদের ধনী স্ত্রী

আসন্ন একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বরিশালের ছয়টি আসনে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন ৫১ জন প্রার্থী। এসব প্রার্থীর বেশির ভাগই সম্পদশালী। তবে বেশ কয়েকজন প্রার্থী রয়েছেন, যাঁদের সম্পদ তাঁদের স্ত্রীদের তুলনায় কম। গত ২৭ নভেম্বর জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে মনোনয়নপত্র দাখিলের সঙ্গে দেওয়া হলফনামা ঘেঁটে এসব তথ্য পাওয়া গেছে।

বরিশাল-১ (গৌরনদী-আগৈলঝাড়া) আসনে বিএনপির প্রার্থী আবদুস সোবাহান পেশা হিসেবে নিজেকে ‘সাংসারিক ব্যক্তি’ হিসেবে উল্লেখ করেছেন। কিন্তু আবদুস সোবাহানের চেয়ে তাঁর স্ত্রীর স্থাবর সম্পদের পরিমাণ যেমন বেশি, তেমনি তাঁর থেকে নির্ভরশীলদের বার্ষিক আয়ও বেশি। বাড়ি, অ্যাপার্টমেন্ট ও দোকান বা অন্যান্য ভাড়া, ব্যবসা অন্যান্যভাবে তাঁর বছরে আয় ৬ লাখ ৭৮ হাজার ৫৯৫ টাকা এবং তাঁর ওপর নির্ভরশীলদের বছরে আয় ৮ লাখ ৮৬ হাজার ৬০৫ টাকা। স্থাবরের মধ্যে তাঁর ৫৬ লাখ ৩৯ হাজার ৯৬০ টাকার এবং তাঁর স্ত্রীর ১ কোটি ৩ লাখ ৩৬ হাজার ৩৪৭ টাকার সম্পদের কথা উল্লেখ করেছেন তিনি।

নিজেকে অবসরপ্রাপ্ত ব্যবসায়ী উল্লেখ করেছেন বরিশাল-২ (উজিরপুর-বানারীপাড়া) আসনে বিএনপির প্রার্থী সরফুদ্দিন সান্টু। তবে হলফনামায় আয়ের উৎস উল্লেখ করেননি তিনি। সম্পদ বিবরণীতে তিনি বলছেন, তাঁর চেয়ে তাঁর স্ত্রীর স্থাবর-অস্থাবর সম্পদ বেশি। অস্থাবরের মধ্যে তাঁর রয়েছে ১ কোটি ৪৫ লাখ ২১ হাজার ৭২৮ টাকার সম্পদ এবং তাঁর স্ত্রীর আছে ৪ কোটি ৫৭ লাখ ৫১ হাজার ৮৫ টাকার সম্পদ। সরফুদ্দিনের স্থাবর সম্পদের মধ্যে রয়েছে ১৬ বিঘার ওপরে কৃষিজমি, একটি দোতলা বাড়ি ছাড়াও ৩ লাখ ৪০ হাজার ৫২৮ সম্পদ। আর তাঁর স্ত্রীর রয়েছে ৬ কোটি ১৮ লাখ ৪১ হাজার ৯৪৭ টাকার সম্পদ।

এই আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী শাহে আলমও পেশা উল্লেখ করেছেন ব্যবসা। তিনিও স্ত্রীর চেয়ে গরিব। স্ত্রীর অস্থাবর সম্পদ তাঁর চেয়ে দ্বিগুণের বেশি। অস্থাবর সম্পদের মধ্যে তাঁর নিজের রয়েছে ২ কোটি ১৭ লাখ ৭৯ হাজার ৫৯৬ টাকার সম্পদ এবং ১৫ ভরি অলংকার। তাঁর স্ত্রীর রয়েছে ৬ কোটি ১৮ লাখ ১৩ হাজার ৭৩৯ টাকার সম্পদ এবং ২৫ তোলা অলংকার।

এই আসনে বিএনপির প্রার্থী সৈয়দ শহিদুল হক শিক্ষাগত যোগ্যতা উল্লেখ করেছেন স্বশিক্ষিত। তিনি পেশা উল্লেখ করেছেন পরামর্শদাতা। এই প্রার্থীর চেয়ে তাঁর স্ত্রীর স্থাবর-অস্থাবর সম্পদ বেশি। অস্থাবরের মধ্যে তাঁর রয়েছে ১ কোটি ৬ লাখ ৪৯ হাজার ৬০১ টাকার সম্পদ এবং স্ত্রীর রয়েছে ১ কোটি ৯৯ লাখ ৫৩ হাজার ৫০৪ টাকার সম্পদ। স্থাবর সম্পদের মধ্যে তাঁর রয়েছে ১৬ বিঘার ওপরে কৃষিজমি, একটি দোতলা বাড়ি ছাড়াও ৩ লাখ ৪০ হাজার ৫২৮ সম্পদ। আর তাঁর স্ত্রীর সম্পদ আছে ৬ কোটি ১৮ লাখ ৪১ হাজার ৯৪৭ টাকার।

বরিশাল-৬ আসনে বিএনপির প্রার্থী অধ্যক্ষ মো. আবদুর রশীদ খান পেশায় আইনজীবী। এই প্রার্থীর নিজের অস্থাবর সম্পদ আছে ১৮ লাখ ৭০ হাজার টাকার। তাঁর স্ত্রীর আছে ১৮ লাখ টাকার সম্পদ এবং বিবাহকালীন ১০ ভরি অলংকার। পাশাপাশি স্থাবর সম্পদ ৪ লাখ টাকার বাড়ি ও আড়াই লাখ টাকার জমি রয়েছে প্রার্থীর নামে। স্ত্রীর নামে ৪৬ লাখ টাকার জমি ও দালান এবং নির্ভরশীলদের নামে ৪০ হাজার টাকা দামের জমি রয়েছে।