সরকারি চাকরিতে অনগ্রসর জনগোষ্ঠীর জন্য নীতিমালা হচ্ছে

সরকারি চাকরিতে প্রতিবন্ধী ব্যক্তি, সংখ্যালঘু নৃগোষ্ঠীসহ অনগ্রসর জনগোষ্ঠীর অধিকার নিশ্চিত করতে সরকার নীতিমালা প্রণয়ন করছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘কোটার বিরুদ্ধে আন্দোলন হয়েছিল। কিছুদিন পর পরই এই আন্দোলন হয়। সে জন্য আমরা কোটা পদ্ধতি বাতিল করে দিয়েছি এটা ঠিক। তবে, একটা নীতিমালা আমরা তৈরি করছি।’

প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, ‘প্রতিবন্ধী, সংখ্যালঘু নৃগোষ্ঠী বা অনগ্রসর জাতি- তারা যেন যথাযথভাবে চাকরি পায় এবং চাকরিতে তাদের অধিকার নিশ্চিত হয় নীতিমালায় সেই ব্যবস্থাটা অবশ্যই করা হবে।’

আজ সোমবার সকালে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে ২৭তম আন্তর্জাতিক প্রতিবন্ধী দিবস এবং ২০তম জাতীয় প্রতিবন্ধী দিবস উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এ কথা বলেন।

১৯৯৬ সালে সরকারে আসার পর থেকেই প্রতিবন্ধীদের অধিকার সুরক্ষায় তাঁর সরকার কাজ করে যাচ্ছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘মানুষ হিসেবে তাদের প্রাপ্য অধিকারটা আমরা যেন দিতে পারি এবং তাদের ভেতরে যে শক্তি আছে সেটাকে আমরা যেন কাজে লাগাতে পারি, সেটাই আমাদের লক্ষ্য।’

প্রতিবন্ধীদের জন্য কল্যাণ ফাউন্ডেশন তৈরি এবং তাদের মধ্যে যারা খেলাধুলায় সম্পৃক্ত তাদের বিশেষ অলিম্পিকে সম্পৃক্ত করাসহ আরও নানা ধরনের সুযোগের কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘তারাই আমাদের জন্য স্বর্ণ জয় করে আনছে, এর মাধ্যমেই বোঝা যায় তাদের সুপ্ত প্রতিভাটা। কাজেই আমাদের দেশের কাজেও তারা লাগতে পারে।’

‘সাম্য ও অভিন্ন যাত্রায় প্রতিবন্ধী মানুষের ক্ষমতায়ন’ শীর্ষক প্রতিপাদ্য দিয়ে সরকারের সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয় এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।

অনুষ্ঠানে সমাজকল্যাণ মন্ত্রী রাশেদ খান মেনন সভাপতিত্ব করেন। স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন। সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সচিব জিল্লার রহমান এবং জাতীয় প্রতিবন্ধী ফোরামের সভাপতি সায়েদুল হকও অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন।

সমাজকল্যাণ প্রতিমন্ত্রী নুরুজ্জামান আহমেদ এবং সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়–সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির চেয়ারম্যান মোজাম্মেল হোসেন মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর ‘প্রতিবন্ধী ব্যক্তির অধিকার ও সুরক্ষা আইন, ২০১৩’ এবং ‘নিউরো ডেভেলপমেন্টাল প্রতিবন্ধী সুরক্ষা ট্রাস্ট আইন, ২০১৩’ নামে দুটি আইন পাস করে। ইতিমধ্যে এর বিধিমালাও প্রণয়ন করা হয়েছে। তিনি বলেন, যত স্থাপনা হবে প্রতিটি জায়গায় প্রতিবন্ধীদের যাতায়াতের এবং অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা যেন থাকে, সেই নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। বিশেষ টয়লেটের ব্যবস্থাসহ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও অন্যান্য সব স্থানে তাদের জন্য যেন সুযোগ-সুবিধা থাকে, সেই নির্দেশনা দেওয়া আছে।

প্রধানমন্ত্রী এ সময় দুই ঈদ, বাংলা ও ইংরেজি নববর্ষ এবং বড়দিন উপলক্ষে যে শুভেচ্ছা কার্ড পাঠান, তা এই প্রতিবন্ধীদের আঁকা ছবি দিয়েই করা হয় বলেও উল্লেখ করেন।